ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাইক চুরি ঠেকাবে ট্যাসলক কার্বন

নিয়ন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৭, ৮ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাইক চুরি ঠেকাবে ট্যাসলক কার্বন

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : মোটর বাইকের নিরাপত্তায় সাধারণত অতিরিক্ত তালা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি ডিজিটাল লক হিসেবে সিকিউরিটি ডিভাইসেরও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এ ধরনের একটি নতুন ডিজিটাল সিকিউরিটি রিমোট ডিভাইস হচ্ছে ট্যাসলক কার্বন এডিশন। এটি ট্যাসলকের চতুর্থতম ভার্সন।

আগের তিনটি ভার্সনের তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর বাজারে এসেছে ট্যাসলক কার্বন এডিশন। এই এডিশনে মোটর বাইক লক করার জন্য আলাদা কোনো সুইচ চাপতে হয় না। মোটর বাইকের চাবি বন্ধ করে তিন সেকেন্ড পার হলে মোটর বাইকটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। রিমোটসহ কার্বন এডিশনযুক্ত বাইকটির কাছে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক খুলে যাবে। এছাড়াও রিমোট ডিভাইসটির মাধ্যমে ম্যানুয়াল লক করার অপশন রয়েছে।

দেশের বাজারে ট্যাসলক আমদানি করে ‘দুই চাকা অটো’। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাদভী রেজা বলেন, প্রতিনিয়ত আমরা লকের আপগ্রেড করার জন্য গবেষণা করি। আমাদের মিলিটারি গ্রেডের এই সিকিউরিটি লকগুলো নিরাপত্তায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বাইকের কোনো সংযোগ না কেটে এই লকটি সহজে ইনস্টল করা যায়। ২০ তলা বা সোজাসুজি দুরত্বে প্রায় ৩০০-৫০০ মিটার দূর থেকেও এই রিমোট ডিভাইসটি দিয়ে মোটর বাইক লক বা আনলক করা যায়। রিমোট লক করে বাইক থেকে অনেক দুরে থাকলেও সিকিউরিটি ডিভাইসটি সবসময় কার্যকর থাকে। বাইকের চাবি ছাড়া কার্বন এডিশনের রিমোট দিয়ে মোটর বাইক চালানো যায়। এছাড়াও এই ডিভাইসটিতে ৩৭টি ফিচার রয়েছে।

ট্যাসলক কার্বন এডিশনের প্যাকেজে দুইটি রিমোট থাকে। একটি রিমোট সেন্সর হিসেবে কাজ করলেও অন্যটি শুধুমাত্র ব্যাকআপ রিমোট। এই সিকিউরিটি ডিভাইস থাকলে বাইক ডাকাত বা ছিনতাইকারীর হাতে পরলেও হারানোর ভয় নেই বলে দাবি করেন রাদভী রেজা।

মোটর বাইক মালিকের হাতে যে রিমোট ডিভাইসটি থাকবে, সেটি ভাইব্রেশন অপশন সমৃদ্ধ। বাহনে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো স্পর্শ এলে অ্যালার্ম এবং ভাইব্রেশনের মাধ্যমে জানার অপশন রয়েছে। যেখানে অনেক বাইক বা গাড়ি থাকে, সেসব স্থানে নিজের বাইক বা গাড়ি খুঁজে পাওয়ার জন্য ফাইন্ডার অপশন রয়েছে। এই ডিভাইসটিতে সাইলেন্ট মোড রয়েছে। ফলে বাহন লক রেখে মিটিং বা নামাজে থাকলে রিমোট ডিভাইসে অ্যালার্ম বা ভাইব্রেশন বন্ধ রাখা যায়। তবে বাইকের অ্যালার্ম কার্যকর থাকবে।

কার্বন এডিশনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি শতভাগ অ্যান্টি জ্যামার প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। তাই কোনোভাবেই এটি হ্যাক করা সম্ভব নয়। এতে রয়েছে সেফটি ফিউজ। সিকিউরিটি ডিভাইসকে গাড়ি থেকে আলাদা করে ফেললেও অ্যালার্ম বন্ধ বা বাইক চালু হবে না। বাইক বা গাড়ির ব্যাটারি অকেজো করে দিলেও এই ডিভাইস নিজস্ব ব্যাটারি ব্যাকআপে সক্রিয় থাকবে। কার্বন এডিশনের শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য পাঁচটি ধাপ রয়েছে। এর মাধ্যমে সাউন্ডের মাত্রা কতটুকু থাকবে তা নির্ধারণ করা যায়। কার্বন এডিশনের মাধ্যমে বাইক লক থাকা অবস্থায় কেউ স্পর্শ বা চুরি করার চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত অ্যালার্ম বাজবে। লক করার পর সিকিউরিটি ডিভাইসের রিমোট ছাড়া মোটর বাইকের আসল চাবি দিয়েও মোটর বাইক চালু করা যাবে না। এমনকি বাইক থেকে সিকিউরিটি ডিভাইসটি লক অবস্থায় খুলে ফেললেও মোটর বাইক স্টার্ট হবে না।

ট্যাসলক কার্বন এডিশনের মূল ডিভাইসটি পানি এবং ধুলো নিরোধক। আর  রিমোট ডিভাইসটি ধুলো নিরোধক। যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার আদলে রিমোট ডিভাইসটির ডিজাইন করা হয়েছে। সিকিউরিটি ডিভাইস মোটর বাইকের ব্যাটারির উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে বলে যে আশঙ্কা করা হয়, ট্যাসলক কার্বন এডিশন এই শঙ্কা থেকে মুক্ত। কার্বন এডিশনের ট্যাসলকটিতে গাড়ির ব্যাটারির ব্যবহার শুন্য শতাংশ। এই ডিভাইসটির সকল তারে সিলভারের প্রলেপ দেয়া আছে। ফলে পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

দুই চাকা অটোর স্বত্ত্বাধিকারী রাদভি রেজা বলেন, তাইওয়ান থেকে এই ডিভাইসগুলো আমদানি করে দেশে মডিফাই করা হয়। তাই কোনোভাবেই বাজারের সাধারণ সিকিউরিটি ডিভাইসের সঙ্গে এই ডিভাইসকে মেলানোর সুযোগ নেই। চীনে আমাদের নিজস্ব অ্যাসেম্বল প্লান্ট রয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে ট্যাসলক ভারত এবং ফিলিপাইনে রপ্তানি হচ্ছে। এই ডিভাইসের সঙ্গে জিপিএস লক ডিভাইস সংযুক্ত করে পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে বাইক বা গাড়ি লক বা আনলক করা সম্ভব। এছাড়া বাহনের গতিবিধির উপর নজরদারিরও সুযোগ মিলবে কোনো প্রকার মাসিক চার্জ ছাড়াই। ট্যাসলক কার্বন এডিশনের মূল্য ২৯৯৯ টাকা। 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ আগস্ট ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়