ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

এখনও টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখেন মাশরাফি, তবে....

আব্দুল্লাহ এম রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫২, ২৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এখনও টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখেন মাশরাফি, তবে....

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : ৮ বছর আগে সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। একের পর এক ইনজুরি তার ক্যারিয়ারকে থমকে দিয়েছে কয়েক বার। তবে দমে যাননি। নিজেকে ফিরে পেতে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। ফিটনেস ধরে রেখে আর ইনজুরির সাথে পাল্লা দিয়ে এখনও ক্রিকেট খেলছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

তবে এখন খেলছেন শুধু ওয়ানডে। কিছুদিন আগে ছেড়ে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টিও। এখনও স্বপ্ন দেখেন ফিরবেন টেস্ট ক্রিকেটে। এজন্যই এখনও টেস্ট ক্রিকেট বিদায় জানাননি তিনি। তবে হুটহাট করে নয়, নিজেকে টেস্ট ক্রিকেটের যোগ্য করেই টেস্টে ফিরতে চান। বুধবার আবু নাসের স্টেডিয়ামে বিসিএলের ম্যাচ চলার ফাঁকে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

বাংলাদেশের একজন টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবেই গর্ব করেন তিনি। নতুন ক্রিকেটারদেরও গ্ল্যামার ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির থেকেও টেস্ট ক্রিকেটে গুরুত্ব অনুধাবন করার আহ্বান জানান তিনি।

তবে বিসিএলের এই ম্যাচ খেলার সাথে তার টেস্টে ফেরার কোন সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি। বলেন, খেলছি নিজেকে ওয়ানডেতে ফিট রাখার জন্য। সামনে ওয়ানডে খেলার আগে কোন খেলা ছিল না, সেজন্যই খেলছি।



সাদা পোশাক আর লাল বলে মাশরাফি ছুটছেন বাংলাদেশের জার্সিতে। এখন যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বল করেন সেই ফিলিংসটাকে বাইরে রেখেই খেলেন। তবে টেস্টে খেলার জন্য ফিটনেসের যে এবিলিটি আছে সেটা মাশরাফির আছে বলেই বিশ্বাস করেন তিনি। মাশরাফি বলেন, বয়স ৩৪/৩৫ এর কাছে গেলেও যে ফিটনেস আছে আরও দুই বছর টেস্ট খেলার এবিলিটি আছে আমার। এটা আমি বুঝতে পারি। বিশেষ করে  ফিটসেনের যে কোয়ালিটি আছে, তাতে পারব। তবে এটা যে এটা সহজ নয় সেটাও জানেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। বলেন, আমাকে তো পারফর্ম করে খেলতে হবে, তার জন্য তো নিজের একটা ওয়ে বের করতে হবে। শুধু তো নতুন বলে বোলিং করলে হবে না। ওয়ানডে তো ডিফারেন্ট চ্যালেঞ্জ থাকে। আপনি যে বলই হাতে নেন, আপনাকে ব্যাটসম্যান এ্যাটাক করবে, সো আপনাাকে এ্যাটাক করবে, ওইভাবে ডিফেন্সিভ থেকে আবার এটাক কখন করতে হবে। টেস্টে একটা গড়পড়তা হিসেব আছে উইকেট বের করার ওয়ে বের করতে হবে, সেটা নতুন বলের পরে পুরোনো বলে আরও লং টাইম খেলা। সো তার জন্য তো ওয়ে বের না করে বা আমি সেই লেভেলে না এসে এসব বলা বা মন্তব্য করা কঠিন।’

