এক ভাইকে খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে গেলেন আরেক ভাই
এক ভাইকে খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে গেলেন আরেক ভাই। এই দুই ভাই-ই ছিলেন প্রতিভাবান। প্রতিভার জন্য বাঙালী জাতি তাদের মনে রাখবেন অনেক অনেক দিন।
যে ভাইকে খুঁজতে গিয়েছিলেন, তিনি শহীদুল্লা কায়সার। আর যিনি খুঁজতে গিয়েছিলেন, তিনি প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও লেখক জহির রায়হান। শহীদুল্লা কায়সারের ৯৪ তম জন্মদিন আজ। ১৯২৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্ম তার।
সব ছাড়িয়ে তার বড় পরিচয় তিনি কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও লেখক। তার প্রকৃত নাম আবু নাঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পিতা মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ছিলেন ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। পান্না কায়সার তার সহধর্মিণী।
ছাত্রজীবনে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ধারার সকল আন্দোলনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা পালন করেন। এজন্য দু’বার তাকে গ্রেপ্তার হতে হয়। ১৯৪৯ সালে ইত্তেফাক পত্রিকায় শহীদুল্লার সাংবাদিক জীবন শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে তিনি সংবাদ পত্রিকায় যুক্ত হন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এখানেই কর্মরত ছিলেন।
সারেং বউ এবং সংশপ্তক এর মতো বিখ্যাত উপন্যাস দুটি তারই লেখা। কৃষ্ণচূড়া মেঘ, তিমির বলয়, দিগন্তে ফুলের আগুন, সমুদ্র ও তৃষ্ণা, চন্দ্রভানের কন্যা, কবে পোহাবে বিভাবরী - এগুলোও তার অনন্য উপন্যাস। রাজবন্দীর রোজনামচা ও পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ তার স্মৃতিকথা ও ভ্রমণবৃত্তান্ত।
সাহিত্যকর্মের জন্য আদমজী সাহিত্য পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ তিনি অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার বাসভবন থেকে অপহৃত হন তিনি। এরপর আর ফিরে আসেননি।
১৯৭১ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভাই জহির রায়হান খবর পান যে, শহীদুল্লা কায়সারকে ঢাকার মিরপুরে রাখা হয়েছে। তিনি তাকে উদ্ধারের জন্য সেখানে যান। সেদিন থেকে জহির রায়হানও নিখোঁজ হয়ে যান।
ঢাকা/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন