ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অতিরিক্ত হাত ধোয়ার বিপদ এড়াতে যা করবেন

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:১৯, ২১ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অতিরিক্ত হাত ধোয়ার বিপদ এড়াতে যা করবেন

করোনা ভাইরাসকে দূরে রাখতে বেশি বেশি হাত ধোয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ঘন ঘন হাত ধোয়ার বিপদও রয়েছে।

অতিরিক্ত হাত ধোয়ার অভ্যাসে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে। অনেকে মনে করতে পারেন যে এ এমন কি বড় সমস্যা। কিন্তু তাদের এ ধারণা আসলে ভুল। ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুষ্কতা ও রক্ষতায় ত্বকের বেষ্টনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন রকম সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ত্বক বিশেষজ্ঞরা বারবার হাত ধোয়া জনিত ত্বকের যেসব সমস্যার কথা জানিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, র‌্যাশ বা ফুসকুড়ি ওঠা, চুলকানি, আঁশ ওঠা অথবা শুষ্কতা।

করোনা মহামারিতে ঘনঘন সাবান-পানিতে হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ও ঘরের জিনিস ভাইরাসমুক্ত করতে ওয়াইপ ও সলুশনের ব্যবহারে যেকারো হাতে এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে এ ক্রান্তিকালে আপনার হাতকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখবেন? জেনে নিন উপায়।

গরম পানি দিয়ে হাত ধুবেন না: ত্বককে ভাইরাসমুক্ত করতে গরম পানি দিয়ে হাত ধোয়ার প্রয়োজন নেই। এতে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পানির তাপমাত্রা ত্বকের জীবাণু দূরীকরণে কোনো প্রভাব ফেলে না। গরম পানি ত্বককে সাধারণ ঠান্ডা পানির চেয়ে বেশি শুষ্ক করে। তাই ত্বকের সমস্যা এড়াতে গরম পানির ব্যবহার হতে বিরত থাকুন।

বাথরুমে মৃদু পরিষ্কারক রাখুন: হাতের ময়লা, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করতে ক্লিনজার বা পরিষ্কারককে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। অনেক মৃদু পরিষ্কারকও জীবাণু দূর করতে যথেষ্ট; বিশেষ করে সেসব পরিষ্কারক যা সুগন্ধিমুক্ত ও লেবেলে নরিশিং, জেন্টেল, হাইড্রেটিং অথবা সেনসিটিভ লেখা রয়েছে।

ক্রিম ব্যবহার করুন: হাত ধোয়ার পর সুগন্ধিমুক্ত ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করলে শুষ্কতা ও রুক্ষতা এড়ানো যেতে পারে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, এসব সামগ্রী বেশিক্ষণ কার্যকর থাকে না। তাই যতবার হাত ধুয়ে নেবেন, ত্বকের সাময়িক সুরক্ষার জন্য ততবারই ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করবেন।

কেমিক্যাল এড়াতে গ্লাভস পরুন: ত্বকে পানি ও কেমিক্যালের সংস্পর্শ এড়াতে বাসনকোসন ধোয়া ও ঘর পরিষ্কারের সময় গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। এতে হাতের ত্বক বাড়তি শুষ্কতা ও রুক্ষতা অথবা অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবে।

ঘুমানোর পূর্বে ক্রিম মাখুন: ঘুমের সময়টা হচ্ছে একমাত্র সময় যখন আপনাকে ঘনঘন হাত ধুতে হয় না। তাই বিছানায় যাওয়ার পূর্বে শেষ পদক্ষেপ হিসেবে হাতকে জীবাণুমুক্ত ও আর্দ্র করা গুরুত্বপূর্ণ। সাবান-পানি অথবা মৃদু পরিষ্কারক ব্যবহারে হাত ধুয়ে নেয়ার পর সুগন্ধিমুক্ত ঘন ক্রিম বা অয়েন্টমেন্টের প্রলেপ দিন। এসময় ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা এড়াতে হালকা লোশন, সিরাম বা অয়েল যথেষ্ট নাও হতে পারে।

চুলকানির চিকিসা করুন: চুলকানি অনুভূত হলে চুলকানির তাড়না দমাতে চেষ্টা করুন। যতই চুলকাবেন, চুলকানির প্রবণতা ততই বেড়ে যাবে। কিন্তু এটি ত্বকের জন্য ভালো নয়। এর পরিবর্তে চুলকানি অনুভব করলে ওভার-দ্য-কাউন্টার হাইড্রোকরটিসোন অয়েনমেন্ট ব্যবহার করুন। প্রশান্তিদায়ক প্রতিক্রিয়া দেখায় এমন ময়েশ্চারাইজারও ব্যবহার করতে পারেন।

ত্বক বিশেষজ্ঞকে কল করুন: এ মহামারিতে ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সাক্ষাত নাও হতে পারে। এ অবস্থায় একজন ত্বক বিশেষজ্ঞকে কল করে আপনার সমস্যা সম্পর্কে জানাতে পারেন। তিনি আপনার ত্বকের শুষ্কতা ও অস্বস্তি প্রশমন করতে উপযুক্ত ক্রিম বা অয়েনমেন্ট প্রেসক্রাইব করতে পারেন, যেমন- ক্লোবিটাসল বা বিটামিথাসোনের মতো টপিক্যাল স্টেরয়েড অথবা পাইমক্রোলিমাস বা ট্যাকরোলিমাস বা ক্রিসাবোরোলের মতো ননস্টেরয়েড ওষুধ। এটা মনে রাখা ভালো যে, হাত ধোয়া ছাড়াও আরো অনেক কারণে ত্বকে র‌্যাশ ওঠতে পারে, যেমন- স্কিন অ্যালার্জি বা অ্যালার্জিক কনটাক্ট ডার্মাটাইটিস, একজিমা, সোরিয়াসিস, স্নায়ুর ইনজুরি, অনির্ণীত শারীরিক সমস্যা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও ত্বকের সংক্রমণ।



ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়