ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘মনে হচ্ছে যেন স্যারের কাছেই আছি’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ১৭ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মনে হচ্ছে যেন স্যারের কাছেই আছি’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ‘আজ অনেকদিন পর মনে হচ্ছে আমি যেন স্যারের (এইচ এম এরশাদ) কাছেই আছি। আজ কেউ স্যারের কাছে যেতে বাধা দেয়নি। কারণ স্যার এখন পল্লীনিবাসের লিচুতলায় শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন। আল্লাহ্ রাব্বুল আল-আমিন যেন স্যারকে জান্নাতবাসী করেন।’

মৃত্যুর পর এইচ এম এরশাদের কাছে (কবরে) যাওয়ার সুযোগ পেয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার বুধবার তার ফেসবুকে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিএমএইচে এরশাদের কাছে যেতে না পারলেও মৃত্যুর পর এরশাদের কবর জিয়ারত করেছেন ব্যরিস্টার দিলারা। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে এরশাদের মৃত্যুর সময় তার কাছে যেতে পারেননি- এমন অভিযোগ খোদ দিলারার। শেষবারের মতো এরশাদকে দেখতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু পারেননি।

ব্যরিস্টার দিলারা অভিযোগ করেন, গত পাঁচ মাস ধরে স্যারের (এরশাদ) কাছে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। তাকে দেখতে দেয়নি, কথা বলতে দেয়নি, দোয়া নিতে দেয়নি এমনকি ক্ষমা চাইতেও দেয়নি তারা। তারা তাদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে।

বুধবার ব্যারিস্টার দিলারা রংপুরের পল্লীনিবাসে এরশাদের কবর জিয়ারত করেন। বেশ কিছুক্ষণ কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। নীরবে অশ্রু ফেলেন। দোয়া মোনাজাত করে মহান আল্লাহ পাকের কাছে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। 

কবর জিয়ারতের ছবি পোস্ট দিয়ে ব্যরিস্টার দিলারা ফেসবুকে লিখেছেন, হে আল্লাহ, তুমি আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা মরহুম আলহাজ্ব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান কর।

 

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে তার জীবদ্দশায় যে গুটিকয়েক নেতানেত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, তাদের মধ্যে ব্যারিষ্টার দিলারা খন্দকার অন্যতম। দলের যুগ্ম মহাসচিব, উপদেষ্টা ও প্রেসিডিয়াম সদস্যও করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। সর্বশেষ গাইবান্ধা-৩ আসনে জাপার প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয় তাকে। অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত নিয়মিত এরশাদের সঙ্গে দেখা, সাক্ষাৎ ছিল ব্যরিস্টার দিলারার। কিন্তু অসুস্থ  হওয়ার পর সিএমএইচে এরশাদকে দেখতে যেতে পারেননি তিনি। অসুস্থ এরশাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে যেতে দেয়া হয়নি। তাকে বাধা দেয়া হয়েছিল বলে দিলারা নিজেই তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে কে বা কারা বাধা দিয়েছেন তা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি তিনি। এরশাদকে দেখতে যেতে না পেরে প্রায় প্রতিদিনই ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দিলারা। যারা তাকে দেখতে দেননি তাদের বিচারের ভার আল্লাহর কাছেও সপে দেন তিনি।

এরশাদ যেদিন মারা যান, সেদিন তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতির প্রতি হৃদ্যতা প্রকাশ করে লিখেন, ‘আপনাকে (এরশাদ) শেষ দেখা দেখতে পারিনি। এই আঘাত সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে। আপনি ওপার থেকে আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন আপনার মনের আশা পূরণ করতে পারি। হে আল্লাহ্ ধৈর্য্য দাও, এই শোক সইবার শক্তি দাও। হে আল্লাহ্ তুমি আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক, আমাদের প্রানপ্রিয় নেতাকে বেহেশত নসিব করো।’

ব্যারিস্টার দিলারা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ থেকে অভিভাবকহীন হয়ে গেলাম। কেউ আর আপনার মতো করে স্নেহের হাত মাথায় রাখবে না। আপনি ওপার থেকে আমাকে দোয়া করবেন।’


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুলাই ২০১৯/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়