ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিও কেড়ে নিল ব্রহ্মপুত্র

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ৩০ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিও কেড়ে নিল ব্রহ্মপুত্র

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিও কেড়ে নিল ব্রহ্মপুত্র। গ্রাম বিলীনের পথে।  বসতবাড়ি, জমিজমা, স্কুল-সবই ব্রহ্মপুত্র’র পেটে। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের যেন বাকি রইল না কিছুই।

স্কুলটি পুনঃর্নিমাণের এবং ব্রহ্মপুত্র’র ভাঙন থেকে গ্রামটিকে রক্ষার দাবি জানিয়েছে  বিপন্ন গ্রামবাসী ।

গ্রামবাসীর কাছে ব্রহ্মপুত্র এখন মূর্তিমান আতঙ্ক । গ্রামের এমন কোনো পরিবার নেই, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।গভীর রাতে গ্রামের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাইমারি স্কুলটিও ধসে পড়ে পানিতে। সহায় সম্পদ হারানোর চেয়েও তারা বেশি কষ্ট পেয়েছে স্কুলটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় ।

প্রতিদিনের মতো পরের দিন ভোরে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিল ইমরান, সাদিয়া ও রবিনের মতো অনেক ছাত্রছাত্রী। দেখে তাদের প্রিয় স্কুলটিও ভেঙে পড়েছে ব্রহ্মপুত্রে । সেদিন স্কুলের জন্য কেঁদেছিল অনেক শিশু। তবে ব্রহ্মপুত্র স্কুল কেড়ে নিলেও বন্ধ হয়নি পড়াশোনা। খোলা আকাশের নিচেই চলছে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম।

স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সুমন রঞ্জন সরকার জানান, সাহেবের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নির্মিত হয় ১৯৩৭সালে। আরও দু’বার ভাঙনের শিকার হয় স্কুলটি। এরপর ১৯৯৯ সালে নতুন ঠিকানা পায় এটি। সেখানেও হানা দিয়েছে ব্রহ্মপুত্রকে। এখন স্কুলের জন্য আবার নতুন জায়গার সন্ধান করছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জন প্রতিনিধিরাও ঘুরে দেখছেন ভাঙন কবলিত গ্রামটি।

 



এলাকাবাসী জানান, নদী ভাঙনের শিকার হয়ে গ্রামছাড়া হয়েছে অন্তত কয়েকশ পরিবার। পেশা হারিয়েছে অনেকে। গ্রামের বহু পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে এখন বসবাস করছে সরকারি রাস্তায়।

গ্রামবাসীরা বলছেন, গত পনের বিশ বছর ধরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। গ্রাম রক্ষায় আজ পর্যন্ত চোখে পড়ার মতো কোনো কাজ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে পরিকল্পিতভাবে স্কুলটি নির্মিত হয়নি বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেছেন, গ্রাম রক্ষায় ১৩৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে, এটি অনুমোদন ও বাস্তবায়ন হলে গ্রামটি রক্ষা পাবে।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরফদার আক্তার জামীল জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুলটি পুনঃর্নিমাণের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান করা হবে।



রাইজিংবিডি/কিশোরগঞ্জ/৩০ জুলাই ২০১৭/রুমন চক্রবর্তী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়