ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৩, ১৬ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা

পুঁজিবাজারে তারল্য প্রভাব বৃদ্ধি ও গতি ফেরাতে ১০ শতাংশ কর দিয়ে তিন বছরের জন্য লক-ইন শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন কি-না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তাদের অভিযোগ, অপ্রদর্শিত অর্থ ব্যাংকে জমা রাখা বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা দুটোই লাভজনক। ওই দুটি খাতের চেয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে ফ্ল্যাট ক্রয়, নগদ জমা, ব্যাংকে জমা ও সঞ্চয়পত্রের চেয়ে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বেশি আগ্রহী হবেন না।

বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্টদের দাবি, পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে যে তিন বছরের লক-ইন শর্ত দেওয়া হয়েছে তা শিথিল করতে হবে। অন্যান্য খাতের মতোই পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনা শর্তে সুযোগ দিতে হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের অপ্রদর্শিত অর্থের ন্যুনতম ৫০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বাধ্যতামূলক বিনিয়োগের সুযোগ রাখতে হবে। এতে পুঁজিবাজার তারল্য প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। অন্যথায় পুঁজিবাজারের চেয়ে ব্যাংকে আমানত রাখা বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার বিষয়ে আগ্রহী হবেন ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা শর্তে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা, তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার কমিয়ে ২০ শতাংশ করা, লভ্যাংশ আয়ে করমুক্ত সীমা বাড়িয়ে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা করা এবং মার্জিন ঋণের সুদ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব চূড়ান্ত বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি জানোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

এদিকে গত ১৪ জুন পুঁজিবাজারে বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।

সংগঠনটি বলছে, অপ্রদর্শিত আয় অন্যান্য খাতের মতো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্যও কোনো শর্ত থাকা উচিত না। অন্যথায় পুঁজিবাজারের চেয়ে ব্যাংকে আমানত রাখা বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার বিষয়ে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আগ্রহী বেশি হবে।

এদিকে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) তাদের বাজেট প্রস্তাবে উল্লিখিত দাবিগুলোর মধ্যে পুঁজিবাজারে বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছে।

পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষেদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেন, বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রাখার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে ন্যুনতম ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক বিনিয়োগের সুযোগ রাখার বিষয়েও আবেদন জানাচ্ছি।

বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, অপ্রদর্শিত আয় শর্ত ছাড়াই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া উচিত। শর্ত থাকার কারণে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের পুঁজিবাজারের চেয়ে ব্যাংকে আমানত বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে আগ্রহী বেশি হবেন। এতে পুঁজিবাজার উপকৃত হবে না।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে একাধিকবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন তেমন বিনিয়োগ আসেনি। এবারও পুঁজিবাজারের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকে জমা রাখতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।


এনটি/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়