ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এই হেডফোন থাকলে ভাষা কোনো বাঁধাই নয়!

মো. রায়হান কবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৫, ১৭ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এই হেডফোন থাকলে ভাষা কোনো বাঁধাই নয়!

মো. রায়হান কবির : ভাষার বাঁধার জন্যে কতকিছু! ভিনদেশে গেলে চাকরির সমস্যা। সমস্যা হয় অন্যদের নিজের সমস্যা বোঝাতে। আর অন্যান্য বিষয় না হয় বাদই দিলাম। অনেক সময় ভালোবাসার জন্যেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ভাষা।

তবে এই ভাষার সমস্যাও যে সমাধান করতে পারবে প্রযুক্তি সেটা কে ভেবেছিল? আচার্য জয়নুল একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন, তাই ভিনদেশে ছবি এঁকে দূর করেছিলেন ভাষার সমস্যা। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ সম্পূর্ণ অচেনা দেশে কিভাবে মুক্তি পেতে পারে ভাষাগত সমস্যা থেকে?

মাইমানু নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাজারে আনছে এক বিস্ময় হেডসেট বা ইয়ারবাড। অর্থাৎ তারবিহীন হেডসেট, যা ইতিমধ্যেই আইফোনের কল্যাণে আমরা পরিচিত হয়েছি। তবে এটা আইফোনের ইয়ারবাডের চেয়েও অনেক অনেক উন্নত। যেমন ফিচারে তেমনি এর পাওয়ার বা চার্জ ফুরানোর বিচারে।

এমন এক বহুমুখী ইয়ারবাড এটি, যার ফিচার শুনলে বিস্ময়ে মুখ হা হয়ে যাবে। এই ইয়ারবাড ৩৭টি ভাষা অনুবাদ করবে একেবারে লাইভ! অর্থাৎ আপনি একজন স্প্যানিশ ভাষী লোকের সঙ্গে কথা বললে তা শুনে ‘ক্লিক’ নামের এই ইয়ারবাড আপনাকে তা ইংরেজিতে শোনাবে! আবার উল্টোটাও সম্ভব। এভাবে এই ক্লিক ইয়ারবাড আপনাকে নানা ভাষার কথা আপনার প্রয়োজনীয় ভাষায় অনুবাদ করে শোনাবে।

এটার প্রচলন যদি ব্যাপক হয়, তবে আর কোরিয়ান ভাষা খাতা কলমে শিখে আর কোরিয়া যেতে হবেনা। হয়তো আপনি অনুবাদ শুনতে শুনতেই শিখে ফেলবেন। এটা আপনাকে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় হয়তো দক্ষ করে তুলতেও সাহায্য করবে। দক্ষ না হোক, অন্তত কাজ চালানোর মতো অবস্থায় আপনাকে নিয়ে যেতে পারবে।

শুধু তাই নয়, এর সাউন্ড কোয়ালিটি অসাধারণ। অনেকটা সিডি কোয়ালিটির সাউন্ডে আপনি শুনতে পারবেন অ্যাপল মিউজিক এবং স্পটিফাই এর সকল গান একই মেনুতে! অর্থাৎ এটি শুধু অনুবাদক হিসেবেই কাজ করে না, এটি ভরপুর বিনোদন দিতেও প্রস্তুত।

বিশ্বের অনেক বড় বড় টেক জায়ান্টরা এমন প্রকল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিল। অর্থাৎ লাইভ ভাষা রূপান্তর। অবশেষে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সবার আগে সফল হলো।

 

 


মাইমানু’র সিইও ড্যানি মানু প্রায় চার বছর ধরে তার বাড়িতে এটা নিয়ে গবেষণা করেছেন। সিইএস কনজুমার ইলেকট্রনিক্স শো’তে এটা প্রদর্শনের জন্যে নেয়া হয়েছিল, কিন্তু তখন এর একমাত্র খসড়াটি (প্রোটোটাইপ) ভেঙে যায়। তখন অনেকেই খুব অবাক হয়েছিল। মাত্র একটি পণ্য নিয়ে একজন মাত্র মানুষ এতো বড় শো’তে আসার সাহস করে কিভাবে?

আজকে এই একজন ব্যক্তির পণ্যই জয় করতে যাচ্ছে দুনিয়া। কিছুদিনের ভেতরই জানা যাবে কত বড় বড় প্রতিষ্ঠান মাইমানু’র ক্লিকের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে। প্রযুক্তির জগতে বিরাট এক বিপ্লব হবে এই ক্লিক দিয়েই। ক্লিক দেখে বিজ্ঞানীরা আরও নতুন নতুন ফিচারের চিন্তা করবে। মানুষের জীবন যাত্রাকে সহজ করতে আরও নতুন নতুন প্রযুক্তি আসবে। এখন শুধু একটাই চাওয়া ক্লিকের ফিচারে যুক্ত হোক, আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ মার্চ ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়