ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘চার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কূটনীতি’

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০২, ৪ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘চার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কূটনীতি’

চার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশর কূটনীতি সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাড়ানো, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি—এ চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কূটনীতি সাজিয়েছি। কূটনীতিতে এমনভাবে কাজ করতে হয়, যাতে জাতির লাভ হয়।

বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপডেন্ট অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কূটনীতির প্রধান একটি দিক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আরেকটি চীন ও ভারত। তাদের ব্যালেন্স করে কূটনৈতিক সম্পর্ক রেখে আমরা এগোচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতাও আমরা মাঝে মধ্যে পাই।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের মতো দরিদ্র দেশের একটা বড় আকর্ষণ হচ্ছে অর্থনীতি। সেজন্য আমি মন্ত্রী হওয়ার পরে অর্থনীতি পলিসির ওপর জোর দিয়েছি। সেখানে চারটি বিষয় রয়েছে। সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের রূপরেখা দিয়েছে। এই রূপরেখা বাস্তবায়ন কার সম্ভব হবে না—যদি না বিনিয়োগ বাড়ে। এজন্য আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এক্সপোর্ট বাড়াতে হবে। এক্সপোর্ট এর পরিধি বাড়াতে হবে। জনসংখ্যাকে দক্ষ করতে হবে।

ড. মোমেন বলেন, গার্মেন্টস আমাদের আয়ের বড় উৎস। ইউরোপ ও আমেরিকা মানবাধিকারকে বেশি গুরুত্ব দেয়, মাঝে মধ্যেই বিচার হয় না বলে হৈচৈ করে। এজন্য রফতানি আয় বাড়াতে ট্রাফিক ইন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করছি। এছাড়াও লাইফ চেঞ্জার প্রোগ্রাম চালু করেছি। এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে জনশক্তি রপ্তানি করা হবে। আমরা বাস্তববাদী, সেটি উপলব্ধি করে কাজ করছি।’

মন্ত্রী বলেন, ২০২৪ সালে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে বের হয়ে আসলে কিছু সুযোগ সুবিধা হারাতে পারে। সেজন্য আমরা একটি উইং চালু করেছি। সেটি মাথায় রেখেই কাজ করছি। আমাদের সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা, আমরা এ বিষয়ে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী দুই বছর আমাদের জন্য স্বর্ণযুগ। এ বছর মুজিববর্ষ। এরপরের বছর স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি। এ দুই বছরে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। ব্র্যান্ডিং পরিবর্তন হলে বিনিয়োগ আসবে। এজন্য নতুন অনেক দেশে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা ১০০ ইকোনমিক জোন ও ২৮টি হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির কথা তুলে ধরছি, যাতে বিদেশিরা সেখানে বিনিয়োগ করে। আমরা ভাগ্যবান জাতি, আমাদের বেশিরভাগ তরুণ। তাদের কাজে লাগাতে পারলেই পরিবর্তন সম্ভব হবে।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা কৌশলগত অবস্থান নিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা আশাবাদী। তবে যাদের সাথে ডিল করছি তারা খুব সহজ বিষয় নয়।

ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে আমাদের সম্পর্ক সোনালী অধ্যায়ে। আলোচনার মাধ্যমে আমরা অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান করেছি। যেহেতু তারা প্রতিবেশী সেখানে কিছু ঘটলে তার প্রভাব আমাদের এখানে পড়ে। তাই আমরা আশা করবো আমাদের প্রতিবেশী দেশ এমন কিছু করবে না যার জন্য আমাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে কষ্ট হয়।

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপডেন্ট অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির সঞ্চালনায়  সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন।


ঢাকা/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়