৭ উইকেটের হার, সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
বাংলাদেশ: ২২৭/১০ (৪৫.৫ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৩০/৩ (৩৬.৫ ওভার)
ফল: উইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী।
দ্বিতীয় ম্যাচে পাত্তাই পেলো না বাংলাদেশ। উড়ে গেলো ৭ উইকেটে। ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ এখন শুধু নিয়মরক্ষার। শরিফুলকে ২ ছক্কা মেরে ৭৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেন রাদারফোর্ড। ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ১৭ রান করে মাঠ ছাড়েন শাই হোপ। সর্বোচ্চ ৮২ রান করেন কিং। ৪৯ করেন লুইস আর ৪৫ রানে আউট হন কার্টি। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন রানা, রিশাদ ও আফিফ। ২২ রানে ৪ উইকেট ম্যাচ সেরা হন জেডেন সিলস।
হারের মুখে উইকেট পেলেন আফিফ
জয় থেকে উইন্ডিজ যখন মাত্র ৩১ রান থেকে দূরে তখন উইকেটের দেখা পেলেন আফিফ। দাপুটে ব্যাটিং করতে থাকা কার্টিকে ফেরান ৪৫ রানে। ৪৭ বলে ৪টি চারের মারে এই রান করেন তিনি। ক্রিজে হোপের সঙ্গী রাদারফোর্ড। পরের ওভারে রিশাদকে ছক্কা হাঁকিয়ে ৩৪.১ ওভারে দুইশ রান পার করে উইন্ডিজ।
রানার পেসে বোল্ড কিং, জয়ের পথে উইন্ডিজ
অবশেষে থামলেন কিং। রানার তোপে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলেন এই ওপেনার। তার ব্যাট থেকে আসে ৭৬ বলে ৮২ রান। ৮টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে এই রান করেন কিং। আউট হওয়ার আগে গড়ে দেন জয়ের ভিত। তার আউটে ভাঙে ৪৮ বলে ৬৬ রানের জুটি। এর আগে লুইসের সঙ্গে গড়েন ১০৯ রানের জুটি। ক্রিজে কার্টির সঙ্গী অধিনায়ক হোপ। ২০ ওভারে দলটির প্রয়োজন মাত্র ৪৪ রান। হাতে আছে ৮ উইকেট।
কিং-কার্টির ফিফটির জুটি
শতাধিক রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর ছন্দপতন ঘটেনি উইন্ডিজের। কিং এবার এগোচ্ছেন কার্টিকে নিয়ে। দুজনের জুটি ইতিমধ্যে পেরিয়ে যায় ফিফটি। মাত্র ৩২ বলে জুটির ফিফটি হয়। মেরে খেলার চেষ্টা করছেন কিং। সেঞ্চুরি থেকে আছেন ২০ রান দূরে। কার্টি ব্যাট করছেন ২২ রানে।
অবশেষে ভাঙলো উইন্ডিজ ওপেনিং জুটি
১০৯ রানে ভাঙলো উইন্ডিজ ওপেনিং জুটি। ফিফটির কাছে গিয়ে ৪৯ রানে রিশাদের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দেন। তার আগের ওভারে অবশ্য মনোসংযোগ হারান এই বাঁহাতি ব্যাটার। নাহিদ রানার বল লাগে তার ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়। লুটিয়ে পড়েন তিনি। ফিজিওর সহায়তায় মিনিট পাঁচেক পর আবার ব্যাটিং শুরু করেন। রানাকে ছক্কাও হাঁকান। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ফিফটি হাঁকানো কিংয়ের সঙ্গী হলেন কার্টি।
কিংয়ের ফিফটি, ওপেনিং জুটির সেঞ্চুরি
রিশাদকে সুইপ করে ব্যাকওয়ার্ড অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠান কিং। ৫২ বলে দেখা পান ফিফটির। ৮টি চারের মারে ইনিংসটি সাজিয়েছেন। ৪৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি কিংয়ের সপ্তম ফিফটি। লুইসকে সঙ্গে নিয়ে কিংয়ের গড়া ওপেনিং জুটিকে এখনো টলাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। ১১৪ বলে দুজনের জুটির সেঞ্চুরি হয়। কিং ৫২ ও লুইস ৪১ রানে ব্যাট করছেন।
পাওয়ার প্লে-তে দুর্দান্ত উইন্ডিজ
উইন্ডিজ ওপেনিং জুটিকে টলাতে পারছে না বাংলাদেশ। দারুণ জুটি গড়ে এগোচ্ছেন কিং-লুইস। দুজনে পাওয়ার প্লেতে যোগ করেন ৫৪ রান। ফিফটির জুটি হয় ৫৪ বলে। কিং ৩০ ও লুইস ২০ রানে ব্যাটিং করছেন। পাওয়ার-প্লেতে তিন বোলারের কেউ উইকেটের পথ তৈরি করতে পারেননি।
কিং-লুইসে উন্ডিজের সতর্ক শুরু
শরিফুলের করা প্রথম ওভারে ১০ রান নেন কিং। পরের তিন ওভারে কিং-লুইস নিতে পারেন ৮ রান। শুরুতে উইকেট না দিয়ে স্বাগতিক শিবির সতর্কতার সঙ্গে খেলছেন।
২২৭ রানে থামলো বাংলাদেশ
