ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

গোল মিসের মহড়ায় হারল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ১০ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গোল মিসের মহড়ায় হারল বাংলাদেশ

কাতার এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন। ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক। ২০২২ সালে তারা কেবল আয়োজক হিসেবে খেলতে চায় না। তারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চায় তারাও ভালো ফুটবল খেলতে পারে। সেভাবেই গেল কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করছে ফুটবলের পেছনে। বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন লিগে খেলা খেলোয়াড়দের দলে নিয়েছে। যারা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও ইউরোপের বিভিন্ন লিগে খেলে। তাদের বিপক্ষে খুব বেশি সুযোগ পাওয়ার কথা না।

কিন্তু বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সুযোগ তৈরি করেছে অর্ধডজন। কিন্তু তার কোনোটিই জালের নাগাল পায়নি। ফলে মন জয় করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। জামাল ভুঁইয়া-জীবন-ইয়াসিন খানদের পারফরম্যান্স দেখে ২৩ হাজার দর্শকের গাটের টাকা উসুল হয়েছে। অবশ্য হতাশা ছুঁয়েছে খেলোয়াড়দের। তাইতো ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ড্রেসিং রুমে গিয়ে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেছেন। তারা যে ভালো খেলেছে সেটার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

অবশ্যই বাহবা পাওয়ার মতো পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে জামালবাহিনী। ম্যাচের প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ছিল আরো আগ্রাসী। একের পর এক সুযোগ তৈরি করে সেগুলো হেলায় নষ্ট করেছে। ফলে গোলটিই কেবল পাওয়া হয়নি তাদের।

অথচ ৫-১-৩-১ ফরমেশনে খেলতে নেমে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল জিমি ডে’র শিষ্যরা। এ সময় নাবীব নেওয়াজ জীবন বামদিক দিয়ে পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন। ডি বক্সের মধ্যে তার বাড়িয়ে দেওয়া বল কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছায়নি। পঞ্চম মিনিটে থ্রোতে আবারো আক্রমণে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই একই চিত্র।

অষ্টম মিনিটে ডানদিক দিয়ে বল নিয়ে উঠেছিলেন সাদ উদ্দিন। গোলরক্ষক একাও পেয়েছিলেন। কিন্তু সাদ কাকে পাস দিয়েছেন তিনি নিজেই জানেন না। কর্নারের বিনিময়ে আক্রমণ নসাৎ করে দেয় কাতার।

কর্নার থেকে ডি বক্সের মধ্যে গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সামনে ঢেলে দেয়। বল পায় জামাল ভুঁইয়া। দারুণ সুযোগ ছিল। লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন। ম্যাচ শেষে জামাল জানিয়েছেন মাঠ ভেজা থাকায় বলের মুভমেন্ট বুঝতে পারেননি। কিন্তু এমন শট হয়েছিল।

১৪ মিনিটে ডি বক্সের সামনে ফ্রি কিক পায় কাতার। বাসাম হুশাম আল রাইর নেওয়া শট গায়ে লেগে ফিরে আসে। ২৫ মিনিটে সালেমের ক্রস থেকে ডি বক্সের মধ্যে গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের মোহাম্মদ ইব্রাহিম পা ছোঁয়াতে পারলেই গোল হতে পারত। কিন্তু সেটা তিনি করতে পারেননি।

২৮ মিনিটে প্রথম গোল হজম করে বাংলাদেশ। এ সময় ডি বক্সের মধ্যে আনমার্ক ইউসুফ আব্দুর ইসাগ বল পেয়ে পরাস্ত করেন আশরাফুল ইসলাম রানাকে। তার গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় কাতার।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলোয়াড় বদল করায় বাংলাদেশের আক্রমণের ধার বাড়ে। একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে। রীতিমতো কাতারকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। এ সময় জামাল ভুইয়ার নেওয়া একটি শট লাইনের উপর থেকে সেভ করেন কাতারের গোলরক্ষক সাদ আল শেব। ৭০ মিনিটের মাথায় রায়হান হাসানের লম্বা থ্রো ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কাতারের গোলরক্ষক সাদ আল শেব। পরের মিনিটেই দুর্বল শটে গোলের সুযোগ মিস করেন ইয়াসিন খান।

৭৪ মিনিটে জামাল ভুঁইয়ার নেওয়া শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কাতারের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়। পরের মিনিটেই আবারো সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবার গোলরক্ষকের হাতে জমা হয় বল। কাতারও বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোনো গোল হয়নি। ৯০+১ মিনিটে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জটলার মধ্যে গোল করেন মিডফিল্ডার করিম বউদিয়াফ। তাতে ২-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

তবে এই ম্যাচের পারফরম্যান্স বাংলাদেশের সমর্থকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এই ম্যাচে জিমি ডে’র শিষ্যরা যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে সেটা ভারতের বিপক্ষে করতে পারলে হয়তো ৩৪ বছর পর সল্টলেকে খেলতে গিয়ে ভালো ফল নিয়ে আসতে পারবে।


ঢাকা/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়