ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার জামিন বহাল

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৮, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার জামিন বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : অর্থপাচারের মামলায় এবি ব্যাংকের ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে এ রায় দেন।

তবে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, বিশেষ আইনের এ ধরনের অর্থপাচারের মামলায় জামিন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে সতর্ক থেকে সঠিকভাবে বিচারিক মনন প্রয়োগ করতে হবে। যেহেতু বিষয়টির সঙ্গে অর্থপাচারের মতো গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ জড়িত, এ ধরনের মামলায় জামিন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলার এজাহার, বাদী-বিবাদীপক্ষের বক্তব্য এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিসমূহ যথাযথভাবে পর্যালোচনা করতে হবে ।

বেঞ্চের দ্বিতীয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

তবে কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রুল যথাযথ ঘোষণা করে এ দুজনকে দেওয়া নিম্ন আদালতের জামিন বাতিল করে দেন।

তিনি তার আদেশে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অর্থপাচার আইনের ২(ষ) (জ)(৯) (১০) ও ১৩ ধারা পর্যালোচনা করলে এটা কাচের মতো পরিষ্কার যে, ম্যাজিস্ট্রেট এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে তাদের জামিন দিয়েছেন। যদিও এ ধরনের মামলায় জামিন ও রিমান্ডসহ সকল কিছুর এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে বিশেষ আদালতকে। তাই আইনের বিধান ও কালাকানুন ভঙ্গ করে স্বেচ্ছাচারমূলকভাবে জামিন দেওয়ায় তা বাতিল করা হলো। একই সঙ্গে আসামিদের এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হলো।

আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খুরশিদ আলম খান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসাদুর রউফ ও শেখ বাহারুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।

এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ব্যাংকটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ আটজনকে আসামি করে মতিঝিল থানায় মুদ্রাপাচার আইনে এ মামলা করেন।

ওই দিন বিকেলে মৎস্য ভবন এলাকা থেকে ওয়াহিদুল হক, আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ওই দিনই দুজনকে জামিন দিয়ে একজনকে রিমান্ডে পাঠান আদালত।

মামলায় বলা হয়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখা থেকে দুবাইয়ে পাচার করেন এবং পরে তা আত্মসাৎ করেন। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থপাচারের ওই ঘটনা ঘটে। তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর দুই ঘণ্টার মাথায় দুই আসামিকে এভাবে জামিন দেওয়ায় তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় এ জামিনের বিষয়ে প্রকাশিত খবর আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। পরে এ ঘটনাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে ওই দুই আসামির জামিন বাতিলের আর্জি জানালে ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ডিসেম্বর ২০১৮/মেহেদী/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়