শরিফুলের বিদায়ে বাংলাদেশ ২২৭ রানে অলআউট হয়। বল বাকি ছিল ২৫টি। শরিফুল মাত্র ৫ বলে ১৪ রান করেছেন। নাহিদ অপরাজিত ছিলেন ৫ রানে। সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৫ রান আসে তানজীমের ব্যাট থেকে। দল যখন বিপদে তখন ৯২ রানের জুটি গড়ে বিপদ সামলান মাহমুদউল্লাহ-তানজীম। ওপেনার তানজীদ করেন ৪৬ রান। মাঝে আফিফ করেন ২৪ রান। উইকেটের মিছিলে আর কোনো ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরের মুখ দেখেননি। সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন সিলস। ২ উইকেট নেন মোতি।
৯২ রানের জুটির পর ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ-তানজীম
দল যখন ভীষণ চাপে তখন মাহমুদউল্লাহ-তানজীম প্রতিরোধ শুরু করেন। এক প্রান্ত দারুণ খেলে মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দেন তানজীম। ফিফটির জুটি পেরিয়ে সেঞ্চুরির পথে ছিল। ৪৫ রানে তানজীমের আউটে ভাঙে ৯২ রানের জুটি। ৪টি চার ও ২টি ছয়ের মারে ৬২ রান করেন এই বোলার। তার আউটের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহও। ২টি চার ও ৪টি ছয়ের মারে ৯২ বলে ৬২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটার শরিফুল-নাহিদ।
মাহমুদউল্লাহর ফিফটি, বাংলাদেশের দুইশ
চেজের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৮৪ বলে ফিফটির দেখা পান মাহমুদউল্লাহ। এটি তার ক্যারিয়ারের ৩১তম ফিফটি। বাংলাদেশ যখন ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে তখন তানজীমকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। ৬৪ বলে দুজনের জুটির ফিফটি হয়। এখন সেঞ্চুরির পথে। অপর প্রান্তে থাকা তানজীমও আছেন ফিফটির কাছাকাছি। দুজনের জুটিতে ৪২.৪ ওভারে বাংলাদেশ দুইশ পার করে।
তানজীমকে নিয়ে লড়ছেন মাহমুদউল্লাহ, বাংলাদেশের দেড়শ
এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ক্রিজে আসার পর থেকে। অপর প্রান্তে পড়ছিল উইকেটের পর উইকেট। সপ্তম উইকেটের পতনের পর তানজীমকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। উইন্ডিজ বোলারদের নিজেই সামলানোর চেষ্টা করছেন। সুযোগ পেলেই বাউন্ডারি তুলে নিচ্ছেন। অপর প্রান্তে তানজীমও দিচ্ছেন দারুণ সঙ্গ। তানজীমের ছক্কায় ৩৪.২ ওভারে বাংলাদেশ দেড়শ রান পার করেন। দুজনের জুটি থেকে এখন পর্যন্ত আসে ৩১ রান। মাহমুদউল্লাহ ৩৭ ও তানজীম ১১ রানে ব্যাট করছেন।
৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ
মাইন্ডলিকে মারতে চেয়েছিলেন রিশাদ। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি। বল ব্যাটে লেগে বল চলে যায় পয়েন্টের দিকে। নিচু হয়ে মাটি স্পর্শ করতে যাওয়া বল দারুণভাবে তালুবন্দি করেন চেজ। টিভি আম্পায়ার ভালোভাবে দেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন। ৮ বলে শূন্য রান করেন রিশাদ। ১১৫ রানে সপ্তম উইকেট হারালো বাংলাদেশ। এটি মাইন্ডলির অভিষেক উইকেট। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী হলেন তানজীম।
এবার উইকেটের মিছিলে জাকের
মোতিকে ফ্লিক করতে বল মিস করেন জাকের। পায়ে লাগলে জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। জাকের রিভিউ নেন, কিন্তু লাভ হয়নি। ৪ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ আরও একটি উইকেট হারালো। ১০৪ রানে উইকেট গেছে ৬টি। ভীষণ চাপে বাংলাদেশ। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী রিশাদ।
প্রতিরোধের পর আফিফের বিদায়
দ্রুত চার উইকেটের পতনের পর আফিফ-মাহমুদউল্লাহ জুটি প্রতিরোধ গড়ে এগোচ্ছিল ভালোভাবেই। শুরু থেকে আফিফকে দেখাচ্ছিল সাবলীল। কিন্তু থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার। গুদাকেশ মোতিকে সুইপ করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করেন। লং অনে ক্যাচ নেন রাদারফোর্ড। ২৯ বলে ২৪ রান করেন আফিফ। তার আউটের দুই বল আগে ১৮.৩ ওভারে বাংলাদেশ ১০০ পূর্ণ করে। দুজনের জুটি ভাগে ৩৬ রানে। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী জাকের।
