ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আ.লীগে বিতর্কিত-অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা চূড়ান্ত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৮, ৩১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আ.লীগে বিতর্কিত-অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা চূড়ান্ত

সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে যাতে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীরা স্থান করে নিতে না পারে, সেজন্য এসব ব্যক্তিদের একটি তালিকা করেছে আওয়ামী লীগ। তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে দলটির বিভিন্ন শাখা ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।  

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলী সভা শেষে এ কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আসতে পারবে না।  সহযোগী সংগঠনেও যেন কোনো বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করতে না পারে, যেজন্য যথেষ্ট সতর্ক আছি।’

‘নেত্রীও তার নিজস্ব কিছু লোকজনকে দিয়ে এবং গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট সব মিলিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের একটি তালিকা তিনি অলরেডি করেছেন এবং সেটি পার্টি অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি আমার বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ারও করেছি।  তারা এই তালিকা নিয়ে বিভিন্ন শাখা ও সহযোগী সংগঠনের যে সম্মেলন হচ্ছে, সেখানে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে যাদের নাম আছে, তারা যেনো কমিটিতে আসতে না পারে সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকবে এবং ব্যবস্থা নেবে।’

বিতর্কিতরা নেতৃত্বে আসতে পারবে কি না, সেই বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, `সেই বিষয়ে আমাদের কেস টু কেস বিবেচনায় রয়েছে। তবে পার্টিতে থাকলে তারা তো কাউন্সিলের সব কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে।’

বিতর্কিতরা নেতৃত্বে আসতে পারবে কি না, সেই বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, সেই বিষয়ে আমাদের ফেস টু ফেস বিবেচনায় রয়েছে। তবে পার্টিতে থাকলে তারা তো কাউন্সিলের সব কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনে গঠনতন্ত্রের বিধান মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জেলা শাখাগুলোকে একটি নির্দেশনামূলক সার্কুলার দিতে যাচ্ছি যে, দলের গঠনতন্ত্রের কোনো প্রকার ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একদম ওয়ার্ড পর্যন্ত, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, মহানগর, জেলা সব ক্ষেত্রেই দলের গঠনতন্ত্র পালন করতে হবে।’

‘গঠনতন্ত্রে বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে করা যাবে না। গঠনতন্ত্র বিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেয়া যাবে না। নতুন কমিটি করার ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। গঠনতন্ত্রের বিধান মেনে কমিটির আকার করতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে একটি কালারফুল, বর্ণাঢ্য, সুশৃঙ্খল ও স্বতস্ফুর্ত সম্মেলন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘টেকনোলজি ও ট্রেডিশনের সমন্বয় রেখে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সময়  উপযোগী নেতৃত্ব উপহার দেব।’

মেয়াদোত্তীর্ণ ২৭টি জেলায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এসব সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যাবেন, সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বেশকিছু উপজেলায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির আছে।   সেগুলোরও সম্মেলন প্রস্তুতি চলছে।  ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়সহ সারা দেশের জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে পুরোদমে তৃণমূল পর্যন্ত তাদের সাংগঠনিক শক্তি বিস্তারে সম্মেলনের দিকে নজর দিয়েছে।’ 

ওবায়দুল কাদের জানান, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগের সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একই মঞ্চে হবে।  সে লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা এই বিষয়ে দেখভালো করছেন।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে করা উপ-কমিটিগুলো সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে।  অর্থ কমিটির বাজেট ঠিক করে ফেলেছেন।  পার্টির সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে তারা বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। প্রস্তুতি থেমে নেই, সম্মেলন সঠিক সময়ে হবে।  ২০ ডিসেম্বর উদ্বোধন অনুষ্ঠান এবং ২১ ডিসেম্বর কাউন্সিল অধিবেশন।’

দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদকের বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে সেটি চলমান থাকবে জানিয়ে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন কাদের। 

গত তিন বছরের যতগুলো প্রতিনিধি সভা হয়েছে, এত  প্রতিনিধি সভা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে হয়নি বলেও দাবি করেন দলটির এই সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘এই সময়ে রোডমার্চ, ট্রেন মার্চ করেছি। পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন ফেস করেছি। বেশ কিছু ইউনিয়ন পর্যায়ের ও পৌরসভার নির্বাচন ফেস করেছি। সিলেট ছাড়া বাকি সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে আমরা জিতেছি।’

‘এ সময় স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে আমরা বিজয়ী হয়েছি। ২২ বছর পর খুলনা মহানগরের প্রথম কমিটি হয়েছে এই সময়ে। অন্তত ৩০টি কমিটির পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে যেখানে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিল। এরপরও এই কমিটি কিছুই করতে পারেনি বলে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়।”  

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল হক, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ,  দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ দপ্তর ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

ঢাকা/পারভেজ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়