ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চার দেয়াল থেকে বেরিয়ে নীল আকাশে মুক্ত বাতাসের খোঁজে

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:৩৪, ৪ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চার দেয়াল থেকে বেরিয়ে নীল আকাশে মুক্ত বাতাসের খোঁজে

স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছেন সাদমান ইসলাম ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ইনজুরি কাটিয়ে ওঠার লড়াইয়ে পাশ মার্ক পেয়েছেন তো বটেই, সঙ্গে দিয়েছেন আরেকটি সুসংবাদ।

হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা দুই ক্রিকেটার ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। হাতের অস্ত্রোপচার করাতে জাতীয় দলের টেস্ট ওপেনার সাদমান গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। যুব দলের পেসার মৃত্যুঞ্জয়ের কাঁধে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে সেখানেই। তাদের সঙ্গে ছিলেন বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। দেশে ফিরে তিনজনই ছিলেন ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে। করোনাভাইরাসের সতর্কতায় পরিবার থেকে তিনজই ছিলেন বিচ্ছিন্ন।

হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে এখন দুই ক্রিকেটার গৃহবন্দি। অপেক্ষায় আছেন নীল আকাশ দেখার। খোঁজে মুক্ত বাতাসের। তাঁরা জানেন, চার দেয়ালের ভেতরের অক্সিজেন আর মুক্ত বাতাসের অক্সিজেনে কতোটা তফাৎ।

তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে দুজনই বেশ খুশি। ‘খাঁচা’ থেকে বের হওয়ার আনন্দ সাদমানের মনে, ‘মুক্ত হলাম। বুক থেকে পাথর নামলো। এখন তো ঘরেই যাচ্ছি। ঘোরাফেরা করতে পারছি।’ প্রায় একই অনুভূতি মৃত্যুঞ্জয়ের, ‘সত্যি বলতে এখন কিছুটা মুক্ত মুক্ত লাগছে। এখন তো আর একটা রুমে বন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে না। বাসার সবখানেই যেতে পারছি। বন্ধুদের বাসায় এসে একটু আড্ডা দিতে পারছি।’

সাদমানের জন্য ১৪ দিন ছিল প্রায় ১৪ মাস! মনে তাঁর একটাই কথা, ‘ঘড়ির কাঁটা কি ঘোরে না! এভাবে আর কতো দিন…একটা রুমে টানা ১৪ দিন। নিজের ওপর নিজের বিরক্ত চলে আসছিল। মুভি দেখেছি, বই পড়েছি, গেম খেলেছি। আমার এক হাত তো এমনি ব্যবহার হয় না, স্লিং করা। এখন একটু হাঁটা-চলা করতে পারছি বলে ভালো লাগছে।’

মৃত্যুঞ্জয়ের অনুভূতিগুলো একই রকম, ‘আমি এখন সাতক্ষীরায়। কাউকে জানাইনি যে আমি বাড়িতে এসেছি। সতর্ক ছিলাম। পুরোনো খেলা, নিজেদের বিশ্বকাপের খেলা দেখে সময় কেটেছে। মুভি দেখেছি বেশ কয়েকটি। এখন তো ইউটিউবে প্রায় সব পাওয়া যায়। সময় কাটানো কঠিন ছিল।’

ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার কষ্ট পোড়াচ্ছে মৃত্যুঞ্জয়কে, ‘একটু বিরক্ত লাগছে। কারণ, ক্রিকেটার তো, ক্রিকেট না খেলতে পারলে শান্তি হয় না। এমনিতেও আমি দীর্ঘদিন বাইরে। একটু যদি বল-ব্যাট হাতে নিতে না পারি, খুব খারাপ লাগে।’

হোম কোয়ারেন্টাইনে নিজেকে নিয়ে বাড়তি সতর্ক ছিলেন দুজনই। যে সময় এখন কাটাবেন সেটা আরও কঠিন। প্রতিবেশী কিংবা বাইরে কারো থেকে করোনা সংক্রমণের ভয় আছে। ‘হ্যাঁ সামনের সময়টা আরও কঠিন। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’ –বলেছেন সাদমান। মৃত্যুঞ্জয় ঠিক করে রেখেছেন, ‘আমি এখন আর বের-ই হবো না।’

সাদমানের হাত ড্রেসিং করানোর কথা ছিল গত সপ্তাহেই। কিন্তু সুযোগ পাননি। দুই-একদিনের মধ্যে স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে ড্রেসিং করানোর পরিকল্পনা তাঁর। মৃত্যুঞ্জয়ের অস্ত্রোপচার হয়েছে ২৩ দিন হলো।  ৬ দিন পর স্লিং খুলে ফেলবেন তিনি। এরপর হাল্কা জগিংয়ে শুরু হবে তাঁর পূনর্বাসন প্রক্রিয়া।

দীর্ঘ বিরতিতে ইনজুরি থেকে ফিরে আসার ভালো সুযোগ পেয়েছেন দুজনই। আপাতত মাঠে ফেরা নিয়ে কিছু ভাবছেন না ‘একঘর’ থেকে বের হওয়া সাদমান ও মৃত্যুঞ্জয়।  ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে উঠার পরই ভবিষ্যতের চিন্তা।

 

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়