ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আ.লীগের সাফল্যের বছর

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আ.লীগের সাফল্যের বছর

নৃপেন রায় : ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালের পথচলা শুরু করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বছরের শেষটা তাদের অর্জন ও সাফল্যে ভরা। লক্ষ্য পূরণে জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন ও নতুন কমিটিতে সজ্জিত হয়ে বছর শেষ করছে ক্ষমতাসীন দলটি।

 

২০১৬ সাল সাফল্যের সেরা একটি বছর হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকবে আওয়ামী লীগের দলীয় স্মৃতির পাতায়। বজরজুড়ে আলোচিত ও সমালোচিত দিকগুলোর বিশ্লেষণে এমনটাই প্রতীয়মান হয়েছে।

 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী  হয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। দিনটিকে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র রক্ষা দিবস হিসেবে পালন শুরু করে। আর অন্যতম বড় দল বিএনপি ৫ জানুয়ারিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে।

 

২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে দেশব্যাপী দুপুর আড়াইটায় একযোগে আনন্দ র‌্যালি ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে। আওয়ামী লীগের বিশাল আয়োজনে বিএনপির কর্মসূচি আড়ালে পড়ে যায়। সে ধারাবাহিকতায় বছর জুড়ে আওয়ামী লীগ দলীয় তৎপরতা গতিশীল রাখে। পাশাপাশি আগামী দিনের লক্ষ্য পূরণে ২২ ও ২৩ অক্টোবর ২০তম জাতীয় সম্মেলন করে। এতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরু করে।

 

বিদায়ী বছরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ছয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা ২৬৭২টি ইউপিতে জয়লাভ করেন। সারা দেশে মোট ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা ৪,৫৪৬টি। এই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও আওয়ামী লীগ তাদের মনোনীত প্রার্থীর জয়কে দলীয় অর্জন হিসেবেই বিবেচনা করছে।

 

সর্বশেষ ২২ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন হয়। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। দলটি আইভীর বিজয়কে নৌকা মার্কা এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচন বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর এ নির্বাচনে ভোট হবে। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরাই বিজয় অর্জন করতে যাচ্ছেন। তবে কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত একাধিক প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই প্রার্থীরাও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা। ইতোমধ্যে ৬১ জেলার মধ্যে ২৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

 

তারপরও টানা মেয়াদে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে কোথাও কোথাও দলীয় নেতাকর্মী এবং সংসদ সদস্যদের বিতর্কিত কর্মকা-ের কারণে কালিমা লেপন হয়েছে। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলার ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এসব ঘটনা দলীয় কোন্দল, ইন্ধন ও আধিপত্য বিস্তারের প্রভাবের ফল বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

 

তারপরও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি ও শৃংখলার ইতিহাসে অনুপ্রেরণা হিসেবে অভিহিত হয়েছে দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনে রাজধানী ঢাকা ও সারাদেশ বর্ণিল সজ্জা ও উৎসাহ উদ্দীপনায় মেতে ওঠে। আওয়ামী লীগের সম্মেলনস্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সেজেছিল নজিরবিহীন ও নান্দনিক সজ্জায়। সম্মেলনে আগামী দিনে দলের মিশন টার্গেটে কাউন্সিলররা আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে পুনরায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকে মনোনীত করেন। এরপর কয়েক দফায় দলের ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় হয়। দলটি আগামী দিনের মিশন-ভিশনের লক্ষ্য নিয়ে নবযাত্রা শুরু করে। তার আগে প্রায় এক যুগ পর ঢাকা মহাগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি ঘোষণা করে।

 

আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয় নাসিক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর জয় ছিনিয়ে আনা। দলটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় নাসিক নির্বাচনেও সফল হয়।

 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ ডিসেম্বর ২০১৬/এনআর/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়