ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ইটভাটার পাশের বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত

একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০২, ১২ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইটভাটার পাশের বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত

ফাইল ফটো

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া : বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ এলাকায় ইটভাটার পার্শ্ববর্তী বসবাসকারীদের মধ্যে শিশু-বৃদ্ধসহ অর্ধশতাধিক মানুষ শ্বাসকষ্টে  আক্রান্ত হয়েছে।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ইটভাটার ধোঁয়া বা গ্যাসের কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। ভাটা থেকে গ্যাসের সঙ্গে মিথেন ও সালফাইড নির্গত হয়। এ সব গ্যাস বাতাসের সঙ্গে মিশে মানুষ আক্রান্ত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় শিশু, কিশোর বা বৃদ্ধরা আক্রান্ত হবে। পরে অন্যরা।

শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ এলাকায় কমপক্ষে ৪০টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে বদর ইটভাটাসহ কয়েকটি লোকালয়ের একেবারে কাছে অবস্থিত।

শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইটভাটার পাশের গাছের পাতা পুড়ে গেছে। আম গাছেই পঁচে যাচ্ছে। ধান পাকার আগেই শুকিয়ে গেছে। অন্য ফসল খেতেই শুকিয়ে গেছে। এলাকাবাসির দাবি, গ্যাস নির্গতের কারণে মাঠের ঘাসও বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। ওই ঘাস খেয়ে গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসের ১০ তারিখ রাতে বদর ইটভাটা থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়া হয়। এই গ্যাসের কারণে বীজের জন্য চাষ করা ধান পুড়ে চিটা হয়ে গেছে। এতে আগামীতে ফসল রোপন নিয়ে তিনি শঙ্কায় রয়েছেন।

বিষাক্ত ঘাষ খেয়ে কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ভাটার পাশের ২০টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এলাকার বাসিন্দা মুমিনুজ্জামান (৪৫) জানান, ইটভাটার গ্যাসে কমপক্ষে ২০ জন মানুষ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার বলেন, এ সব গ্যাসের কারণে ফসল ও গাছপালার উপর প্রভাব পড়ে। ফসলের উপর কার্বন পড়লে ক্ষতি হবেই।

বদর ইটভাটার মালিক আবুল বাসার সাইদুর রহমান করেন, তাদের ইটভাটার কারণে ক্ষতি হয়েছে বলে শোনেননি। আশপাশের লোকজন জমি ইটভাটায় ভাড়া দিয়েছে। ‘জিকজাগ’ পদ্ধতির ইটভাটায় ক্ষতি হয় না। যদি ক্ষতি হয়ে থাকে, সেটার জন্য তারা একা দায়ী নয়। এলাকায় আরো ইটভাটা রয়েছে। সেখান থেকে ধোঁয়া নির্গত হয়।

এই ইটভাটার অংশীদার আবু জাফর বলেন, গ্যাস ছাড়ার কিছু নেই। আসলে যা ক্ষতি হয়েছে, সেটা ধোঁয়ার কারণে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় ধোঁয়া তুলনামূলক নিচ দিয়ে গেছে। সেটার প্রভার পড়েছে এলাকার স্থাপনাসহ বিভিন্ন গাছের উপর। ক্ষতি হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ক্ষতিপূরণ দেবেন।

লোকালয় ঘেঁষে ইটভাটা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘পরিবেশের ছাড়পত্র আমাদের কেন দিল? সরকার কী দেখেশুনে দেয়নি?’’

পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ইটভাটার গ্যাসের কারণে এলাকার লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফুয়ারা খাতুন বলেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।



রাইজিংবিডি/বগুড়া/১২ মে ২০১৮/একে আজাদ/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়