অন্যতম অবলম্বন হবে জেলা পরিষদ : খন্দকার মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে জেলা পরিষদ অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখবে। উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার অন্যতম অবলম্বন হবে জেলা পরিষদ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) মিলনায়তনে জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রচলিত আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণকে জনগণের কল্যাণে সর্বাত্মকভাবে কাজ করতে হবে।’ তিনি জনগণের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে জেলা পরিষদকে অধিকতর জনকল্যাণমূখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। জেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ফলে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে চালিত করছেন তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নব নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত অন্য জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের গ্রহণযোগ্যতা ও তাদের প্রতি আস্থা অনেক বেশি।’ তিনি বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার সাথে উদ্ভাবনী ও জনকল্যাণমূখী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আরও ব্যাপক পরিসরে জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘প্রতিটি জেলার উন্নয়নে দেড় কোটি টাকা করে ৬১ জেলায় মোট ৯১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে চেয়ারম্যানদের যতো দেয়া হয়, তারা আরও বেশি চান। তাদের মন পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। এছাড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন হয়েছে একটি আইনের মধ্যে। তাই আইনের বাইরে কোনো কিছু করা কিংবা বলা সম্ভব নয়।’
বর্তমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই জনগণকে সেবা প্রদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের দাবি-দাওয়া পূরণে সরকার আন্তরিক। জেলা পরিষদকে আরও বেশি জনকল্যাণমূখী করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা পরিষদসমূহের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্ম-সৃজন ও আয় বর্ধক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কার্যক্রমের আওতায় দুঃস্থ, অসহায় ও বিধবা মহিলাদের সেলাই, এমব্রয়ডারি, পশুপালনসহ বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যুবকদের কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন রিপেয়ারিং প্রশিক্ষণ ছাড়াও আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বেকারদের মাঝে গাভী, রিক্সা ভ্যান এবং সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। যুদ্ধাহত ও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনে জেলা পরিষদ বর্তমান সরকারের আমলে হুইল চেয়ার, সেলাই মেশিন বিতরণ, দোকান বরাদ্দ ও আর্থিক অনুদান দিয়েছে।
জেলা পরিষদের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, বিভিন্ন সংগঠন ও সমিতিতে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, নারী উন্নয়ন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া এবং আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধকরণসহ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সকল উন্নয়ন কাজের মান নিশ্চিতকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, কৃষি, জনস্বাস্থ্য, পল্লী উন্নয়ন, যুব উন্নয়নসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক গৃহীত প্রকল্পসমূহ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশের সকল জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মার্চ ২০১৭/হাসিবুল/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন