ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মাশরাফির বিশ্বকাপ ‘পোস্টমর্টেম’

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৩, ৬ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাশরাফির বিশ্বকাপ ‘পোস্টমর্টেম’

লন্ডন থেকে ক্রীড়া প্রতিবেদক : বিশ্বকাপের মিশন ব্যর্থ।  আট ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে পাঁচটিতে, জিতেছে মাত্র তিনটিতে।  কোথায় হারল বাংলাদেশ? শেষ চার বছরে এতো ভালো প্রস্তুতি নিয়েও কেন সেমিফাইনাল খেলতে পারল না টাইগাররা? বিশ্বকাপ শেষে ‘পোস্টমর্টেম’ করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

নির্বিষ বোলিং :

দলের ব্যর্থতার জন্য মাশরাফি শুরুতেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন নতুন বলে শুরুর বোলিং আক্রমণকে।  তার মতে শুরুর বোলিং আক্রমণ চাপে ফেলে দিচ্ছিল পুরো দলকে।  ‘আমি মনে করি বোলিং আপ টু দ্যা মার্ক ছিল না। আমার থেকে শুরু করে বাকিদেরও। বিশেষ করে প্রথম ১০-১৫ কিংবা ২০ ওভার পর্যন্ত। যেই সময়ে আমাদের অবশ্যই উইকেট পেতে হতো।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বোলিংয়ের যে সাফল্য তার পুরোটাই এসেছে মাঝপথে, শেষভাগে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরাজের বলে মুশফিক ডি ককের ক্যাচ ছাড়ার পর রান আউটে ভাঙেন উইকেট। এরপর সাকিব এসে দেন কার্যত ব্রেক থ্রু। দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব স্পিনে ঘায়েল করেন মার্টিন গাপটিল ও কলিন মুনরোকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে বোলিং ছিল ছন্নছড়া। ২০তম ওভারে মিরাজের অসাধারণ ক্যাচে মাশরাফি পান বিশ্বকাপের একমাত্র উইকেট।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ার্নারের ক্যাচ সাব্বির মিস করেন শুরুতে। সেই ভুলের মাশুল গুনতে হয় ২১তম ওভার পর্যন্ত। সৌম্য এসে ফেরান ফিঞ্চকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পেসার সাইফউদ্দিন ফেরান ক্রিস গেইলকে। নতুন বলে সেটাই একমাত্র সাফল্য বলা যায় পেসারদের জন্য। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পাওয়া ম্যাচে সাকিব ১১তম ওভারে বোলিংয়ে এসে পান উইকেট। ভারতের বিপক্ষে ওপনিং জুটি টেকে ৩০ ওভার পর্যন্ত। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে আসে ২৩ রান। সব মিলিয়ে নতুন বলে সাকিব বাদে কারোর পারফরম্যান্স ভালো না।

গড়পড়তা ফিল্ডিং :

ক্যাচ এবং ফিল্ডিং নিয়ে মাশরাফির অনেক ক্ষোভ, ‘কিছু ম্যাচে ফিল্ডিং আমাদের অনেক বেশি ভুগিয়েছে। মাঠের ফিল্ডিং অবশ্যই। কারণ একজন ফিল্ডার হিসেবে আপনি যখন রান থামাবেন এই ধরণের উইকেটে, তখন বোলাররা অনেক আত্মবিশ্বাস পাবে। যেটি হয়ে ওঠেনি।’ মাঠে গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে একাধিক রান দিয়েছেন।’ বিশ্বকাপে এবার মোট আটটি ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। এদের মধ্যে ডেভিড ওয়ার্নার, রোহিত শর্মা ও বাবর আজমও রয়েছে। সুযোগ পাওয়ার পর প্রত্যেকেই ইনিংস বড় করেছেন। পারেননি শুধু বালাদেশের ক্রিকেটাররা।

দৃঢ়চেতা মনোবলের ঘাটতি :

অনফিল্ডে না হারার মানসিকতার ঘাটতি দেখেছেন অধিনায়ক। তার মতে, প্রতিপক্ষ দল ব্যাটিংয়ে ভালো করলে নুইয়ে পড়ত ফিল্ডাররা। দলের মনোবলে ঘাটতি দেখছেন তিনি। ‘যখন কোনো দল জুটি গড়েছে আমরা ক্রমাগত নিচে নেমেছি। কিছু ক্যাচ মিস হয়েছে। এই ধরণের বিষয় মাঠে ঘটতেই পারে। কিন্তু আমরা এই ভুলগুলো ক্রমাগত করছি।’

ভাগ্যের সহায়তা :

‘কিছু জায়গা আছে যেখানে আমরা নিজেদের প্রমাণ করতে পারতাম যে আমাদের সামর্থ্য আছে। তবে অবশ্যই ভাগ্যের একটি সাহায্য লাগতো সবকিছু নিজেদের পক্ষে যাওয়ার জন্য। যেটি আমি মনে করি উভয় দিক থেকে আমরা হারিয়েছি।’ – বলেছিলেন মাশরাফি।

টস :

টস অবশ্যই অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। কারণ উইকেট পরের দিকে ক্রমাগত ধীর হয়ে এসেছে ম্যাচগুলোতে। এখন যেসব ম্যাচ হচ্ছে তার মধ্যে বেশিরভাগ ম্যাচ ব্যবহৃত উইকেটে হচ্ছে। তাই টস অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ইতিবাচক দিক :

ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা পড়লেও কিছু ইতিবাচক দিক দলের রয়েছে। মাশরাফি ভাগাভাগি করেছেন সেসব জিনিস। ‘সাকিব এবং ব্যাটিং আমাদের বিশ্বকাপের বড় পাওয়া।  আমি মনে করি ব্যাটিং থেকে আমরা বেশ কিছু ইতিবাচক বিষয় নিতে পারি যা ভবিষ্যতে আসলেই আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে আমরা এখন ৩০০ বা কখনো আরো বেশি রান তাড়া করতে পারব।’

 

রাইজিংবিডি/লন্ডন/৬ জুলাই ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়