ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘শহীদ মিনার অবমাননার সংবাদ মানসিক যন্ত্রণা দেয়’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘শহীদ মিনার অবমাননার সংবাদ মানসিক যন্ত্রণা দেয়’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অবমাননার সংবাদে এক অব্যক্ত মানসিক যন্ত্রণা দেয় বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

শুক্রবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, পত্রিকায় যখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অবমাননার সংবাদ দেখি, তখন এক অব্যক্ত মানসিক যন্ত্রণা অনুভব করি। সারা বছর শহীদ মিনার দেখতে দেশি-বিদেশি অনেক মানুষ আসেন। তাই সারা বছর এর পবিত্রতা রক্ষার জন্য সার্বক্ষণিক ব্যবস্থাপনা থাকা প্রয়োজন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ভাষার জন্য বা স্বাধীনতার জন্য কেন এত প্রাণ বিসর্জন হলো? আসলে এটা ছিল প্রতিবাদ। প্রতিবাদকে হত্যার মাধ্যমে দমন করার চেষ্টার কারণেই এত প্রাণ বিসর্জন। এই বিষয়টি আমাদের অনুধাবন করতে হবে। এসব আত্মত্যাগের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।

তিনি বলেন, আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এগুলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শেখায়। এ থেকেই আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এগুলোই আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। নিগৃহীত হয়ে রাস্তায় পড়ে আছেন এমন মানুষকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাওয়ার ঘটনা যখন শুনি, তখন কেন যেন মনে হয় অন্যায়ের প্রতিবাদ করাটা কি আমরা ভুলে যাচ্ছি।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, জাতি গঠনে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন   শৃঙ্খলা, সততা, নিষ্ঠা, মানুষের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমার মনে হয়- এগুলোতেও  আমাদের কিছুটা ঘাটতি এখনও রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এ বছর মুজিব শতবর্ষ। স্বাভাবিকভাবেই ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতাকে নিয়ে অনেক আলোচনা হবে। এ সময় তিনি দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, জাতির পিতা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। আসুন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে-নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে, দুর্নীতি দমনে আত্মনিয়োগ করি।

সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি এক সময় ছিল শুধু বাংলাদেশের গর্বের বিষয়। এখন বিশ্ববাসীর গর্বের বিষয়। জাতি হিসেবে এটা আমাদের সত্যিই গর্বের।

আমাদের দুর্ভাগ্য যখন শুনি কোনো কোনো বাঙালি পিতা-মাতা গর্ব করে বলেন, ‘আদের সন্তান ইংরেজিতেই কথা বলে, ভালো বাংলা বলতে জানে না।’

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটা দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক। ভুলে ভরা অনেকের ইংরেজি কথা শুনি, অনেকের এমন ইংরেজি লেখাও দেখি। এগুলো নিয়ে মন্তব্যও করতে চাই না।

দুদকের অপর কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, কথন, নাটক, চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলা ভাষার বিকৃতি দেখে আমরা বিস্মিত হই। ভাষার এই কদর্য বিকৃতি ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের নিদর্শন হতে পারে না। আঞ্চলিক ভাষা বা বিকৃত ভাষা থাকবে কিন্তু তা মুখ্য ভাষা হতে পারে না।

দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা এই কঠিন সময় পার করছি। এর অবসান হওয়া উচিত।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদকের তদন্ত অনুবিভাগের মহাপরিচালক জাকির হোসেন, দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা শাখার পরিচালক মনিরুজ্জামান খান, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আকতার হোসেন, উপপরিচালক এএসএম সাজ্জাদ হোসেন, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।


ঢাকা/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়