ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সামাজিক দূরত্ব মানছে না ক্রেতারা, স্থিতিশীল সবজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৭ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সামাজিক দূরত্ব মানছে না ক্রেতারা, স্থিতিশীল সবজির দাম

মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জনগণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বললেও তা অনেকেই মানছেন না। বিশেষ করে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এই নিয়ম একদমই মানা হচ্ছে না। যে যেমন করে পারছেন গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বাজার করছেন।

এছাড়া করোনার কারণে কাঁচাবাজারগুলোতে ভিড় কম থাকলেও যারা বাজার করতে আসছেন তারা মানছেন না ডিএমপির ওয়ানওয়ে রাস্তায় চলার নির্দেশনা।

শুক্রবার রাজধানীর জিগাতলা, রায়েরবাজার ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে।

জিগাতলা বাজারে ক্রেতা আবদুল্লাহ সরদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বাজারে যারা আসছেন তাদের অনেকের মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার কোনো আগ্রহ দেখছি না। আমি নিজে দূরত্ব বজায় রেখে চললেও অন্য একজন এটা না মানায় খুব ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এখানে এসে দেখি কে আগে কিনবে সেই জন্য সবাই ব্যস্ত। এভাবে আসলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না।’

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে করোনার প্রভাব থাকা সত্ত্বেও সবজির দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। কয়েকটি সবজির দাম চার থেকে পাঁচ টাকা বাড়লেও অধিকাংশ সবজির দাম বিক্রি হচ্ছে গতসপ্তাহের দামেই। তবে দাম কমেছে লেবুর।

গত তিন চারদিন আগেও লেবু বক্রি হয়েছে প্রতি হালি ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। কিন্তু আজ সেই লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দাম কমার প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলছেন, লেবুর সরবারাহ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার পাইকারি বাজারে এর দাম কমেছে। তাই আমরা খুচরা বাজারে লেবু কম টাকায় বিক্রি করতে পারছি।

জিগাতলা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ লোকমান শিকদার বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। বাজারে যে পরিমাণে পণ্য সরবারাহ রয়েছে তার থেকে অনেক কম সংখ্যক ক্রেতা আসছে বাজার করতে। করোনা আতঙ্কে অনেকে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। আবার অনেকে ভয়ে বাসার বাইরে বের হচ্ছেন না। তাই আমাদের বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।’ 

ওপর এক বিক্রেতা সঞ্জীব বিশ্বাস বলেন, ‘ক্রেতা কম থাকায় সবজির দাম আগের মতোই আছে। আবার কিছু সবজির দাম কমেছে। গত সপ্তাহের দামেই অধিকাংশ সবজি বিক্রি করছি। তবে ক্রেতা খুব কম।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে মতো ফুলকপি বিক্রি করা হয়েছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া গত সপ্তাহে বিক্রি করা হয়েছে ৬০ টাকা পিস তবে আজ তা পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, লাউ প্রতি পিচ আগের দামেই ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা কেজি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো কেজি ৫ টাকা কমে ২০ টাকা, পেঁপে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৫ টাকা।

এছাড়া বরবটি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে কেজি ৪০ টাকায়, ঝিঙ্গে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, সিম ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, পটল আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, বেগুন আগের দামেই ৩৫ টাকা, ঢেঁড়স আগের দামেই ৫৫ টাকা, শসা পাঁচ টাকা কমে ৩০ টাকা, করলা আগের দামে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি।

এছাড়া শাকের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। লাল শাক আটি ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, লাউ শাক ১৫ টাকা, কুমড়া শাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবারাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি করোনাভাইরাসের প্রভাবে মাছের সরবারাহ কমেছে আবার ক্রেতার সংখ্যাও কম। তাই মাছের দাম গত কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় রুই মাছ ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি, কাতল মাছ প্রকারভেদে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, চিংড়ি মাছ আকারভেদে ৫০ টাকা বেড়ে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া মাছ ১০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০ টাকা বেড়ে ৫০০ টাকা কেজি, পোয়া মাছ ৪০০ টাকা, বাইন মাছ ৬০০ টাকা কেজি, বেলে মাছ ৫০ টাকা কমে ৪০০ টাকা, বোয়াল মাছ আকারভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, শিং মাছ ৫০০ টাকা কেজি।

তবে অপরিবর্তিত আছে গরু, ছাগল ও মুরগির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা, খাসি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা, পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি আকারভেদে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা প্রতি পিচ।

 

ঢাকা/হাসিবুল/জেনিস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়