তবে বাংলাদেশের নতুন ক্রিকেটারদের নিয়ে আশাবাদি মাশরাফি। বিশেষ করে পেস বোলাররা লংটাইম বাংলাদেশকে সার্ভিস দিতে পারছেন না, এটা জানেন। তবে নতুনদের প্যাশনটা টেস্ট কেন্দ্রিক হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। এজন্য একজন ক্রিকেটারকে মাত্র একটি সিরিজে সুযোগ না দিয়ে বারবার সুযোগ দেয়া উচিৎ। তিনি বলেন, পেসারদের নিয়ে যে সমস্যা, এটা তো আর একদিনে সমাধান বের হবে না, এটা তো আসলে লং প্রসেস। আর উইকেটও একটা কিছু ম্যাটার করে। সব কিছু মিলায়ে কিন্ত এডজাস্টমেন্টের ব্যাপার আছে, ম্যাচিউরিটির ব্যাপার আছে, আমার কাছে মনে হয় যে, টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা হয়তো বা রুবেলের আছে। আমি বরং মনে করি নতুনদের আরও সময় দেয়া উচিৎ। ওরা ঠিক হবে। বাট ওদের খেলার ইচ্ছা থাকতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট এখনও একটা প্যাশনের গেম। ওই প্যাশনটা না থাকলে আর হবে না। প্যাশন থাকলে পসিবল। এখন ওইটাতো তাদের ব্যাপার। পার্টিকুলার ওই প্লেয়ারের ব্যাপার। প্যাশনটা ওর আছে কি না। টেস্ট ক্রিকেটে পারফর্ম করতে চায়, টেস্ট ক্রিকেটে ভালো প্লেয়ার হতে চায়। এটা পার্টিকুলার ওই প্লেয়ারদের ব্যাপার।’

নিজেকে টেস্ট প্লেয়ার ভাবতেই বেশি গর্ব হয় মাশরাফির। তিনি বলেন, আমার যখন ডেব্যু হয়, তখন কিন্তু নান্নু ভাইয়ের কথা বলা হতো, উনি টেস্ট ক্রিকেট খেলেননি। ওনার কষ্টটা আমরা খেলেও অনুভব করতাম। ইসসস এত বড় প্লেয়ার টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারেননি। আর আমরা যখন জুনিয়র, আমরা প্রাউড ফিল করতাম। এখন খেলতে না পারলেও আমি বাংলাদেশের টেস্ট প্লেয়ার এটা আমি প্রাউড ফিল করি। আর শুধু প্রাউড ফিল করলে তো হবে না, প্রাউডের জায়গাটা নিয়ে কাজ করতে হবে। সো, ওদের যেহেতু ওই স্কোপ আছে, ওদের ওখানে ফোকাসটা করা উচিৎ।’



টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা শোনালেও নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুই বলতে চাননি। এখন খেলাটাকে উপভোগ করছেন। যতদিন সম্ভব খেলবেন, এরমধ্যে নিেেজকে টেস্টের যোগ্য করতে পারলে টেস্ট ক্যাপ পড়ে আবারও নামবেন। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে মাশরাফি বলেন, ভবিষ্যৎ ভাবনা ভাবা বোকার কাজ। ভবিষ্যতের কথা তো বলা যায় না। তবে এই মুহুর্তে খেলছি, এটা এনজয় করছি। আর টেস্ট ক্রিকেটের কথা বললে, আমি বলি ইচ্ছা আছে, তবে এভাবে হুটহাট করে হবে না। আমাকে সেই পরিমাণ নিজেকে নিজের বোঝার বা প্রুফ করার জায়গা আছে, সেই জায়গায় না এসে একটা দুইটা ম্যাচ খেললে ওটা বলা যায় না। আমি তো খেলি আসলে নির্দিষ্ট একটা চিন্তা থেকে। একটা ম্যাচে যদি ২৫-৩০ ওভার বোলিং করি, তাহলে হয় কি আমার নেক্সট চার পাঁচ সপ্তাহের বোলিং ওয়ার্ক লুকটা হয়ে যায়, সো আমি কিন্তু ওই মেন্টালিটি থেকেই খেলি। আমার বোলিং ওয়ার্ক লুকটা ঠিক থাকুক। যেটা আমি একা প্রাক্টিস করার থেকে ম্যাচে এসে বোলিং করা অনেক ভালো।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ এপ্রিল ২০১৮/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়