উপবন দুর্ঘটনা: আহতদের ভিড়ে ছেলেকে খুঁজছেন বাবা
হাসপাতালে ছেলের খোঁজে রশীদ আলী, চাচাত ভাইয়ের খোঁজে আব্দুল আলী (বামা থেকে)
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের মধ্যে আপনজনের খোঁজ করছেন স্বজনরা।
সোমবার দুপুরে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে আহতদের জিজ্ঞাসা করে স্বজনদের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের পিরগাঁও বালিয়াকান্দি গ্রামের দুলাল আহমদ (৩৫) ও পার্শ্ববর্তী বরইকান্দি গ্রামের আবুল কালাম (৩৬)।
সিলেট ওসমানী হাসপাতালে কথা হয় দুলাল আহমদের বাবা রশিদ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, তার ছেলে দুলাল আহমদ ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। রোববার রাতের ট্রেনে তার ঢাকায় যাওয়ার কথা। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় পৌঁছায়নি। ছেলের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে তাকে খুঁজতে এসেছেন তিনি। রশিদ আলী জানান, এখানে না পেয়ে তিনি কুলাউড়ায় যাচ্ছেন ছেলের সন্ধানে।
একইভাবে চাচাত ভাই কালামের খোঁজে এসেছেন বরইকান্দি গ্রামের আব্দুল আলী। তিনি জানান, ঢাকা থেকে কালামের স্ত্রী-সন্তানরা ফোন করে জানিয়েছেন কালাম সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে করে ঢাকায় পৌঁছার কথা ছিল। দুপুর পর্যন্ত তিনি পৌঁছাননি। মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। এ জন্য কালামের খোঁজে তিনি হাসপাতালে এসেছেন।
রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বনশাইল নামক স্থানে বড়ছড়া সেতু ভেঙে সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেসের একটি বগি খাদে পড়ে যায়। এ ছাড়া দুটি বগি পাশের জমিতে এবং তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে চারজন নিহত ও প্রায় দেড় শতাধিক আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন নারীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ২৪ জন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে কারো অবস্থা গুরুতর না হওয়ায় চিকিৎসা শেষে ১৬ জনই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বাকিরাও বিকেলে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা।
এ দিকে দুর্ঘটনার পর থেকে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। রাতেই লাইনে থাকা সাতটি বগি নিয়ে কুলাউড়া জংশন থেকে ঢাকা গেছে ইঞ্জিন। এ ছাড়া সকালে আরো পাঁচটি বগি কুলাউড়া জংশনে টেনে নেওয়া হয়েছে। আর লাইনচ্যুত বগি সরিয়ে লাইন চালু করতে সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে রেলওয়ের প্রকৌশল ও ট্রাফিক বিভাগের কর্মীরা।
দুর্ঘটনার তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রাইজিংবিডি/সিলেট/২৪ জুন ২০১৯/আব্দুল্লাহ আল নোমান/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন