ঢাকা     রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৯ ১৪৩১

কাঠের তৈরি উপগ্রহ!

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ১৬ জুন ২০২১   আপডেট: ১৭:২৬, ১৬ জুন ২০২১
কাঠের তৈরি উপগ্রহ!

বিশ্বের প্রথম ‘কাঠের উপগ্রহ’ এ বছরই উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পৃথিবীর কক্ষপথে এই স্যাটেলাইট পাঠাবে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের নভেম্বরে রকেট ল্যাবের তৈরি ইলেকট্রন রকেটের মাধ্যমে এটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এটাই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর প্রথম কাঠের তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহ। নাম ওয়াইসা উডস্যাট। 

কাঠের আসবাব তৈরিতে ব্যবহৃত প্লাইউড দিয়ে এই স্যাটেলাইটের কাঠামো তৈরি করেছে ফিনল্যান্ড। ইউরোপিয়ান স্পেস এজিন্সির এই মিশনের লক্ষ্য হলো, মহকাশে কাঠের তৈরি স্যাটেলাইটের সক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা। তাই পরীক্ষামূলকভাবে এই স্যাটেলাইট পাঠাবে মহাকাশ সংস্থাটি।

স্পেস ডটকমের খবরে বলা হয়েছে, মাত্র ১০ সেন্টিমিটার ঘনত্ব ও ১ কেজি ওজনের খুদে এই স্যাটেলাইটটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ কিমি উপরে অবস্থান করবে। পোলার সান-সিংক্রোনাস অঞ্চলে এটি স্থাপন করা হবে। কারণ সূর্যের অশোধিত রশ্মি এবং অন্যান্য মহাজাগতিক রশ্মির প্রভাবে প্লাইউডের কোনোরকম ক্ষতি হয় কিনা, সেটাই দেখতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।

আরো পড়ুন:

কাঠের তৈরি স্যাটেলাইটটি যেন মহাকাশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, তার জন্য নানা ধরনের পরীক্ষামূলক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বায়ুশূন্য অঞ্চলে প্লাইউড যেন ফুলে না ওঠে, সেজন্য তৈরি করার সময় প্লাইউডগুলোকে দীর্ঘদিন ভ্যাকুয়ামের মধ্যে রেখে অক্সিজেনশূন্য করে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে অত্যন্ত পাতলা অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের আস্তরণ লাগানো হয়েছে। কাঠের কাঠামো হলেও এই স্যাটেলাইটের দুটি অংশ ধাতুর তৈরি। প্লাইউডের দেয়ালগুলো ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অ্যালুমিনিয়ামের রেল। এছাড়া থাকছে একটি সেলফি স্টিক। যার সাহায্যে ছবি তুলে মহাশূন্যে কাঠের উপরে কী প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, তা জানা যাবে।

স্পেস জাঙ্ক বা মহাকাশ আবর্জনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। তাই ধারণা করা হচ্ছে, কাঠের উপগ্রহের মাধ্যমে হয়তো সেই সমস্যার সমাধানের রাস্তা খুঁজে পাওয়া যাবে।

মহাকাশে বিভিন্ন দেশ নিয়মিত উপগ্রহ পাঠিয়ে যাওয়ার কারণে স্পেস জাঙ্ক বা মহাকাশ আবর্জনা ক্রমবর্ধমান সমস্যা হয়ে উঠেছে। কমিউনিকেশন, টেলিভিশন, নেভিগেশন, ওয়েদার ফোরকাস্টিং এর কাজে পৃথিবীর কক্ষপথে সক্রিয় উপগ্রহ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে পরিত্যক্ত উপগ্রহও। এছাড়াও মহাকাশে রয়েছে বিভিন্ন রকেটের নানা অংশ এবং অন্যান্য আবর্জনা যা অসংখ্য মহাকাশ অভিযানের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মহাকাশে ভাসমান এসব আবর্জনা ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সুতরাং কাঠের তৈরি উপগ্রহ নিয়ে এই পরীক্ষা সফল হয়, তাহলে আগামীদিনে মহাজাগতিক আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় রীতিমতো মাইলস্টোন তৈরি করবেন বিজ্ঞানীরা।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়