অফলাইন রাইডে নিরাপত্তা ঝুঁকি
আহমদ নূর : দেশে অ্যাপস ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস চালুর পর দ্রুত জনপ্রিয়তা পেলেও সম্প্রতি অ্যাপ ছাড়া বা অফলাইনে চুক্তিতে গাড়িতে যাত্রী নিচ্ছেন চালকরা। এর মধ্যে মোটরবাইক চালকদের বেশি দেখা গেছে চুক্তিতে যাত্রী নিতে।
সম্প্রতি ঢাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান করে অফলাইনে রাইড শেয়ারিংয়ের চিত্র দেখা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, রাইড শেয়ারিং অ্যাপে গাড়ি ডাকলে চালকরা সাড়া দিতে চাননা। কেউ সাড়া দিলেও 'পিক পয়েন্টে' আসতে তারা সময়ক্ষেপণ করেন। কোনো কোনো সময় চালকরা রাইড গ্রহণ করে তা বাতিলও করে দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে দেখা গেছে, রাইড শেয়ারিং অ্যাপসভিত্তিক চালকরা তাদের গাড়ি নিয়ে সড়কের পাশে যাত্রীর অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা অ্যাপে নয়, চুক্তিতে যাত্রী তুলছেন।
জুবায়ের আহমেদ নামের এক ব্যক্তি জরুরী প্রয়োজনে যাবেন মিরপুর ১০ নম্বরে। ফার্মগেটে দর কষাকষি করে তিনি একটি মোটরবাইক ঠিক করেন। অ্যাপ থাকতে দরকষাকষির কারণ জানতে চাইলে বলেন, 'অনলাইনে অনেক্ষণ ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। এভাবে নিরাপদ নয় কিন্তু জরুরী প্রয়োজন বলে যাচ্ছি।'
ফার্মগেটে প্রায় ১ ঘণ্টা অবস্থান করে একই চিত্র আরো দেখা গেছে। দুপুরে বসুন্ধরা শপিং মলের সামনেও দেখা গেছে অফলাইনে রাইড শেয়ারিংয়ের চিত্র।
অফলাইনে যাত্রী নেওয়া কয়েকজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, দ্রুত যাত্রী পেতে তারা অ্যাপের পাশাপাশি অফলাইনে রাইড নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে তারা নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।
আব্দুস সালাম নামের একজন চালক বলেন, 'যাত্রীর চেহারা দেখে বুঝতে পারি কোনো ক্ষতি করবে কী না।' আরেক চালক ওবায়েদ বলেন, 'অ্যাপে পছন্দ মতো রাইড পাইনা। এজন্য অফলাইনে রাইড নেই।'
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপ কমিশনার আলিমুজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এভাবে রাইড শেয়ার করা নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অ্যাপ ছাড়া রাইড শেয়ারিং হলে কে কার গাড়িতে কখন উঠছে তা জানা প্রায় অসম্ভব। অন্যদিকে অ্যাপস ব্যবহার করলে সে ক্ষেত্রে যদি অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা ঘটে পুলিশ দ্রুত তথ্য খুঁজে বের করতে পারবে। কেননা, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে চালকদের বিষয়ে তথ্য সংরক্ষিত থাকে। অফলাইনে রাইড শেয়ারিংয়ের ফলে গাড়ি চুরি, ছিনতাই এমনকি হত্যাকাণ্ডও ঘটতে পারে।’
রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান পাঠাওয়ের মার্কেটিং ম্যানেজার সৈয়দা নাবিলা মাহবুব রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা চালকদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছি। তাদের ঝুঁকি না নিতে বলেছি। তারপরও তারা তা করলে কিছু করার থাকে না।’
আরেক রাইড শেয়ারিং অ্যাপ সহজের মার্কেটিং ডিরেক্টর শেহজামি খলিল বলেন, ‘চালকদের নিরাপত্তায় আমরা অ্যাপের মাধ্যমে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করি। নিয়ম ভাঙলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় শুরু হয় রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। সম্প্রতি উত্তরা ও মোহাম্মদপুরে রাইড শেয়ারিংয়ের গাড়ির দুই চালক হত্যার শিকার হওয়ায় এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জুলাই ২০১৯/নূর/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন