ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহ বেড়েছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহ বেড়েছে

কেএমএ হাসনাত : দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্যাস ও জ্বালানি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ বিবেচনায় বর্তমান সরকার গ্যাস ও জ্বালানিখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। ২০০৯ সালে প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৯৫৬ মিলিয়ন কিউবিট ফুট। বর্তমান সরকার এ উৎপাদন ক্ষমতা ২৭৪৬ কিউবিক ফুটে উন্নীত করেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের ক্ষেত্রে এশিয়ার মধ্যে সপ্তম। বর্তমানে ২৬টি গ্যাস ফিল্ডের মধ্যে ২৭ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট (টিসিএফ) গ্যাস মজুদ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  যার মধ্যে ১৫ টিসিএফ পর্যন্ত নিশ্চিত পাওয়া যাবে। আর ভোলা জেলায় নতুন কূপে (২৭তম গ্যাস ফিল্ড) ৭০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বছরের জানুয়ারিতে ওই গ্যাসক্ষেত্র থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। উল্লেখিত গ্যাসের মজুদ দিয়ে ২০৫০ সাল পর্যন্ত দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটানো যাবে।

বর্তমানে দেশে প্রতি বছর প্রায় এক টিসিএফ গ্যাস খরচ হচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদন হয়েছে ২৭০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট যেখানে গ্যাসের চাহিদা ছিল ৩৫০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদন হয়েছিল ২৭৪৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট যেখানে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে হয়েছিল ৩৭৮১ মিলিয়ন কিউবিক ফুট।

বর্তমানে প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ক্ষমতা ২৭৪৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট হলেও ২০০৯ সালে এই উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৯৫৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট। পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো গ্যাস ভিত্তিক হওয়ায় প্রায় ৭,৬২৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্যাসের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। প্রতিদিন উক্ত প্ল্যান্টগুলো চালাতে ১২০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট গ্যাসের প্রয়োজন হলেও পেট্রোবাংলা থেকে ৯০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট গ্যাসের যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। সরকার উক্ত প্ল্যানটগুলো চালানোর পাশাপাশি সার কারখানা ও শিল্প খাতে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। ফলে বর্তমানে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।

২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে গ্যাস সরবরাহ করা হয় যেমন, পাওয়ার প্ল্যান্টে ৪১ শতাংশ, ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টে ১৭ শতাংশ, শিল্প কারখানায় ১৭ শতাঙশ, গৃহস্থলী ১৬ শতাংশ, সার কারখানায় ৫ শতাংশ, যানবাহন ও সিএনজি ৪ শতাংশ। এখানে উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখা, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য গড়ে প্রতিবছর ১৩ শতাংশ হারে গ্যাস উৎপাদন/সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে। এ কারণে সরকার গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে ড্রিলিং প্রকল্প হাতে নিয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় ভোলায় একটি এবং শাহবাজপুরে তিনটি গ্যাসের কূপ খননের কাজ হাতে নিয়েছে যেখানে বাংলাদেশ পেট্রেলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) সঙ্গে বিদেশি কোম্পানিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন করবে এর মধ্যে ৫৩টি বাপেক্স এর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে। উক্ত কূপগুলো মূলত দেশের পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ উত্তর পূর্ব, পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক সালিশি বিচারের মাধ্যমে দেশের সমুদ্রসীমা বর্ধিত হওয়ার কারণে ইতোমধ্যে ২৮টি অফশোর ব্লক সার্ভে এবং ড্রিলিংয়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লিক্যুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি), লিক্যুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলজিপি) ও কমপ্রেসড ন্যাচরাল গ্যাসের (সিএনজি) যথোপযুক্ত ব্যবহার ও সরবরাহ বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসনাত/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়