ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘মাশরাফিকে দেশের সেরা বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া উচিত’

সিলেট থেকে ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মাশরাফিকে দেশের সেরা বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া উচিত’

পাসপোর্টের পাতায় নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের ভিসা সব থেকে বেশি থাকবে ব্রেন্ডন টেলরের! 

ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বহুবার ঢাকায় এসেছেন জিম্বাবুয়ের এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। কখনো জাতীয় দলের হয়ে। আবার কখনো ঢাকা লিগ বা বিপিএল খেলতে। সেই তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে আরেকটি অধ্যায়। মুজিববর্ষে আয়োজিত বিশ্ব একাদশ ও এশিয়া অলস্টার্সের মধ্যকার দুই টি-টোয়েন্টির বিশ্ব একাদশে ডাক পেয়েছেন টেলর।  

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাইজিংবিডি ডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কথা বললেন মুজিববর্ষের আয়োজন নিয়ে। সেখানে উঠে আসে ঢাকা লিগ, মাশরাফি ও জাতীয় দল প্রসঙ্গ। 

সাদা বলে প্রস্তুতি কেমন?

ব্রেন্ডন টেলর: সাদা বলের ক্রিকেটে প্রথম অনুশীলন হলো আজ। এখানে দারুণ সুযোগ সুবিধা। সিলেটে আবার আসতে পেরে খুশি লাগছে। এখানে আমাদের ভালো ও মজার স্মৃতি রয়েছে। আমাদের ঢাকা টেস্ট ভালো যায়নি। ব্যর্থতা ভুলে আমরা এখন সাদা বলের ক্রিকেটে মনোযোগী। অবশ্য দ্রুত পালাবদল হওয়া কঠিন।

সাকিব আল হাসান নেই। অবশ্যই বড় সুযোগ রয়েছে আপনাদের?

ব্রেন্ডন টেলর: বাংলাদেশের অনেক খেলোয়াড় আছে পাইপলাইনে। কিন্তু সাকিবের জায়গা কেউ নিতে পারবে না। বছরের পর বছর পারফর্ম করে আসছে। আমি নিশ্চিত সে দারুণভাবে ফিরে আসবে। তার অনুপস্থিতি অন্যদের জন্য সুযোগ। যেমন টেস্টে নাঈমের মতো প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় ভালো করেছে। তাইজুলও বেশ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। মেহেদীও তরুণ। তারা অবশ্যই সামনে স্পিন আক্রমণকে নেতৃত্ব দেবে।

বিশ্ব একাদশে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। কতোটা উচ্ছ্বসিত?

ব্রেন্ডন টেলর: আমি সত্যিই বিশ্ব একাদশে সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত। বাংলাদেশের এতো বড় উদযাপনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো এবং এর অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা সেরা ক্রিকেটাররা এখানে খেলবে। এ আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে অবশ্যই সম্মানিতবোধ করছি।

এর আগে এতো বড় আয়োজনে খেলা হয়েছে?

ব্রেন্ডন টেলর: না, এর আগে এরকম বড় উদযাপনে আমার খেলা হয়নি। এজন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি এবং আবার বলছি খুবই সম্মানিত বোধ করছি। এখান থেকে ফিরে আবার কিছুদিন পর এখানেই ফিরে আসতে হবে আমাকে।

অবশ্যই এটা ভালো স্মৃতি হয়ে থাকবে?

ব্রেন্ডন টেলর: তা তো বটেই। এটা আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ। নিজেকে অবশ্যই ভাগ্যবান মনে করছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে দুটি ম্যাচ আয়োজন করছে বিসিবি। আপনি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কতটুকু জানেন?

ব্রেন্ডন টেলর: তিনি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ জাতীয় নেতা। বাংলাদশের জন্য যা করেছেন তা অতুলনীয়। তাকে সম্মান জানাতে আমরা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি সেই প্রচেষ্টার অংশ। আমি বিশ্বাস করি আমরা সঠিক পথে আছি।

আপনি ঢাকা লিগ খেলেছেন একাধিকবার। এবার ঢাকা লিগে কোনো বিদেশি ক্রিকেটারকে রাখা হবে না। একজন নিয়মিত ক্রিকেটার হিসেবে কি আপনি হতাশ?

ব্রেন্ডন টেলর: আমি এ বিষয়টি বলতে পারছি না। তবে বাংলাদেশে এসে বহুবার খেলার সুযোগ পেয়েছি আমরা। বিপিএল, ডিপিএল খেলেছি বহুবার। আমি বাংলাদেশে খেলা পছন্দ করি। এখানকার কন্ডিশনে খাপ খাইয়ে নিয়েছি ভালোভাবে। তবে ডিপিএলের বিষয়টি সম্পর্কে আমি মোটেও অবগত নই। তবে এটা স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য সুযোগও বটে। অনেক সময় বিদেশি ক্রিকেটাররা এসে জায়গা নেয়। এবার শুধু স্থানীয়রাই খেলবে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে ঢাকা লিগের তুলনা করতে যদি বলা হয়…

ব্রেন্ডন টেলর: ঢাকা লিগ সব সময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। স্পিনারদের বিপক্ষে খেলা সব সময়ই কঠিন। খেলোয়াড় হিসেবে আপনি কতটুকু সামর্থ্যবান সেটা পরীক্ষা করা যায় লিগে। পাশাপাশি এখান থেকে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটাররাও বেরিয়েছে। বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে। অবশ্যই তরুণ ক্রিকেটারদের ভবিষ্যত বেশ উজ্জ্বল।

আপনি অনেক রান করেছেন বাংলাদেশে। নিশ্চয়ই ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণের কারণে আপনার অভিজ্ঞতা ও খেলার মান ভালো হয়েছে…

ব্রেন্ডন টেলর: এটা অবশ্যই। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলাদেশের স্পিনাররা অনেক পরিশ্রম করে। তাদের বিপক্ষে খেলে অবশ্যই উন্নতি হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ঘরের মাঠে তাদের স্পিন অ্যাটাক বিশ্বের অন্যতম সেরা। তাদের সামর্থ্য এবং স্কিল অনেক চ্যালেঞ্জিং।

শোনা যাচ্ছে মাশরাফি তার অধিনায়কত্বের শেষ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে এখানে। তার ক্যারিয়ারকে কিভাবে দেখছেন?

ব্রেন্ডন টেলর: সে যেভাবে তার ক্যারিয়ার সামলেছে… ইনজুরির পর ইনজুরি। হাঁটুতে অস্ত্রপচার। এগুলোর পর যেভাবে ক্যারিয়ার গড়েছে তা বেশি কঠিন ছিল। আমি মনে করি তার বিদায় হওয়া উচিত অনেক বড় আয়োজনে। তার এটা প্রাপ্য। তাকে দেশের সেরা বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া উচিত।

মাশরাফিকে এক ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়ে হারারেতে একবার ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। মনে আছে সেই ম্যাচের কথা…

ব্রেন্ডন টেলর: এটা তো অনেক বছর আগের কথা। প্রায় ১৪ বছর আগের স্মৃতি। আমরা এখন অনেক ভালো বন্ধু। হয়তো শুরুতে এটা নিয়ে দুয়েকবার কথাও হয়েছে আমাদের। কিন্তু এখন তো ওটা মনেও নেই। অনেক সময় সে আমাকে আউট করেছে। আবার অনেক সময় আমি সফল হয়েছি। সে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বী বোলার।


সিলেট/ইয়াসিন/কামরুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়