ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিশ্ব মা দিবস

‘আজকের মোস্তাফা জব্বার মায়ের হাতে তৈরি’

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১০ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আজকের মোস্তাফা জব্বার মায়ের হাতে তৈরি’

‘আমাদের প্রতিদিনই মা দিবস। সন্তানের কাছে প্রতিটি মুহূর্তই মা দিবস হওয়া উচিত’ বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাকে স্মরণ করে, মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মা দিবস। বিশেষ এই দিনটিতে দেশের প্রতিটি মাকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী রাইজিংবিডিকে এ কথাগুলো বলেন।

এ সময় তিনি মায়ের আদর, শাসনে বেড়ে ওঠার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘মা হলো জীবন। সন্তান মানুষ করা মায়ের কাজ। আজ আমার বেড়ে ওঠার পেছনে, এতো দূর আসার পেছনে মায়ের অনেক অবদান। তিনি যত্ন না নিলে আমি আজকের এই মানুষ হতে পারতাম না।

এ সময় মোস্তাফা জব্বার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘ধরা যাক, মা’র কাছে কেউ গিয়ে আমার অন্যায় সম্পর্কে সত্য অভিযোগ করলো। মা সেই অভিযোগটাও বিশ্বাস করতো না। বলতো, ‘আমার ছেলে ঠিক আছে।’ এই হচ্ছে মা। আজকের মোস্তাফা জব্বার এই মায়ের হাতে তৈরি।’’

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি জগতে মোস্তাফা জব্বার জীবন্ত কিংবদন্তি। নিজেকে তিনি শুধু এই সেক্টরেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। আপন প্রতিভায় অবদান রেখেছেন দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার প্রসার এবং শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয়ে। কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রয়োগ, প্রচলন এবং বিকাশে তার রয়েছে যুগান্তকারী অবদান।  

মোস্তাফা জব্বারের পৈতৃক নিবাস নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। বাবা আব্দুল জব্বার তালুকদার পাট ব্যবসায়ী ও অবস্থাসম্পন্ন কৃষক ছিলেন। মা রাবেয়া খাতুন ছিলেন গৃহিণী। তিনি ২০১০ সালে মারা যান।  

মায়ের স্মৃতিচারণ সংক্ষেপে একেবারেই অসম্ভব জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমার মা আমাকে কোনোদিন বকেছে এমন মনে পড়ে না। আমি অন্যদের চেয়ে একটু ভিন্নভাবে মানুষ হয়েছি। আমার প্রথম মায়ের ভূমিকা পালন করেছে আমার নানী। তার সঙ্গে আরো দুই মায়ের ভূমিকা পালন করেছে আমার দুই খালা। তাদের এতোটা ভালোবাসা পেয়েছি যে, পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত মা আমাকে কোলে নেওয়ার সুযোগ পায়নি।’ 

মোস্তাফা জব্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পেছনেও রয়েছে মা রাবেয়া খাতুনের অবদান। তিনি বলেন, ‘আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু বাবার সতর্কতার কারণে সম্ভব হচ্ছিল না। বাবা কোনোমতেই বাড়ি থেকে যেতে দেবেন না। মা তখন বাবার কাছে মিথ্যা কথা বলে আমাকে যুদ্ধে পাঠিয়ে দিয়েছিল। যদিও বাবা পরে বুঝতে পেরেছিলেন। এমন সচরাচর ঘটে না। কারণ মা তো সন্তানকে বুকের মধ্যে রেখে দিতে চায়। কিন্তু আমার মা চেয়েছিল আমি যেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই।’

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মা ভিন্নরূপে আবির্ভূত হতে পারেন। কিন্তু আমাদের এই উপমহাদেশে মা তো মা-ই। মায়ের তুলনা হয় না। বিকল্প তো হয়-ই না। ফলে একটি দিবসের মধ্যে মায়ের ভালোবাসাকে সীমিত করার পক্ষে অনেকেই নন। বিষয়টির সঙ্গে একমত পোষণ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা তো মায়েদের সঙ্গেই বড় হয়। বিষয়টি আমার ক্ষেত্রেও দেখেছি, আমার সন্তানদের ক্ষেত্রেও দেখছি। সুতরাং চারপাশে যে সম্পর্কগুলো দেখছি, মা আর সন্তানের মধ্যে যে সম্পর্ক, এই সম্পর্কের সঙ্গে তুলনীয় পৃথিবীতে কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না।’


ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়