ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে সম্ভাব্য লন্ডারিং ঠেকানোর তাগিদ

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৮, ১০ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে সম্ভাব্য লন্ডারিং ঠেকানোর তাগিদ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে সম্ভাব্য মানি লন্ডারিং ঠেকাতে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে ব্যাংকার, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের একযোগে কাজ করতে হবে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে এ ধরণের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থায় যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে জরুরী ব্যবস্থা নিতে হবে।

বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘মানিলন্ডারিং ভালনারেবিলিটিস ইন নিউ পেমেন্ট সিস্টেমস: বাংলাদেশ কনটেক্সট’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (ট্রেনিং) ড. শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক অন্তরা জেরীন, বিআইবিএমের প্রভাষক মো: ফয়সাল হাসান, এনবিআরের প্রথম সচিব সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, বিকাশ লিমিটেডের চীফ এক্সটারনাল অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফায়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল (অব.) শেখ মো: মনিরুল ইসলাম, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এফএভিপি জাহিদ মনসুর, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক  মোহাম্মদ আব্দুর রব, খোন্দকার আলী কামরান আল জাহিদ, প্রদীপ পাল, মো: রশিদ।

কর্মশালায় বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও জনশক্তি নেই। এদিকে নজর দিয়ে ব্যাংকারাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।’

পূবালী ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থা আইটি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে শুধু আইটি অফিসারদের নয়, পুরো ব্যাংকিং খাতের কর্মীদের আইটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আইটিতে অনেক এগিয়ে আছে বলে অন্য ব্যাংক তার সাথে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, ‘আইন করার সময় ব্যাংকিং অপারেশনে কোন ক্ষতি না হয় সে দিকটি বিবেচনায় রাখতে হবে। সুতরাং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।’

ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফারুক মাঈনুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গ্রাহক এবং ব্যাংকার সব পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে এজেন্টদের সচেতনতা জরুরী। অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমে গতি বাড়লেও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা চালু হয়নি। এটা রোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দোহাই দিলে হবে না, সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. এম মাঈনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মানব সম্পদকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এনবিআর, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক লিলা রশীদ বলেন, ‘মোট লেনদেনের ৬ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরণের ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরো নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কিছুটা সময় লাগবে। সংশ্লিষ্ট সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করলে দ্রুত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’

আইপে সিস্টেম লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকারিয়া স্বপন বলেন,  ‘বাংলাদেশে ই-আর্থিক সেবা চালু করতে গেলে অনেক হয়রানি হতে হয়। তবে নন ব্যাংক পেমেন্টের অনেক সুযোগ রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে অনেক কম সেবা দিতে পারছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।’

এনবিআরের প্রথম সচিব সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিষয়ে আরও সচেতন ও সচেষ্ট হতে হবে।’

সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, ‘আগামী দিনে ব্যাংকিং ব্যবস্থা আরো সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য নতুন পেমেন্ট সিস্টেমের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ অক্টোবর ২০১৮/নাসির/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়