ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মুশফিকের কাছে পাঁচ প্রশ্ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ৪ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
মুশফিকের কাছে পাঁচ প্রশ্ন

দাতব্য সংস্থা ‘এখোনি’- এর ঢাকার গল্পের দ্বিতীয় পর্বে মুখোমুখি হয়েছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।

‘এখোনি’ মহামারি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পেশার মানুষের যাপিত জীবন তুলে আনছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যানকে ‘এখোনি’ পাঁচটি প্রশ্ন করেছিল। মুশফিক সেসব উত্তর দিয়েছেন দারুণভাবে।

প্রশ্ন: আপনি এই মহামারির সময়ে কী করছেন এবং সবচেয়ে বেশি কী মিস করছেন?

মুশফিকুর রহিম: প্রথমত, যে কারোর জন্যই দীর্ঘসময়ের জন্য ঘরের অবস্থান করা হতাশার এবং বিরক্তিকর। তবে আমি পরিবারের সাথে দারুণ সময় কাটিয়েছি। সত্যি বলতে, ক্রিকেটার হিসেবে আমরা খুব অল্প সময় ছুটি পাই। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১৫ বছরে আমি পরিবারের সঙ্গে এতোটা সময় কাটাতে পারিনি। আলহামদুলিল্লাহ আমি এ বিরতি উপভোগ করছি এবং যারা এতে আক্রান্ত ও মারা গিয়েছে তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি এ মুহূর্তে আমার ক্রিকেটীয় কর্মকান্ড মিস করছি। আমি বাইরে গিয়ে অনুশীলন করতে পারছি না।

প্রশ্ন: আপনার সতীর্থ মাশরাফি বিন মুর্তজার সম্প্রতি করোনা পজিটিভ হয়েছেন। খবরটা যখন শুনেছেন তখন কেমন অনুভব করেছিলেন?

মুশফিকুর রহিম: খুবই বেদনাদায়ক খবর ছিল। যেভাবে ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে আমাদের দেশে, মনে হচ্ছে আমরা অধিকাংশ ভাইরাসে আক্রান্ত। আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষ করোনাভাইরাস নিয়ে ততটা সুশিক্ষিত নয় এবং পরিস্থিতিটা নিয়ে সতর্কও নয়। বিশেষ করে বলবো, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে একেবারেই সচেতন নয়। মাশরাফি ভাই লিজেন্ড। ইনশাআল্লাহ সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। তার খবরটা শোনার পর থেকে আমি আরও বেশি সতর্ক হয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি সরকারের পক্ষে দেশের সকলের খেয়াল রাখা কঠিন। ভ্যাসকিন আবিস্কার না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শুধু আমাদেরই নয়, আমাদের পরিবারকেও।

প্রশ্ন: খেলোয়াড় হিসেবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সঙ্গে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন?

মুশফিকুর রহিম: খেলোয়াড় হিসেবে আমার মনোযোগ এবং ধৈর্য ধরে রাখা খুব কঠিন। সত্যি বলতে আমরা কেউই বলতে পারছি না কখন এবং কিভাবে এ মহামারি থেকে রক্ষা পাবো। সারাক্ষণ ঘরে বসে থাকা চ্যালেঞ্জিং।  আমি আমার ফিটনেস লেভেল ঠিক রাখছি। পাশাপাশি ভালো একটি খাদ্যাভাস গড়ে তুলেছি এবং নিয়মিত হাত পরিস্কার করছি। ইমার্জেন্সি কোনো কাজে বাইরে গেলে আমি মাস্ক পড়ছি এবং হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করছি। বাইরে থেকে ফিরে আমি দ্রুত আমার কাপড়-চোপড় ধুয়ে দিচ্ছি এবং সাথে সাথে গোসল করে নিচ্ছি। খেলোয়াড় এবং একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমার সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। সরকারের সাথে আমি সতর্কতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি... এইতো।

প্রশ্ন: কোভিড আপনার কাজে কতটা বাধা সৃষ্টি করেছে?

মুশফিকুর রহিম: কোভিড-১৯ শুধু আমার কাজে বাধা সৃষ্টি করেনি...পুরো বিশ্বকে বাধা দিয়েছে। অ্যাথলেট হিসেবে আমি বাইরে যেতে পারছি না। ঘরের ভেতরে থেকে নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে আমি সবধরণের শারীরিক অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমি মাঠেও যেতে পারছি না। আমি মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তে যেতে পারছি না। পাশাপাশি নিজের আত্মীয়দের বাসায়ও যেতে পারছি না, শপিংয়েও যেতে পারছি না...

প্রশ্ন: কঠিন এ পরিস্থিতিতে আপনি আপনার ভক্তদের উদ্দেশে কি বলবেন?

মুশফিকুর রহিম: আমি মনে করি, আমরা এ ধরণের কঠিন পরিস্থিতিতে এর আগে কখনো পড়িনি। এজন্য আমরা জানি না এ ধরণের পরিস্থিতি কিভাবে সামলে উঠতে হয়। আমি যেটা বলতে চাই, এ মুহূর্তে আমাদেরকে যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে। যদি আমরা বাইরে যাই আমাদেরকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মহামারি এ সময়ে গরীবদের পাশে দাঁড়াতে হবে। অতীতের থেকেও বেশি প্রার্থণা করতে হবে, ক্ষমা চাইতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থণা করতে হবে। তিনিই আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে বাঁচাতে পারেন। 


ঢাকা/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়