ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আমাজন জঙ্গলের অজানা তথ্য

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৯ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আমাজন জঙ্গলের অজানা তথ্য

আহমেদ শরীফ : পুড়ছে আমাজন। গত মাস থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বন অ্যামাজন ফরেস্টে দাবানলের কারণে আগুন ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে এখনো এই বনে আগুন জ্বলছে। হাজার হাজার হেক্টর এলাকার বন পুড়ে যাচ্ছে। মূলত আমাজনের ব্রাজিল অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় ধনী রাষ্ট্রদের সংস্থা জি সেভেন এই সমস্যা থেকে উত্তরণে ব্রাজিলকে ২০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। গবেষকরা বলছেন ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হচ্ছে, তা পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনে আরো নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আমাজন রেইন ফরেস্ট সম্পর্কে অজানা কিছু বিষয় জানি চলুন।

* দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশজুড়ে আমাজন ফরেস্ট বিস্তৃত। দেশগুলো হলো- ব্রাজিল, পেরু, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম ও ফ্রেঞ্চ গায়ানা। ব্রাজিলে আছে আমাজনের ৬০ শতাংশ।

* প্রতিদিন পৃথিবীর মোট ২০ শতাংশ অক্সিজেন উৎপন্ন হয় আমাজনের বিস্তীর্ণ গাছপালার জগৎ থেকে, তাই আমাজন ফরেস্টকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে ডাকা হয়। তবে আসলে এই তথ্য সঠিক নয়। প্রতিদিন আমরা বেঁচে থাকার জন্য বেশিরভাগ অক্সিজেন পাই পৃথিবীর সব সাগর -মহাসাগরের মাইক্রো অর্গানিজম থেকে।

* আমাজন রেইন ফরেস্ট মোট ২.১ মিলিয়ন বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত।

* যদি এই রেইন ফরেস্টটি একটি দেশ হতো, তাহলে বিশালতার দিক থেকে বিশ্বের নবম বড় দেশ হতো। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, বৃটেন ও আয়ারল্যান্ডকে ১৭ বার এই ফরেস্টে রাখার মতো জায়গা আছে।

* আমাজনের জীববৈচিত্র্য নিয়ে এখনো পুরোপুরি জানা না গেলেও বিজ্ঞানীদের জরিপে জানা গেছে, সেখানে কমপক্ষে ৪০ হাজার প্রজাতির গাছ, ৩ হাজার প্রজাতির মাছ, ১,৩০০ প্রজাতির পাখি ও ২.৫ মিলিয়ন প্রজাতির কীটপতঙ্গ আছে।

* আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি দ্রুত বিলীন হচ্ছে আমাজনের জীববৈচিত্র্য। প্রতি সেকেন্ডে সেখানকার ১.৫ একর জমি ও প্রতিদিন গড়ে ১৩৭ প্রজাতির প্রাণী বিলীন হচ্ছে।

* বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাজনে অন্তত ৫০টি গোত্রের ২১ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করছে। আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে এদের কোনো যোগাযোগ নেই।

* আমাজন জঙ্গল অন্ধকারাচ্ছন্ন। ঘন গাছপালা ও পাতায় আবৃত থাকায় সূর্যের আলোর মাত্র ১ শতাংশ পৌঁছায় সেখানে। এছাড়া বৃষ্টির পানি জঙ্গলের মাটি পর্যন্ত পৌঁছাতে কতো সময় নেয় জানেন? ১০ মিনিট।

* বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী হিসেবে নীল নদকে ধরা হলেও কয়েকজন বিজ্ঞানী জটিল এক জরিপের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন আমাজনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আমাজন নদীটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী। এর দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ৮০০ কিলোমিটার, যা নীল নদের চেয়ে ১০৫ কিলোমিটার বড়। এছাড়া আয়তনের দিক থেকেও আমাজন সবচেয়ে বড়। প্রতি সেকেন্ডে ৫৫ মিলিয়ন গ্যালন পানি আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবাহিত করে এই নদী। প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা সাঁতরে ২০০৭ সালে ৬৬ দিনে মার্টিন স্ট্রেল নামের এক বৃটিশ নাগরিক আমাজন নদী পাড়ি দেন।

* বিশ্বে খাবারের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তার  ৮০ শতাংশই আসে আমাজন জঙ্গল থেকে। এছাড়া বর্তমানে যেসব ওষুধ তৈরি হয়, তার প্রায় ২৫ শতাংশ উপাদান আসে আমাজন থেকে।

* আমাজন জঙ্গল টিকে থাকার জন্য অনেকটাই নির্ভর করে সাহারা মরুভূমির উপর। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাহারা মরুভূমির বালু ও ফসফরাস আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে জমা হয় আমাজন জঙ্গলে। আর এর মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য টিকে থাকে আমাজনে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ আগস্ট ২০১৯/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়