ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইউটিউবের জন্য যেভাবে ভিডিও বানাবেন (শেষ পর্ব)

স্বপ্নীল মাহফুজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১০, ৩১ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইউটিউবের জন্য যেভাবে ভিডিও বানাবেন (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

স্বপ্নীল মাহফুজ : সৃজনশীলতা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যমে হলো ইউটিউব। ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করে ভিউয়ারদেরকে জানাতে পারেন যে আপনি কতটা সৃজনশীল। আপনি ইউটিউব থেকে আয়ও করতে পারেন।

শখের বশে হোক কিংবা আয়ের উদ্দেশ্যে হোক, ইউটিউব আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে অথবা সমৃদ্ধ করতে পারে। কিন্তু ইউটিউবার হিসেবে সফল হতে হলে আপনাকে ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। এ প্রতিবেদনটি আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে, যদি আপনি ইউটিউব ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছুই না জানেন। নতুনদের জন্য এ সংক্রান্ত পরামর্শ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* ভিডিও তৈরির বেসিক শিখুন

আপনি যে ভিডিও তৈরি করতে যাচ্ছেন তার ওপর ভিত্তি করে ভিডিও তৈরির দক্ষতা অর্জন করতে হবে, অর্থাৎ আপনাকে ভিডিও তৈরির বেসিক বা মূল বিষয়গুলো শিখতে হবে। এখানে ব্যতিক্রম হলো ফুটেজ ব্যবহার করে বানানো ভিডিও, যা আপনি নিজে শুট করবেন না, যেমন- রিয়্যাকশন ভিডিও, গেম রিভিউ ও মুভি সমালোচনা।

আপনি শুরুর দিকে স্মার্টফোন ব্যবহার করে ভিডিও বানাতে পারেন। কিন্তু আপনি মিররলেস ক্যামেরা অথবা ডিএসএলআর কিনলে আপনার ভিডিও আরো ভালো দেখাবে। আলোক স্বল্পতার ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্যামেরার প্রয়োজন রয়েছে।

ভিডিও তৈরি শুরু করতে টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। সবচেয়ে চমৎকার হলো ৪কে শুটিং, কিন্তু এখনো ইউটিউবের অধিকাংশ কনটেন্ট ১০৮০পি অথবা এর নিচে। শাটার স্পিড ও কালার প্রোফাইলের মতো টেকনিক্যাল দিকগুলো জানার পর ভিডিও কেমন করে ভালোভাবে শুট করতে হয় তা সম্পর্কে জানুন।

* সাউন্ডের গুরুত্ব বুঝুন

ভিডিওর মানে কেবলমাত্র দৃশ্যধারণ করবেন তা নয়। একটি ভিডিও তৈরির মানে হলো একটি গল্প বলা। আপনি শুনে বিস্মিত হবেন- অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিডিওতে দৃশ্যধারণের চেয়ে অডিওর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কোনো গল্পের মূল ভিত্তি হলো অডিও, যেখানে ভিডিও প্রায়ক্ষেত্রে সম্পূরক। অনুসরণ করার জন্য এটি কোনো ধরাবাধা নিয়ম নয়, কিন্তু আপনাকে সবসময় অডিও ও ভিডিওর মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

নিম্নমানের ভিডিওকে আকর্ষণীয় করতে অনেক কিছু করা যেতে পারে, কিন্তু নিম্নমানের সাউন্ডের ক্ষেত্রে তেমন কিছু করা যায় না। একারণে এটা নিশ্চিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে আপনার সাউন্ড কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো। আপনার অডিওর কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো রাখতে একটি উন্নতমানের মাইক্রোফোন কেনার কথা বিবেচনা করতে পারেন।

যদি আপনি ক্যামেরায় সরাসরি কথা বলতে চান, তাহলে ইন-ক্যামেরা মাইক্রোফোনের ওপর নির্ভর করবেন না, এর পরিবর্তে অন-ক্যামেরা শটগান মাইক্রোফোন ব্যবহার করুন। অন-ক্যামেরা শটগান মাইক্রোফোন ক্যামেরার ওপর বসানো থাকে এবং এটিকে যেদিকে তাক করা হয় সেখান থেকে অডিও ধারণ করে। আরেকটি বিকল্প হলো ল্যাভালিয়ার মাইক্রোফোন- মুখের কথা স্পষ্টভাবে ধারণ করতে এটি গায়ের কাপড়ে লাগানো থাকে। কণ্ঠস্বর রেকর্ড করতে পিসি বা ম্যাকে এসব মাইক্রোফোন ব্যবহারে কোনো ভুল নেই, কিন্তু আপনি পিস টু ক্যামেরার ওপর নির্ভরশীল না হলে এর পরিবর্তে ডেস্ক-মাউন্টেড মাইক্রোফোন অধিক সুবিধাজনক হতে পারে। যদি আপনি সরাসরি কম্পিউটারে রেকর্ড করেন, তাহলে আপনার জন্য সেরা অপশন হলো অডাসিটি নামক অডিও সফটওয়্যার- এটি হলো শক্তিশালী অডিও সফটওয়্যার যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

* ভিডিও এডিটরের ব্যবহার জানুন

ভিডিও ও অডিও ফাইল প্রস্তুতের পর আপনাকে ভিডিও এডিট করতে হবে। ভিডিও এডিটের জন্য প্রয়োজন একটি ভিডিও এডিটর। কোন ধরনের ভিডিও এডিটর ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করছে আপনার বাজেটের ওপর। এছাড়া বিনামূল্যের ভিডিও এডিটরও রয়েছে।

ম্যাকে আপনি আইমুভি দিয়ে শুরু করতে পারেন- এটি একটি বিনামূল্যের ভিডিও এডিটর, যেখানে ভিডিও এডিটিংয়ের প্রক্রিয়া খুব সহজ। উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা ওয়ান্ডারশেয়ার ফিল্মোরা নামক ভিডিও এডিটর ব্যবহার করতে পারেন। এটি সুলভে পাওয়া যায়। যদি আপনি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটরের খোঁজ করেন, তাহলে ডা ভিঞ্চি রিসলভ ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ভিডিও এডিটরের পেছনে অর্থব্যয় করার মতো সামর্থ্য না থাকলে বিনামূল্যের ভিডিও এডটিরই ব্যবহার করুন।

আপনি যে ভিডিও এডিটরই নির্বাচন করেন না, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানা। মজার বিষয় হলো, আপনি ইউটিউবের জন্য ভিডিও তৈরি করতে ভিডিও এডিটরের ব্যবহার শিখতে অন্য ইউটিউবারদের ভিডিও এডিটিং সংক্রান্ত ভিডিওগুলো দেখতে পারেন। এছাড়া ভিডিও এডিটিংয়ের কোর্স করতে পারেন অথবা ভিডিও এডিটরের ব্যবহার জানে এমন কারো কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন।

ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ শেষ হলে ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে দিন ও পাবলিশ করুন। প্রথম ভিডিও পাবলিশের জন্য আপনাকে অভিনন্দন। অধিকাংশ সফল ইউটিউবার একটি কথা বারবার বলেন, ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন। মনে রাখবেন, সফলতার চাবিকাঠি হলো ধারাবাহিকতা। আপনার সামর্থ্য, দক্ষতার মাত্রা ও সময়ের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিন- কতদিন পরপর ভিডিও আপলোড করবেন। শুভ কামনা।

         *

         *

         *

        *



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জুলাই ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়