ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

দুই কিশোরী কন্যার দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বাবা

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০১, ১৬ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দুই কিশোরী কন্যার দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বাবা

ছবি : মেহেদী হাসান ডালিম

মেহেদী হাসান ডালিম: বগুড়া সদর উপজেলার অধিবাসী ইঞ্জিনিয়ার মোতাছিম বিল্লাহ মিলন। রাজশাহীর আশ্রয় টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের অধ্যক্ষ তিনি। দুই কন্যা মোহনা, হালিমা ও স্ত্রী নিয়ে সুখের সংসার ছিল। সেই সুখ বেশিদিন টেকেনি। স্ত্রীর দেহে রোগব্যাধি বাসা বাঁধায় সুখের সংসারে অমfনিশা নেমে আসে। স্ত্রীকে বাঁচাতে চেষ্টার কম রাখেননি মিলন। ভারতেও নিয়ে গেছেন। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ২০১৭ সালে না ফেরার দেশে চলে যান স্ত্রী। রেখে যান দুই কন্যা মোহনা ও হালিমাকে।

স্ত্রী মারা যাওয়ার মাসখানেক পরে মিলন তার আদরের মেয়েদের নিজের কাছে নিয়ে আসতে শ্বশুর বাড়ি যান। কিন্তু প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা শ্বশুর মোহনা ও হালিমাকে বাবার কাছে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি শ্বশুর ও ভায়রা মিলে মিলনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারতে উদ্যত হন।

উপায়ান্তর না দেখে মেয়েদের নিজের কাছে নিয়ে আসার জন্য প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ও পরে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। পারিবারিক আদালত মেয়েদেরকে বাবার জিম্মায় ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে বগুড়া জজ আদালতে মিলনের শ্বশুর আপিল করেন। বগুড়ার জজ আদালত পারিবারিক আদালতের আদেশ বাতিল করে মোহনা ও হালিমাকে নানার জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন।

জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসেন মিলন। মামলার শুনানি নিয়ে বিচারপতি জাফর আহমদের হাইকোর্ট বেঞ্চ চলতি বছরের প্রথম দিকে মেয়েদের সপ্তাহে তিন দিন বাবার কাছে ও চারদিন নানার জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। এখানেই শেষ নয়। হাইকোর্টের আদেশও পছন্দ হয়নি নানার। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন তিনি।

গত ৪ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আদেশে বলেন, ‘মোহনা ও হালিমা নানার জিম্মায় থাকবে তবে সপ্তাহে একদিন মহিলা সমাজ সেবা অফিসারের উপস্থিতিতে বাবার সাথে দেখা করবে। একইসঙ্গে সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে আদালতের আদেশ প্রতিপালন হয়েছে কি না- এ বিষয়ে ১৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।

আজ নির্ধারিত দিনে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ আবেদন নিস্পত্তি করে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আপাতত আপিল বিভাগের আগের আদেশ বহাল থাকবে বলে জানান মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।

আদালতে মিলনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এ আর রায়হান। মিলনের শ্বশুরের পক্ষে ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি শহিদুল ইসলাম।

আপিল বিভাগ থেকে বের হয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোতাছিম বিল্লাহ মিলন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বড় মেয়ে সায়েদাতুন নেছা মোহনা ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে হালিমাতুছ সাদিয়া বগুড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। এখন আমার একটাই চাওয়া যে, আমার বাচ্চাগুলো মানুষ হোক, বাবা হিসেবে আমি মনে করি- এটা সব পিতাই চায়। আমার কাছে থেকে সুন্দরভাবে পড়ালেখা করে মানুষ হোক- এটাই আমার চাওয়া।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুন ২০১৯/মেহেদী/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়