ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় যা থাকছে

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১৪ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় যা থাকছে

‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ থেকে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী দেশের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯।’ তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রজেক্ট, এটুআই এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যৌথ উদ্যোগে এই আয়োজন।

আজ সকাল ১০টা থেকে প্রদর্শনী শুরু হলেও বেলা ৩টায় এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ডিজিটাল পণ্য এবং তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবিত নিত্য নতুন আবিষ্কারের বর্ণাঢ্য এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ.কে.এম. রহমতুল্লাহ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উইটসার মহাসচিব ডা. জেমস পয়জান্ট উপস্থিত থাকবেন।

রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক এবং বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার, আইসিটি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম, এটুআই প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মান্নানসহ আরো অনেকে।

প্রযুক্তি খাতে দেশের সক্ষমতা, দক্ষতা, হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদনে সম্ভাবনা এবং কর্মপ্রচেষ্টার বাস্তবচিত্র এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করা হবে। হাই-টেক পার্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নয়ন কাঠামোর অগ্রগতিতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া সম্পর্কেও দর্শনার্থীরা সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারবেন।

প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে প্রদর্শনীতে প্রবেশের জন্য প্রদর্শনীর ওয়েবসাইট (https://ddiexpo.com/registration) অথবা স্মার্টফোনে আইওএস (https://apple.co/2ohSA1v) ও অ্যান্ড্রয়েড (https://bit.ly/35j2PDg) থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে হবে। উল্লেখিত সাইট বা অ্যাপে প্রদর্শনী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। পুরো প্রদর্শনী অনলাইনে লাইভ স্ট্রিমিং করা হবে।

দেশীয় প্রযুক্তির সমাহার দিয়ে এবারের প্রদর্শনীকে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। রাখা হয়েছে ৮টি জোন। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ জোনে দেশীয় প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানদের এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে। থাকছে ইনোভেশন জোন। এই জোনে নিত্য নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে জানা যাবে। আইডিয়া প্রজেক্টের ৩০টি প্রজেক্ট, এটুআই এর ৩০টি প্রজেক্ট এবং ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে ইনোভেশন জোন। অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামগুলো থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন এক্সপোতে প্রদর্শিত হবে এবং প্রদর্শনীটি শেষ হওয়ার পরে শীর্ষ ১০ তরুণ উদ্ভাবককে বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি) দিয়ে ভূষিত করা হবে। স্টার্টআপ জোনে নতুন উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রজেক্ট সম্পর্কে ধারণা পাবেন দর্শনার্থীরা। মেলার অন্যতম আকর্ষণ রোবোটিক জোন। এই জোনে শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবটের পদচারণা থাকবে।

মঙ্গলে যাওয়ার স্বপ্নকে সত্যি করতে এই প্রদর্শনীতে থাকবে মঙ্গলযাত্রার নিবন্ধন। ২০৪১ সালে মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে এই জোন দর্শনার্থীদের আশার সঞ্চার করবে। বিসিএস এক্সপো জোন এ পাওয়া যাবে তথ্যপ্রযুক্তির সকল হালনাগাদ পণ্য। স্বনামধন্য প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানরা তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে। প্রযুক্তিপণ্য কেনার সুযোগ মিলবে এই জোনে। এক্সপো জোনে থাকবে ১১০টি প্যাভেলিয়ন এবং স্টল। ১০০টির বেশি প্রতিষ্ঠানের (আসুস, এইচপি, ডেল, ইন্টেল, স্যামসাং ইত্যাদি) প্রদর্শন করবে প্রযুক্তি পণ্যের সমাহারে সাজানো হয়েছে। থাকবে বিটুবি এবং মিডিয়া কর্ণার।

গেমারদের জন্য থাকছে গেমজোন। থাকছে নানা ধরনের উপহারের ছড়াছড়ি। দেশের তৈরি বিখ্যাত ল্যাম্বারগিনি গাড়ির আদলে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির দেখা মিলবে এক্সপোতে। থাকবে রোবট আঁকাসহ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এক্সপোর দ্বিতীয় দিন দর্শনার্থীদের জন্য দেশের নাম করা ব্যান্ডের অংশগ্রহণে থাকছে কনসার্ট। তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান রাখার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করা হবে।

এই মেলার লক্ষ্য হচ্ছে হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তোলা। নতুন উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যিকভাবে তাদের পণ্য বাজারজাত করতে সহযোগিতা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রি এবং উদ্যোক্তাদের সেতুবন্ধন করে দিবে এই এক্সপো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানকে বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর।

সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ৫ লাখ দর্শনার্থী সরাসরি এবং ১০ লাখ ভিউয়ারস এই প্রদর্শনী অনলাইনে উপভোগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট ‘লি’। ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯ এর প্লাটিনাম স্পন্সর ওয়ালটন। গোল্ড স্পন্সর ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স। যৌথভাবে সিলভার স্পন্সর সিম্ফনি এবং ডিবিবিএল। প্রদর্শনীর ৪জি এলটিই পার্টনার বাংলালায়ন। এডিএন টেলিকম, বাংলাদেশ টেকনো সিটি লিমিটেড, ডাহুয়া, ডেল,  এইচপি, হিকভিশন, ইউসিসি এই এক্সপোর পার্টনার। গেমিং পার্টনার হিসেবে রয়েছে গিগাবাইট। ই-কর্মাস পার্টনার প্রিয়শপ ডটকম।

দেশের সনামধন্য ২১ টি বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯ এর নলেজ পার্টনার। এক্সপোকে সফল করার জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), সিটিও ফোরাম, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ ওম্যান ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।


ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়