ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ব্যাংক লকডাউন: ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩১, ৯ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যাংক লকডাউন: ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

করোনা-সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ওইসব এলাকায় থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখাও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এতেই ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। তবে, গ্রাহকদের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের শাখা থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ গ্রাহকই জানিয়েছেন, এটিএম কার্ড না থাকায় তারা বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন না।

জানা গেছে, ব্যাংক কর্মকতারা করোনা-আক্রান্ত হওয়ায় রাজধানীর মতিঝিলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দারুসসালাম শাখা লকডাউন রাখা হয়েছে। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের খিলগাঁও শাখা, সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের একাধিক শাখা লকডাউন অবস্থায় রয়েছে। লকডাউন না ছাড়া পর্যন্ত ওই শাখাগুলো আপাতত বন্ধ রাখা হবে। তাই ওইসব এলাকার আশেপাশে বা নিকটস্থ অন্য শাখায় গ্রাহকদের লেনদেন করতে ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকদের অনুরোধ করা হয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের খিলগাঁও শাখায় গ্রাহক মোহাম্মদ হাফিজ  বলেন, ‘করোনার সংক্রামণ রোধে পূবালী ব্যাংকের খিলগাঁও শাখা লকডাউন করে রাখা হয়েছে। ব্যাংকের শাখা থেকে এটিএম বুথ ব্যবহারের আহ্বান জানো হয়েছে।  কিন্তু আমার কোনো এটিএম কার্ড নেই। তাই  টাকা তুলতে পারছি না।’

মিডল্যান্ড ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার প্রধান মো. রিদুয়ানুল হক বলেন, ‘ব্যাংকে প্রায় সব শ্রেণির মানুষের যাতায়াত রয়েছে। তাই এই সময়ে বাড়তি সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। টাকা তোলার জন্য এখন বুথ ব্যবহার তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।’  

এই ধরনের দুর্ভোগের প্রসঙ্গে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল হালিম চৌধুরী বলেন, ‘এই বিষয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি শাখা ব্যবস্থাপককে নির্দেশনা দেওয়া আছে। বলা আছে, যেসব এলাকায় করোনার প্রভাবে লকডাউন থাকবে, ওইসব এলাকায় ব্যাংক শাখা  বন্ধ করে দিতে হবে।’

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, দেশব্যাপী ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৩০টি শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লকডাউনের কারণে। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের শাখা রয়েছে। আগে মানুষের নিরাপত্তা, তারপর ব্যাংকিং। লকডাউন ছাড়ার পর আবার শাখাগুলো খোলা হবে।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে সবার উচিত, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। তাই জনস্বার্থে যেসব নিয়ম করা হচ্ছে। সবাইকে নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ করছি।’

লকডাউন এলাকায় গ্রাহকদের ভোগান্তি দূরকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই মুহূর্তে গ্রাহকরা এটিএম বুথ ব্যবহার করতে পারেন। বুথে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। খুব বেশি প্রয়োজন হলে নিকটস্থ ব্যাংকের শাখার সেবা নিতে পারেন।’

প্রসঙ্গত, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘ দিন ধরে সীমিত পরিসরে ব্যাংক লেনদেন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় প্রথমে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। এরপর পরবর্তী নির্দেশনায় তা আরও একঘণ্টা বাড়িয়ে ১টা পর্যন্ত  সময় বাড়ানো হয়েছিল।

পরবর্তী সময়ে গ্রাহকচাহিদার কথা বিবেচনা করে সময়সীমা আরও এক ঘণ্টা বাড়িয়ে বেলা ২টা করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুরালে ব্যাংক লেনদেনের সময় সকাল ১০ টাকা থেকে  দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।


ঢাকা/এনটি/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়