একযুগে নতুন রূপে ধানের জেলা দিনাজপুর
মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর || রাইজিংবিডি.কম
ধারাবাহিক উন্নয়নে পিছিয়ে নেই ধানের জেলা দিনাজপুর। গত একযুগে জেলার ১৩টি উপজেলায় সড়ক, বন্দর, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, হাট-বাজার, হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। সঙ্গে মেরামত হয়েছে পুরাতনগুলো। অসংখ্য প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
১ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সড়ক তৈরি ও মেরামতের কাজ চলছে। হিলি কাস্টমস থেকে ৬ অর্থবছরে প্রায় ১ হাজার ২৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার। এছাড়াও জেলায় যন্ত্রনির্ভর কৃষিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
জেলায় গত একযুগে নতুন করে তেমন কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তৈরি না হলেও প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে অনেক নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। বিগত ১০ বছরে জেলার সড়ক ও জনপদ বিভাগে সড়কে বেইলি ব্রিজ, ক্ষতিগ্রস্ত সেতু প্রতিস্থাপন করে ৬টি সেতু পুনর্নির্মাণ হয়েছে। যেমন- ফুটকিবাড়ী, বকুলতলা, ভূষির বন্দর, তুলাই, ধুকুরঝাড়ী ও আমবাড়ীর ব্রিজ। এছাড়াও জরাজীর্ণ ও সরু ৯টি বেইলি ব্রিজসহ সেতুগুলো গাবুড়া, মাদারগঞ্জ, কাঁকড়া বন্দরের পুল, ঢেপা, গারোডাঙ্গী, নবাবগঞ্জ, পুলহাট ও কাহারোল সেতুর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। জেলার ১৩টি উপজেলায় ১৩টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ১৩টি মডেল মসজিদ ও ১৩টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন তৈরি হয়েছে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্মকর্তা সুমতি চাকমা রাইজিংবিডিকে বলেন, ২৬৫ কিলোমিটার জেলার মহাসড়ক বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুট উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমান গোবিন্দগঞ্জ-ঘোড়াঘাট-বিরামপুর-ফুলবাড়ি-দিনাজপুর (আর-৫৮৫) আঞ্চলিক মহাসড়ককে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৯৩ কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফিট থেকে ৩২ ফিটে উন্নীত করার কাজ চলমান রয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৮৮২ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দিনাজপুরের তথা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওয়ের সঙ্গে রাজধানীর দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার কমবে। এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৯২টি কালভার্টও পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-দক্ষিণের উন্নয়নের সোপান পায়রা সেতু
তিনি জানান, জেলার দক্ষিণে রয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর হিলি স্থলবন্দর। বর্তমান সরকার এ বন্দরকে আধুনিকায়ন এবং এর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২.৭০ কিলোমিটার রাস্তা চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হিলি-ঘোড়াঘাট সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’টি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নুরুল আলম খান বলেন, গত পাঁচ অর্থ বছরে সরকার হিলি কাস্টমস থেকে রাজস্ব পেয়েছে ১ হাজার ২৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৩৩ কোটি ১ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৯৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এছাড়াও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা পেয়েছে।
হিলি পানামা পোর্ট লিঙ্কের গণসংযোগ কর্মকর্তা সোহারাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, ২০০৭ সালে হিলি পানামা পোর্টটি ১০ একর জমির ওপর তৈরি হয়। পরে এই পোর্টে ভারত থেকে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি এবং ব্যবসা ভালো হওয়াতে আরও ১২ একর জমি বৃদ্ধি করে। পানামা পোর্টের হয়ে সরকারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করেন পোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনন্ত কুমার চক্রবতী (নেপাল)। বর্তমান বন্দরের কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে আবারও সরকার ১৬ থেকে ২০ একর জমি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই পোর্ট থেকে সরকার রাজস্ব পায় ৪৯ শতাংশ এবং পোর্ট কর্তৃপক্ষ পায় ৫১ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, পোর্টটি স্থাপন হওয়াতে এখানে প্রায় ১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এই বন্দর শহরে তৈরি হয়েছে শতাধিক আমদানি-রপ্তানি কারকের অফিসসহ গোডাউন। এসব গোডাউনেও কাজ করছেন কয়েকশ শ্রমিক। প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ দেশি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করে এবং পণ্য লোড করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে যায়। আবার ভারত থেকে এ বন্দরে প্রবেশ করে ১৮০ থেকে ২০০টি পণ্যবাহী ট্রাক।
হিলিতে রয়েছে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, যেখান দিয়ে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতাযাত করে থাকেন। তবে, করোনার প্রাদুর্ভাবে ইমিগ্রেশন বন্ধ ছিল। বর্তমানে শর্তসাপেক্ষে যাত্রী এ দেশে প্রবেশ করছেন।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ বলেন, এই জেলাকে দেশের উন্নত শস্যভান্ডার বলা হয়। এছাড়া চাল-লিচুতে ভরপুর এ জেলা। গত বোরো-আমন মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে ৭২০০ জন কৃষকের মাঝে বিভিন্ন জাতের ধান বীজের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকেরা ধান চাষ করেছেন। এখান থেকে সরকারের খাদ্য ভাণ্ডারে ১ লাখ ৫ হাজার মেট্রিকটন বোরো ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও ৩ হাজার আতব চাল সংগ্রহ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রসিদ্ধ কাটারিভোগ চাল দিনাজপুরে চাষাবাদ হয়ে থাকে। পুরো দেশের সিংহভাগ চাল এই জেলা থেকে সরবরাহ করা হয়। ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এখানে সব প্রজাতির আম হয়ে থাকে। জেলায় ৩০০টির বেশি রয়েছে নার্সারি, এগুলোতে বিভিন্ন জাতের ফলের চারা উৎপন্ন হয়।
প্রদীপ কুমার বলেন, পাটকে সোনালি আঁশ বলা হয়। প্রতি বছর বিদেশে রপ্তানি করে সরকার অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আর্জন করে। গত বছর জেলায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছিলেন কৃষকেরা। দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে, বৃদ্ধি পেয়েছে আরও ৩০০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ। অনাবাদী প্রকল্পে ১১ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে গ্রীষ্মকালীন বীজ-সার দেওয়া হয়েছে। ২২০০ জন কৃষককে পেঁয়াজের বীজ এবং সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। দেশের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে এসব বীজ বিতরণ করা হয়। পাট বীজসহ সার ৩০০ জনকে এবং ৭ হাজার ২০০ জনের মধ্যে মাসকালাই বীজ দেওয়া হয়েছে। দেশের শস্যভান্ডার ধরে রাখতে জেলায় বিভিন্ন জাতের ফসল ফলানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হিলি কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি এবং কৃষি বিভাগকে উন্নত করে যাচ্ছি। এই উপজেলায় প্রায় ৫৭০ জন কৃষককে কৃষির উপর ট্রেনিং দিয়েছি। ৪ হাজার ৪৯১ জন কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা বীজ ও সার বিতরণ করেছি। বিনামূল্যে ২ হাজার কৃষককে বিভিন্ন ফলের চারা এবং মাশরুম দিয়েছি।
এছাড়াও জেলায় রয়েছে বিভিন্ন মানবিক সংগঠন। ‘জাগ্রত দিনাজপুর টিম’ তেমনি একটি মানবিক সংগঠন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালে এই সংগঠনটি গড়ে ওঠে। এটি মূলত মানুষ, পশু-পাখির সেবা এবং শহরকে পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে কাজ করছে। এতে ৩০ জন সদস্য রয়েছেন, তারা সবাই ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী। মহামারি শুরু থেকে সংগঠনটি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবসেবায় কাজ করছে। মানুষের মাঝে করোনার সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধ সম্পর্কে প্রচারণা করছে। এছাড়াও করোনার কারণে সারাদেশে ছিল লকডাউন। বন্ধ ছিল সরকারি-বেসরকারিসহ সব প্রতিষ্ঠান এবং বাজার-ঘাট, হোটেল। সরকারসহ বিত্তবানরা অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু শহরজুড়ে শত শত অভুক্ত কুকুর-বিড়াল ছিল ক্ষুধার্ত। ওই মুহূর্তে সংগঠনটি ক্ষুধার্ত পশুর খাবার জুগিয়েছে। জাগ্রত টিম শুধু অসহায়দের নয়, নির্যাতিত মানু্ষের পাশে থাকে। এখন লকডাউন না থাকলেও পশুর যত্ন ও খাবার জোগাড়ে তারা ব্যস্ত রয়েছে। আবার শহরকে সুন্দর ও পরিষ্কার রাখতে এই ৩০ সদস্যের টিম কাজ করছে। তারা শহরের বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, অলিগলি, বাজার, হোটেল, ফুটপাত ও মাঠে ময়লা আবর্জনা নিজ হাতে পরিষ্কার করছেন।
হাকিমপুর (হিলি) পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, ১৯৯৯ সালে এই পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। আমি দুইবারের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এই পৌরসভায় রাস্তা হয়েছে ১৬৪টি, ড্রেন ৪৭টি, সড়কের বাতি ৫৬২টি ও ১৭টি ডাস্টবিন। সাড়ে ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজগুলো করা হয়েছে। এছাড়াও জলাবদ্ধতা নিরসন আমার বড় চ্যালেন্স।
