ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

একই সঙ্গে দুই ফল, উপরে লেবু নীচে আনারস

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
একই সঙ্গে দুই ফল, উপরে লেবু নীচে আনারস

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : ৫ থেকে ৭ ফুট উঁচু লেবু গাছ। ডালে ডালে লেবু। লেবু গাছের ফাঁকে রোপণ করা হয়েছে আনারস গাছ। প্রায় ১ ফুট উঁচু এসব গাছে ধরেছে বারোমাসি আনারস।

অর্থাৎ একই বাগানে উপরে ঝুলছে লেবু আর নীচে হচ্ছে আনারস।এ দৃশ্য হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রশিদপুর পাহাড়ি এলাকার।

শুধু রশিদপুরেই নয়, নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট ও মাধবপুরের পাহাড়ি জমিতেও এখন লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে উৎপাদন করা হচ্ছে কেমিক্যালমুক্ত বারোমাসি আনারস। এসব আনারস বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। সেখানকার পাহাড়ি এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে একসঙ্গে এই দুটি ফলের আবাদ।

একসময় পাহাড়ে প্রচুর জমি পতিত পড়ে থাকত। বর্তমানে এসব জমি আবাদ করে চাষিরা নানা ফসল ফলাচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম লেবু ও আনারস। কারণ এ দুইটি ফসল দ্রুত পচনশীল নয়। তাই চাষিদের ঝুঁকি নিতে হয় না এসব ফসল চাষে। গাছ থেকে সংগ্রহ করার কয়েকদিন পর বিক্রি করলেও লেবু ও আনারসে পচন ধরে না।

জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট ও মাধবপুর এলাকার পাহাড়ি পতিত জমি আবাদ করে ব্যাপকভাবে লেবু উৎপাদনে সফলতা পাওয়ার পরই চাষিরা এসব লেবু বাগানে আনারস চাষ করছেন। চাষিরা জানান, লেবু ও আনারস চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। নেই তেমন কোনো ঝুঁকিও।

এমনই একটি লেবু ও আনারস বাগানের মালিক সামিউল ইসলাম জানান, রশিদপুর পাহাড়ি এলাকার জমিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে লেবু চাষ করছেন। বর্তমানে লেবু গাছের ফাঁকে বারোমাসি আনারস গাছ রোপণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘পাহাড়জুড়ে লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোপণ করা গাছে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। নিজেদের খাবারের পাশাপাশি এসব আনারস বিক্রি করে বাগান মালিকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

উদ্ভিদ গবেষক মাহমুদুর রহমান মামুন ও পরিবেশপ্রেমিক বন গবেষক আহমদ আলী বললেন, পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো। তাই কেমিক্যাল ছাড়া এখানে লেবু ও আনারস চাষ হচ্ছে। পাহাড়ে আনারস চাষকে এগিয়ে নিতে কৃষকের মাঝে নানাভাবে উৎসাহ বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বশির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘এখানে একদিকে পাহাড়, অপর প্রান্তে হাওর। মধ্যে মধ্যে শহর। পাহাড়ের পতিত জমি আবাদ করে কৃষক নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করছেন। এর মধ্যে লেবু-আনারসের দারুণ ফলন হচ্ছে। বেকার যুবকরাও এ চাষে যুক্ত হয়ে নিজেদের কর্মসংস্থান করে নিচ্ছেন। এসব চাষাবাদে কৃষককে সার্বিকভাবে সহায়তা করা হচ্ছে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ ইসহাক মিয়া বলেন, ‘পাহাড়ে প্রচুর ঘাস রয়েছে। এসব ঘাসে নির্ভর করে পাহাড়ি এলাকার লোকরা গরু-ছাগল, ভেড়া-মহিষ পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আর এসব পশুর বর্জ্য বাগানের ঊর্বরা শক্তি বাড়াচ্ছে। ফলে ফলনও ভাল হচ্ছে।’



রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬/মামুন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়