ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ডিমেনশিয়া জিন করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি দ্বিগুণ করে

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২২, ২৬ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ডিমেনশিয়া জিন করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি দ্বিগুণ করে

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগের উচ্চ ঝুঁকির ব্যক্তিদের জেনেটিক মিউটেশনের কারণে করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হতে পারে। এ আশঙ্কা তথ্য নতুন একটি গবেষণায় করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন, ইউরোপীয় লোকজনের মধ্যে বংশগতভাবে পাওয়া অ্যাপো ই৪ নামের একটি ত্রুটিপূর্ণ জিন, কোভিড-১৯ রোগের উচ্চ ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত ছিল। এমনকি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত না হওয়া সত্ত্বেও মারাত্মক অসুস্থতার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

জার্নাল অব জেরন্টোলজি: মেডিক্যাল সায়েন্স-এ প্রকাশিত এই গবেষণা রিপোর্টে, কিছু মানুষ জেনেটিকভাবে কোভিড-১৯ রোগে আরো মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

প্রধান গবেষক যুক্তরাজ্যের এক্সেটর ইউনিভার্সিটির এপিডেমোলোজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ডেভিড মেলজার বলেন, ‘বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমেনশিয়া রোগীদের কোভিড-১৯ রোগে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। আমাদের গবেষণায় পাওয়া গেছে, এই উচ্চ ঝুঁকি কেবল স্মৃতিভ্রংশের প্রভাব, বার্ধক্য, শারীরিক দুর্বলতা বা কেয়ার হোমে ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নয়। গুরুতর অসুস্থতা আংশিকভাবে অন্তর্নিহিত জিনগত পরিবর্তনের কারণে হতে পারে, যা মানুষকে কোভিড-১৯ এবং ডিমেনশিয়া উভয়ের জন্য ঝুঁকিতে ফেলেছে।’

গবেষকরা যুক্তরাজ্যের বায়োব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। এই বায়োব্যাংকে ৫ লাখ লোকের স্বাস্থ্য ও জিনগত তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যাদের শরীরে অ্যাপো ই৪ জিনের ত্রুটিপূর্ণ দুটি অনুলিপি রয়েছে তাদের কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার দ্বিগুণ ঝুঁকি রয়েছে, যাদের মধ্যে এই জিনগত পরিবর্তন নেই তাদের তুলনায়।

ইউরোপীয়দের বংশগতভাবে মধ্যে প্রতি ৩৬ জনের মধ্যে ১ জনের শরীরে এই জিনটির দুটি ত্রুটিযুক্ত অনুলিপি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই গবেষণার সহ-লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ডা. চিয়া-লিঙ্গ কুও বলেন, ‘এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ ফলাফল। কারণ এখন আমরা সম্ভবত চিহ্নিত করতে সক্ষম হতে পারি যে, এই ত্রুটিযুক্ত জিনটি কোভিড-১৯ এর জন্য কীভাবে দুর্বলতা সৃষ্টি করে। এটি চিকিত্সার জন্য নতুন ধারণা নিয়ে আসতে পারে।’

তবে যুক্তরাজ্যের আলঝেইমারস গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর ডা. ক্যারল রাউটলেজি এ ধরনের ফলাফলগুলো ব্যাখ্যা করা সময় সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ করেছেন।

এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না রাউটলেজি। তিনি বলেন, আমরা এখনও জানি না যে, আলঝাইমারসের ঝুঁকির এই জিন কীভাবে মানুষকে ভাইরাসের প্রতি আরো সংবেদনশীল করে তোলো। গবেষকদের একটি বড় দল হওয়া সত্ত্বেও এ গবেষণায় ঝুঁকির জিনযুক্ত মাত্র ৩৭ জন ব্যক্তির করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। তাই এই অল্প মানুষের সংখ্যা থেকে আমরা যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছি, সে সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই সাবধান হওয়া উচিত। এ নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়