বিরামপুর পৌর মেয়র আক্কাস আলী বলেন, আমি পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা করতে চাই। জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিষ্কার শহর করে গড়ে তুলতে চাই এবং সুষ্ঠু নাগরিক সেবা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পৌরপার্ক, বাস, ট্রাক টার্মিনাল করতে চাই। এছাড়া জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি বিরামপুরকে জেলা করা। আশা করছি সরকার বাহাদুর ও এমপি মহোদয়ের সহযোগিতায় এগুলো আমি বাস্তবায়ন করবো।
বিরামপুর উপজেলার চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু বলেন, উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজে নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে এই সরকারের সময়। উপজেলার পলিপ্রাগপুরে সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫টি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই চার উপজেলার মধ্যে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বড়। এই হাসপাতালে সুচিকিৎসা পায় চার উপজেলার মানুষ। তাই ৫০ শয্যা হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় পরিণত করার জন্য সরকারের নিকট আবেদন করেছেন তিনি।
বিরামপুর কৃষি অফিসার নিকছন চন্দ্র পাল বলেন, এই উপজেলায় সব ধরনের ফসল ফলে। প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ফসল কৃষকরা আবাদ করছেন। উপজেলায় ৩৪ হাজার ৫০০ কৃষক পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের দিয়ে সব ধরনের ফসল ফলানো হবে। বাড়ি বা কোনো স্থানে একশতক জমিও ফাঁকা রাখা যাবে না। পাট একটি অর্থকরী ফসল, গত মৌসুম থেকে চলতি মৌসুমে পাটের দাম ভালো পাচ্ছেন চাষিরা। তাই উপজেলায় পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে কৃষকরা চাষে মনোযোগী হয়ে উঠছেন। উপজেলায় মাল্টাসহ উন্নত জাতের পেয়ারা ও বিভিন্ন জাতের ফলের চাষ করা হয়েছে। কৃষকদের সুবিধার্থে ব্যাংক থেকে মাত্র ৪ শতাংশ লাভে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ৯৯৮ জন কৃষককে ৮ কোটি ১ লাখ টাকার কৃষি ঋণ এবং ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের কৃষিযন্ত্র দেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ও হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি এবং হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, গত ১২ বছরে জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রায় ৭০ ভাগ কাঁচা রাস্তা পাকা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ থেকে ৫ তলা পর্যন্ত নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। শতভাগ বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, পঙ্গু ও মাতৃকালীন ভাতার শতভাগ ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের দ্বিতীয় হিলি স্থলবন্দর। এ বন্দরে বাড়ছে ব্যবসাসহ ভারত থেকে আমদানি-রপ্তানি। সরকার এই বন্দরের উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছে। বন্দর বৃদ্ধিসহ সড়কগুলোকে উন্নত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার ৭৫ ভাগ রাস্তা পাকা করা হয়েছে। হিলিতে একটি জুট মিল রয়েছে, যেখানে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক রাইজিংবিডিকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার ৪টি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আগে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল, বর্তমান তা শতভাগ হয়েছে। ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করেছি ১০০টি, ৪টি কলেজ সরকারি করেছি। চার উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬টি নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ৪০ থেকে ৫০টি ভবন তৈরি হয়েছে। ১৭৫ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা পাকা করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ২০০ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার প্রস্তুতি রয়েছে। চার উপজেলায় ৪টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, ৪টি সরকারি মডেল মসজিদ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে রয়েছে খনি, যদি এই খনি থেকে সম্পদ উত্তলোন করা হয়, তাহলে অনেক বেকারত্ব দূর হবে। এছাড়াও গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি চুলের কারখানা। এসব কারখানায় স্থানীয় অনেক নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, তার সঙ্গে উন্নয়ন হচ্ছে দিনাজপুর-৬ আসন। চলমান রয়েছে ৪ উপজেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
মাহি/এসবি