লিটনের পর সাজঘরে মিরাজ-তানজীদ
লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মিরাজ। প্রথম ম্যাচে লরাকু ইনিংসে দলের হাল ধরেছিলেন। এবার আর পারলেন না। সিলসের বল খেলবেন নাকি ছাড়বেন এই দোটানায় থেকে বিপদে পড়েন। বল আঘাত করে উইকেটে। ১ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার বিদায়ের পর ক্রিজে তানজীদের সঙ্গী হন আফিফ। কিন্তু দারুণ খেলতে থাকা তানজীদ পারলেন না ইনিংস লম্বা করতে। গ্রিভসকে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন চেজের হাতে। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৪৬ রান। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৪টি চার ও দুটি ছয়ের মারে। ক্রিজে আফিফের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।
১৯ বলে ৪ রান করে আউট লিটন
লিটনকে খুব একটা সাবলীল মনে হচ্ছিল না শুরু থেকে। ১৮ বল খেলেও দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি। ১৯তম বলে সিলসকে পুল করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। বল চলে যায় যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। সহজ ক্যাচ নেন লুইস। ১৯ বলে ৪ রান করেন এই ব্যাটার। ক্রিজে তানজীদের সঙ্গী মিরাজ।
তানজীদের ঝড়ো শুরুর পর সাজঘরে সৌম্য
অভিষিক্ত মাইন্ডলির করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দুই ছক্কা এক চারে ১৮ রান নেন ওপেনার তানজীদ। দারুণ শুরুর পর ছন্দপতন ঘটে পরের ওভারেই। সিলেসের বলে মিডঅনে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। সহজ ক্যাচ ধরেন মোতি। ৫ বলে ২ রান করেন এই ওপেনার। বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় ২৬ রানে। ক্রিজে তানজীদের সঙ্গী লিটন।
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সেন্ট কিটসে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে খেলা। এই ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ।
একাদশে এক পরিবর্তন
তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। একাদশে এসেছে এক পরিবর্তন, পেসার তাসকিন আহমেদের জায়গায় এসেছেন শরিফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ একাদশ
তানজিদ হাসান, সৌম্য সরকার, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক) আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।
রঙিন জার্সিতে অভিষেক মারকুইনোর
বাংলাদেশের মত এক পরিবর্তন নিয়ে নেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আলঝারি জোসেফের পরিবর্তে অভিষেক হচ্ছে মারকুইনো মাইন্ডলির। উইন্ডিজ জার্সিতে ২০টি লিস্ট এ ম্যাচ খেলে ৩১ উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। এর আগে উইন্ডিজ জার্সিতে টেস্ট খেলছেন ১টি, উইকেটের দেখা পাননি।
উইন্ডিজ একাদশ
ব্র্যান্ডন কিং, এভিন লুইস, কেসি কার্টি, শাই হোপ (অধিনায়ক), শেরফেন রাদারফোর্ড, জাস্টিন গ্রিভস, রোস্টন চেজ, রোমারিও শেফার্ড, গুদাকেশ মতি, মারকুইনো মাইন্ডলি, ও জেডেন সিলস।
সিরিজ বাঁচানোর লড়াই
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সহজে ম্যাচ জেতায় বাংলাদেশ তিন ম্যাচ সিরিজে পিছিয়ে পড়েছে। একদিনের বিরতিতে আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে একই মাঠে দুই দল। আজকের লড়াইটা বাংলাদেশের সিরিজ বাঁচানোর, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের। কার মুখে ফুটবে শেষ হাসি সেটাই দেখার। বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী, ‘মাত্র তো একটা ম্যাচ গেল। এখনো সুযোগ আছে। পরের ম্যাচ জিততে পারলে আমরা সিরিজও জিততে পারি।’
ঢাকা/রিয়াদ