ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ফিরছেন বাংলাদেশে আটকে পড়া তাবলিগ-জামাতের বিদেশিরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১৭ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ফিরছেন বাংলাদেশে আটকে পড়া তাবলিগ-জামাতের বিদেশিরা

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আটকা তাবলিগ জামাতের মেহমানরা নিজ নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে ১৫০জন বিদেশি ফিরে গেছেন নিজ দেশে। চলতি সপ্তাহে আরও শতাধিক বিদেশি পর্যায়ক্রমে দেশে ফিরে যেতে পারেন। বাকি যারা বাংলাদেশে আছেন তাদের কেউ রাজধানীর কাকরাইল মার্কাজে, কেউ কেউ গুলিস্তান মসজিদের মার্কাজ ও টঙ্গির তুরাগ মাঠের পশ্চিমে অবস্থিত মসজিদ মার্কাজে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সরকারি স্বাস্থবিধি মেনে অবস্থান করছেন। এসব বিদেশিদের অবস্থানের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সব সময় নজরদারি করে আসছে।  

তাবলিগের সাদপন্থী ও সাদ বিরোধী গ্রুপের মুরব্বীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশে তাবলিগি কার্যক্রম করতে এসে প্রায় ৫০৪ বিদেশি আটকা পড়েছে দীর্ঘ তিনমাস ধরে। তারমধ্যে সাদপন্থী রয়েছেন ৩৫০জন। তারা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, চায়না, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। তারা এতদিন কাকরাইল মার্কাজে থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে গুলিস্তান মসজিদ মার্কাজ ও টঙ্গির মসজিদ মার্কাজে অবস্থান করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাদপন্থী এক শীর্ষমুরব্বী জানান, করোনা ভাইরাসে সরকারি বিধি নিষেধ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় এতদিন তাদের বিদেশিরা ফিরে যেতে পারেননি।

তিনি বলেন, আমাদের দেড়শ ইন্দোনেশিয়ান ইতোমধ্যে ফিরে গেছেন। আরও দেশড় মতো বিদেশি রয়েছেন। তারাও দেশে ফেরার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এই দেড় শতাধিক বিদেশি মেহমানদেরও এক মসজিদে না রেখে দুই মসজিদে রেখেছি। এখানে এখনও যারা আছেন সবাই সুস্থ বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে সাদ বিরোধী গ্রুপের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাইজিংবিডিকে জানান, তাদের ১৫৪ জন বিদেশি মেহমান রয়েছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাদের এখন কাকরাইল মার্কাজে রাখা হয়েছে। খিরগিস্তান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তারা এসেছেন। তাদের মধ্যে খিরগিস্তানের রয়েছে ১০০জন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে তারা দেশে ফিরবেন এবং বাকিরা পর্যায়ক্রমে দেশে ফিরে যাবেন বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে এখন বাংলাদেশে সাদপন্থী ও সাদ বিরোধীদের তাবলিগি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক সভা সমাবেশ ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকায় তারা কার্যক্রম চালাতে পারছে না এবং তাদের ওপর প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে বলেও জানান উভয়গ্রুপের নেতারা।

এ বিষয়ে একাধিকবার জানতে ধর্মসচিব নূরুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তিনি এর আগে বলেছিলেন, করোনাকালে তাবলিগের কোনপ্রকার কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না। এবিষয়ে নজরদারি করার জন্য মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

এদিকে ভারত সরকার সাদপন্থীদের কালো তালিকাভুক্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সাদপন্থীরা।

তাদের এক শীর্ষমুরব্বী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ধর্মপ্রচারে লিপ্ত এ অভিযোগে আমাদের কালোতালিকাভুক্ত করেছে ভারত সরকার। অথচ আমরা ৫০ বছর ধরে ভারতে আসা যাওয়া করছি। আমাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার অভিযোগ নেই।

‘আমরা তো ধর্মপ্রচার করছি না। মুসলমান ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীর কাছেও আমরা যাই না। আমরা মুসলমানদের দ্বীনি দাওয়াত দিয়ে থাকি। ধর্মপ্রচার করে, কিংবা জোর করে অন্যদের ধর্মান্তরিত করার ইতিহাসও নেই। কিন্তু তারপরও এ মিথ্যা অজুহাতে আমাদের বিরুদ্ধে ভারত সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে এবিষয়ে ভারত সরকারের কাছে পুনর্বিবেচনার আবেদন করছি'। তিনি কালো তালিকা প্রত্যাহার করে তাবলিগি কার্যক্রম করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।



নঈমুদ্দীন/এসএম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়