ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনায় অভাবে পড়ে চাকরি খুঁজছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ২৯ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনায় অভাবে পড়ে চাকরি খুঁজছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক

শেখর নায়েক, ভারতীয় প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। নামের পাশে আছে ২০১২ ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানোর খেতাব। সে সুবাদে ২০১৭ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মানজনক পুরষ্কার পদ্মশ্রীও জিতেছেন তিনি।

এত সম্মান অর্জন করেও ৩৩ বছর বয়সী নায়েক এখন আছেন অর্থকষ্টে। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের মতো সুযোগ সুবিধা নেই প্রতিবন্ধী দলের জন্য। আর যা বিপাকে ফেলেছে তাকে। করোনার এই দুঃসময়ে আর্থিক অনটনে পড়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক। একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করতেন। কিন্তু করোনায় গত দুই মাস ধরে সেখানেও বেতন বন্ধ। ফলে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার মতো অর্থও নেই তাঁর কাছে, পরিবার চালানোও দায় হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় একটা নিরাপদ সরকারি চাকরির আশা করছেন এই প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিড ডেকে নিজের বর্তমান দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমার বেতন ২৫ হাজার, যার মধ্যে ১২ হাজার রুপিই দিতে হয় বাড়ি ভাড়া। কোন না কোনভাবে আমি এটা ব্যবস্থা করে এসেছি। কিন্তু লকডাউনের কারণে আমার বেতন আটকে গেছে এবং দুই মাস ধরে বাড়ি ভাড়াও দিতে পারছি না। আমার পরিবার এখন খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’

এতদিন নিজের কাছে জমানো টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া ও পরিবারের খরচ চালিয়েছেন নায়েক। যে অর্থের বেশিরভাগ এসেছে ক্রিকেট খেলে। ২০১২ বিশ্বকাপে দলকে শিরোপা জেতানোর পথে ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসার সর্বোচ্চ ২২ উইকেট নিয়েছিলেন। তখন কর্ণাটকা সরকার তাকে ৩ লাখ রুপি অর্থ পুরস্কার দিয়েছিল। আর এই টাকার পুরোটাই বাড়ি ভাড়া হিসেবে জমিয়ে রেখেছিলেন তিনি। যা শেষ প্রায়। এছাড়াও ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৬৫০ রান ও ১৭ উইকেট নিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেন অধিনায়ক নায়েক। সেবার তিনি পান ৭ লাখ রুপি। এর মধ্য থেকে ২ লাখ ১০ হাজার রুপি তিনি দান করেন ভারতের অন্ধ ক্রিকেটারদের সংগঠনে। আর ২০১৭ সালে যখন পদ্মশ্রী পুরস্কার জেতেন নায়েক, তখনও কেন্দ্রীয় সরকার এবং কর্ণাটকা রাজ্যসভা থেকে ১ লাখ করে মোট ২ লাখ রুপি পুরস্কার পান তিনি। যার আংশিক তিনি ব্যাংকে জমা রেখেছেন দুই মেয়ের জন্য আর বাকিটা খরচ করেছেন তাদের শিক্ষার কাজে।

বিভিন্ন সময় এই অর্থ সাহায্য তাকে উপকৃত করেছে বটে, তবে একটা চাকরির জন্য বছরের পর বছর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেও হতাশ হতে হয়েছে তাকে। যদিও এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজুর কাছে এই আবেদন করেছেন নায়েক। তিনি বলেন, ‘গত ৮ বছরে আমি কর্ণাটকার বিভিন্ন মূখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি, তাদের কাছে একটি সরকারি চাকরি অনুরোধ করেছি। গত ডিসেম্বরে আমি ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে বলেছি, আমার আসলে পদ্মশ্রী পুরস্কারের চেয়ে একটি চাকরি বেশি জরুরি। কারণ আমার স্ত্রীও অন্ধ।’

সবশেষে নায়েক আরও যোগ করেন, ‘অন্ধ ক্রিকেটাররাও পুরস্কৃত হচ্ছে, এটা অবশ্যই ভাল দিক। তবে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তাদের যেন নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য ভাল একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’

 

ঢাকা/কামরুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়