ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

উচ্চ ফলনশীল খেসারীতে উৎপাদন দেড়গুণ বাড়বে

মো. মনিরুল ইসলাম টিটো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১০ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উচ্চ ফলনশীল খেসারীতে উৎপাদন দেড়গুণ বাড়বে

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল খেসারী তথা বারি খেসারী-২ ও বারি খেসারী-৩ জাতের ডাল আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। স্থানীয় জাতের তুলনায় দেড়গুণ ফলনের প্রত্যাশা করছেন চাষিরা।

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর জেলার নয়টি উপজেলায় ১১ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে খেসারী ডালের আবাদ করা হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৪২০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের, আর ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের খেসারী। হেক্টর প্রতি ১১৩০ কেজি হারে ১৩ হাজার ৪৭০ মেট্রিক টন উৎপাদনের আশা করছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, উচ্চ ফলনশীল জাত ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে স্থানীয় জাতের পরিবর্তে শতভাগ জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের খেসারী আবাদ করা সম্ভব হবে। এতে উৎপাদনও বেড়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। যা জেলার ডালের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর মাঠের চাষিরা জানান, তারা কয়েক বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় জাতের খেসারী ডালের পরিবর্তে বারি খেসারী- ২ ও বারি খেসারী-৩ জাতের ডালের আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন।
 


তারা জানান, স্থানীয় খেসারীর প্রতি শীষে পাঁচ থেকে ছয়টি ফল ধরে, আর উচ্চ ফলনশীল জাতের সেখানে ৮ থেকে ১০টি ফল ধরে। তাছাড়া ফলের পুষ্টতা বেশির কারণে ওজনও ভালো হয়।

চরকৃষ্ণনগরের খেসারী চাষী হাবিব শেখ ও আমজাদ শেখ জানান, আমন ধান পাকার আগেই সাথী ফসল হিসেবে নভেম্বর মাসের শেষ দিকে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পরপর কর্দমাক্ত জমিতে ছিটিয়ে বোনার কারণে চাষাবাদ ও সেচ খরচ হয় না। এতে এই ফসলের উৎপাদন খরচ অনেক কম হয়। ফসলটি মার্চের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ঘরে তুলতে পারায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না।

ওই মাঠের কৃষক মো. রিজাউল খাঁনসহ অন্যরা জানান, একই সময়ে সমপরিমাণ জমিতে খেসারী আবাদ করে স্থানীয় জাতের চেয়ে উচ্চ ফলনশীল জাতগুলো থেকে অধিক ফসল ফলানো সম্ভব হওয়ায় অনেকে এই জাতের আবাদে ঝুঁকছে।
 


বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম আহমেদ জানান, স্থানীয় জাতের খেসারী আবাদ করে কৃষকরা একর প্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ কেজি খেসারী পেয়ে থাকে। আর বারি খেসারী-২ বা বারি খেসারী-৩ জাতের ডাল আবাদ করে ওই জমি থেকে ৮০০ থেকে ৯০০ কেজি পাওয়া যায়। তিনি জানান, এ জাতের ফসলের আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ডাল, তেল, পেঁয়াজ প্রকল্পের আওতায় গত দুই বছর ধরে উচ্চ ফলনশীল খেসারীর সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। গত বছর মাত্র ১০০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের খেসারীর আবাদ হয়েছিল, যা এ বছর ৪২০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।

তিনি জানান, আগামী তিন বছরের মধ্যে জেলার শতভাগ জমিতে উচ্চ ফলনশীল খেসারীর আবাদ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।



রাইজিংবিডি/ফরিদপুর/১০ মার্চ ২০১৮/মো. মনিরুল ইসলাম টিটো/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়