করোনাকালে বিশেষ গাইডলাইনে দুদক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই স্বাভাবিক নিয়মে শুরু হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যক্রম। করোনা মোকাবিলায় সংস্থাটি কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেশকিছু গাইডলাইন চূড়ান্ত করেছে।
দাপ্তরিক কার্যক্রম, সিদ্ধান্তসমূহ ই-ফাইলের ওপর জোর দেওয়াসহ বেশকিছু নির্দেশনা অনুসারে করোনার সময়ে চলবে দুদকের সব কার্যক্রম। ৩১ মে কমিশনের অনুমোদনক্রমে এ গাইডলাইন দুদকের বিভাগীয় ও জেলা অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত সই করা নির্দেশনায় করোনা রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাপ্তরিক কার্যক্রম সীমিত পরিসরে পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে।
গাইডলাইনের মধ্যে রয়েছে- স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও অফিস জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে। রোস্টার করে অফিসে আসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সুযোগ থাকবে। প্রতিদিন অফিসে প্রবেশকালীন সময়ে তাপমাত্রা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। দুদকের প্রতিটি রুম নিয়মিত পরিস্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান গেট ব্যতীত সব গেট বন্ধ থাকবে। অফিসের বাইরের কোনো ব্যক্তিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অফিসের ভিতরে প্রবেশ করানো যাবে না। এরকম ২৩ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে গাইডলাইনে।
গাইডলাইন বাস্তবায়নে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্তের নেতৃত্বে আট সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি কাজ করবে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিভিন্ন দপ্তরের সাত মহাপরিচালক।
ফ্রন্টডেস্ক ও নিরাপত্তাকর্মীদের নির্দেশনা
অফিসের ফ্রন্টডেস্কের দায়িত্বরত কর্মী ও গেটম্যানসহ সব নিরাপত্তাকর্মীকে মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিরাপত্তাকর্মী থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে আগতদের শরীরের তাপমাত্রা যাচাই করার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।
সভা আয়োজন বিষয়ে নির্দেশনা
সভা আয়োজনের আগে জরুরি প্রয়োজনীতা সম্পর্কে আলোচনা করে নিতে হবে। যদি সম্ভব হয় ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যবহার করে সভা করতে হবে। গুরুত্ব বিবেচনায় সভা আয়োজনের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সভাস্থান জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আন্তদপ্তর সভার ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ডিজিটাল মাধ্যমে সভা করতে হবে। প্রয়োজনে সভার আগেই দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার খোঁজ-খবর নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে অন্যন্য বব্যস্থা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
ই-নথি বিষয়ক নির্দেশনা
প্রধান কার্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম যথাযথ ও প্রযোজ্য ক্ষেত্র ছাড়া যথাসম্ভব সকল সিদ্ধান্ত ই-ফাইলের মাধ্যমে নিতে হবে। এটুআই এর সাথে যোগাযোগ করে বিভাগী ও জেলা কার্যালয়ের যাবতীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম যথাসম্ভব ই-নথিতে পরিচালনা করতে হবে। এ বিষয়ে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক একটি ৫ সদস্যের কমিটি সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।
অফিসে যাতায়াতকালীন নির্দেশনা
যতটা সম্ভব জনসমাগমস্থল পরিহার করতে হবে। ভ্রমণের সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতায়াত করতে হবে। কর্মস্থলের বাইরে কাউকে প্রেরণের প্রয়োজন হলে স্থাস্থ্যগত দিক বিবেচনা নিতে হবে। দুর্বল, বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ কাউকে কর্মস্থলের বাইরে প্রেরণ করা যাবে না। ভ্রমণের সময় মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।
দুদক ক্যান্টিন পরিচালনার নির্দেশনা
স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুদক ক্যান্টিন পরিচালনা করা যাবে। ক্যান্টিনে কোনো চেয়ার ও টেবিল থাকবে না। শুধুমাত্র টেক-আউট হিসেবে খাবার বিক্রি করা যাবে। ক্যান্টিন হতে খাবার আনার জন্য প্রত্যেকেই যাওয়া যাবে না, এক বা দুজনকে খাবার আনার দায়িত্ব দিতে হবে। ক্যান্টিনে ভিড় গ্রহণযোগ্য নয়। ক্যান্টিনের কার্যক্রম মনিটিরিং করার জন্য ৪ সদস্যের একটি কমিটি কাজ করবে।
দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন, সংস্থাপন ও অর্থ) মো. জহির রায়হানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি ভিজিলেন্স টিম গাইডলাইন তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। দুদকের মহাপরিচালক জহির রায়হান রাইজিংবিডিকে বলেন, কমিশনের অনুমোদনক্রমে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আমরা একটি গাউডলাইন চূড়ান্ত হয়েছে। গাইডলাইন অনুসরণ করে দুদকের প্রধান কার্যালয়সহ জেলা পর্যায়ের অফিসগুলো চলবে।
এম এ রহমান/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন