ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ৮ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষনা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র অন্য একটি দেশের সামরিক বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করল।

বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর এর পাল্টা জবাবে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করেছে বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

এমনিতেই ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির করা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পর থেকে ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্কের পতন হতে থাকে। এখন ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর তাদের মধ্যে উত্তেজনা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে ইরানের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করে দেশটি।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি’র প্রাথমিক অর্থ হলো এর মাধমে দেশটির ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদী ক্যাম্পেইনে’র বাস্তবায়ন করা।

সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পররাষ্ট্র দপ্তরের উদ্যোগে নজিরবিহীন এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে যে সত্যটাকে স্বীকৃতি দেয়া হলো তা হচ্ছে, ইরান কেবল সন্ত্রাসে মদদদাতা রাষ্ট্রই নয়, বরং আইআরজিসি সক্রিয়ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা ব্যবস্থার হাতিয়ার হিসাবে সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে উৎসাহিত করে থাকে।’

রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দেওয়ার বিষয়ে মূলত: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন সিদ্ধান্ত নেন। অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তারা এতে ততটা সমর্থন দেননি। এমনকি সিআইএ এবং পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এর বিরোধিতা করেছেন।

এদিকে রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। বিশেষ করে ইরানের ব্যবসা খাতে এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে। নতুন পদক্ষেপের ফলে ইরানকে আরো চাপে ফেলার ‘সুযোগ এবং পরিধি অনেকটাই বাড়ল’ বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আইআরজিসি’র সঙ্গে কাজ করা মানেই সে সন্ত্রাসে অর্থায়ন করছে বলে ধরে নেওয়া হবে।’

মার্কিন পররাষ্ট্রদপ্তর জানিয়েছে এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যেই এ পদক্ষেপ কার্যকর হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী  পম্পেও সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ইরান যাতে একটি স্বাভাবিক জাতির মত আচরণ করে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং চাপ অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য মিত্রদেশগুলোকেও ইরানের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। কোনো দেশের সামরিক বাহিনীকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয়ার এই সিদ্ধান্ত মার্কিন বাহিনী ও দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জন্য বুমেরাং হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ এপ্রিল ২০১৯/সাইফুল/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়