মাতৃত্বকালীন ভাতা পরিশোধ হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে
বিশেষ প্রতিবেদক : এখন থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীদের কাছে সরকারি কোষাগার থেকে সরাসরি ভাতার অর্থ চলে যাবে। এ বিষয়ে ‘গভর্নমেন্ট টু পারসন (জি২পি)’ নামের একটি ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করেছ অর্থ মন্ত্রণালয়। এই পদ্ধতিতে ভাতাভোগীরা তাদের ইচ্ছামতো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ভাতার অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিটির উদ্বোধন করেন।
অর্থ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকতারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে এ কর্মসূচির অধীনে সাত উপজেলায় মাতৃত্বকালীন ভাতা পরিশোধ করা হবে। উপজেলাগুলো হচ্ছে- সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ), শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ), সাভার (ঢাকা), টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা), কালিয়াকৈর (গাজীপুর) এবং ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)।
অর্থমন্ত্রী অনলাইনের মাধ্যমে এই সাত উপজেলার ৮ হাজার ৮১১ জন ভাতাভোগীকে জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসের ১৫০০ টাকা করে পরিশোধ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ভাতাভোগীরা তাদের ব্যাংক কিংবা বিকাশ ও রকেট অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়েছেন বলে জানানো হয়।
এ ডিজিটাল পদ্ধতি উদ্বোধন করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমার পেনশনের টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। এখন আর সে অবস্থা নেই। সুবিধাভোগীরা এখন অতি সহজেই তাদের পাওনা অর্থ তুলে নিতে পারছেন। এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দীর্ঘদিনের অনেক সমস্যা অতি সহজে সমাধান হচ্ছে। নতুন পদ্ধতি পর্যায়ক্রমে সামাজিক বেষ্টনী কর্মসূচির আওতাভূক্ত সবাই পাবেন। ফলে তাদের আর কোনো সমস্যা হবে না।
বর্তমান ব্যবস্থায় সরকারকে কয়েকটি নির্দিষ্ট ব্যাংকে ভাতার সমুদয় অর্থ ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পাঠাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে ভাতাভোগীদের অর্থ পরিশোধে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ফলে সরকারি অর্থ দীর্ঘকাল ব্যাংকে পড়ে থাকে যা সরকারের ক্যাশ ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। নতুন ব্যবস্থায় সরকারি কোষাগার থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী তাৎক্ষণিকভাবে সুবিধাভোগীদের কাছে পাঠানোর ফলে সরকারের ক্যাশ ব্যবস্থাপনার এ অসুবিধা দূর হবে। নতুন পদ্ধতিতে সুবিধাভোগীদের সম্পর্কে ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অর্থ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এমআইএস-এ সংরক্ষিত থাকবে, যার ভিত্তিতে তাদের ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা যাচাই করে পরিশোধ করা হবে। ফলে বিভিন্ন অনিয়ম পরিহার করে প্রকৃত ভাতাভোগীর কাছে ভাতা দ্রুত পাঠানো সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অর্থ বিভাগের এসপিএফএমএমপি প্রকল্প এই নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তনে সহায়তা করেছে। যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহযোগী ডিএফআইডি এবং অস্ট্রেলিয়ার ডিএফএটি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ মে ২০১৮/হাসনাত/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন