ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

সাজা শেষেও ফিরতে পারছেন না বিদেশি বন্দিরা

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাজা শেষেও ফিরতে পারছেন না বিদেশি বন্দিরা

দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক আছেন দুই শতাধিক বিদেশি বন্দি। যাদের প্রায় অর্ধেকেরই সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তবে বিভিন্ন জটিলতায় তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছেন না।

কারা অধিদফতর সূত্র বলছে, কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার, কক্সবাজার, কুমিল্লা, বান্দরবান, কাশিমপুর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, যশোর ও খুলনা কারাগারে দুই শতাধিকের বেশি বিদেশি বন্দি রয়েছেন।  বিভিন্ন মামলায় আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।  আর সাজার মেয়াদ শেষ হলেও তাদের অনেকেই যথাসময়ে মুক্তি পাচ্ছে না।

এসব বন্দিরা ভারত, আলজেরিয়ার, ক্যামেরুন, তানজানিয়া, নাইজেরিয়া, ঘানা, মিয়ানমার ইতালি, পোলান্ডের নাগরিক বলে জানা গেছে।

এ বিষেয় কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রি. জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক এই যে, একজন বন্দির সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে।  তারওপর তারা বিদেশি নাগরিক।  কিন্তু আমাদের কী করার। তাদের দেশে ফেরত দিতে আমরা ওইসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগই নয়, মন্ত্রণালয় থেকে কূটনীতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। কিন্তু দেশগুলো তাদের নাগরিকদের ফেরত নিচ্ছে না। আমরাও এ কারণে তাদের ফেরত দিতে পারছি না।’

রাইজিংবিডির প্রশ্নে পাশা বলেন, ‘ছেড়ে দিলে তারা অন্যসব অপরাধ করতে পারে।  কেননা এরইমধ্যে তারা অপরাধ করায় গ্রেপ্তার হয়ে সাজা ভোগ করেছেন।  আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত দেওয়ার জন্য।’

কারা সূত্র বলছে, কারাগারে থাকা বিদেশি বন্দিরা বিভিন্ন সময় মাদক চোরাচালান, প্রতারণা, জালিয়াতি, অবৈধভাবে এটিএম বুথ থেকে টাকার তোলার অভিযোগে আটক হন।  পরে তাদের বিরদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা দেওয়া হয়।  এর মধ্যে ৮০ জনের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।  আদালতের মাধ্যমে কারও কারও সাজা দেওয়া হয় ছয় মাস, কারও বা সর্বোচ্চ দুই বছর।

কারাগারে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট দূতাবাস তাদের নাগরিকদের ফেরত না নেওয়ায় এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না। এজন্য তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হলেও কারাগারের ভেতরেই রাখতে হচ্ছে। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে তারা যদি তাদের নাগরিকদের স্বীকৃতি দিয়ে না নিয়ে যায়, তাহলে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ থাকে না।

অভিযোগ রয়েছে, সাজার মেয়াদ শেষ হলেও আইনি জটিলতার কারণে নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না বিদেশিরা। এমনকি কারাগারে আটক বিদেশি কোনো নাগরিকের মৃত্যু হলেও তার মরদেহ পর্যন্ত ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না।  বেশির ভাগ দূতাবাস এসব বন্দির নাগরিকত্ব অস্বীকার করায় দেখা দিয়েছে এ জটিলতা। সব মিলিয়ে বিদেশি এসব বন্দিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। অথচ বিদেশি এসব নাগরিকের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিতও করা হয়।

 

ঢাকা/মাকসুদ/জেডআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়