ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অনুসরণ করতে হবে মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০০, ২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অনুসরণ করতে হবে মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ

পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল আজ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আল্লাহর প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের আজকের এই দিনে সৌদি আরবের মক্কা নগরে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় আইয়ামে জাহেলিয়াতের ঘোর অমানিশা ভেদ করে সত্য, ন্যায় ও একত্ববাদের আলোকবর্তিকা হয়ে চান্দ্রমাস রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখে পৃথিবীতে আসেন মহানবী (সা.)। আবার ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর এই দিনটি মুসলমানদের কাছে তথা মানব ইতিহাসে এক মহিমান্বিত ও গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচিত।

তৎকালে সারা আরব বিশ্ব যখন হিংসা–বিদ্বেষ আর অনাচারে ডুবে গিয়েছিল, তখন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় হাবিব বিশ্বনবী (সা.)-কে বিশ্বজগতের রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন। হজরত মুহাম্মদ (স.) কেবল মুসলমানদের নবী নন। কিংবা শুধু আরবদের বা কেবল আরবী ভাষা-ভাষীদের নবী নন। পৃথিবীর সবার ও সব ভাষাভাষীর এবং সর্বকালের জন্য তিনি নবী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। যখন তাঁর বয়স ৪০ বছর পূর্ণ হয় তখন তিনি নবুয়ত লাভ করেন। এরপর বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান।

হজরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন বহু গুণে গুণান্বিত। দার্শনিক, বাগ্মী, ধর্ম প্রচারক, আইন প্রণেতা, যোদ্ধা, আদর্শ বিজেতা, মানবিক রীতি-নীতির প্রবর্তনকারী। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘অমা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতুল্লিল আলামিন’- অর্থাৎ আপনাকে প্রেরণ করা হয়েছে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ। তিনি প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সৃষ্ট জমিনে আল্লাহরই বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেছেন। মদিনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর মদিনা সনদ প্রণয়ন করেন। এই মদিনা সনদই বিশ্বের সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান। তাঁর সমগ্র জীবনীতে রয়েছে মানবজাতির জন্য অনুপম আদর্শ ও শিক্ষণীয় বিষয়। তিনি ছিলেন মুসলমানদের রাসুল; কিন্তু অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকেও তিনি ভালোবাসতেন সমানভাবে। সব রকম বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাঁর জীবনাচরণ ছিল অনন্য উদাহরণ।

বর্তমান মুসলমান সমাজে কিছু কিছু মানুষ মহানবীর নীতি ও আদর্শ থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে। ফলে বেড়েছে হানাহানি, হিংসা-দ্বেষ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এখন ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান ঘটছে। জ্ঞান–বিজ্ঞানের চর্চা থেকে অনেক দূরে সরে যাওয়ায় মুসলিম বিশ্ব পিছিয়ে আছে আজ। অথচ মহানবীর (সা.) জীবনের অন্যতম আদর্শ ছিল জ্ঞানান্বেষণ। আর আমাদের প্রিয় নবী ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন।

তাই বিশ্বব্যাপী বর্তমানে যে হিংসা-হানাহানি চলছে, তা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের সবাইকে মহানবীর (সা.) আদর্শ ধারণ করে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের পথে চলা প্রয়োজন। তাঁর অনুপম জীবনদর্শন হোক আমাদের চলার পথের পাথেয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ডিসেম্বর ২০১৭/আলী নওশের/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়