ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এনজিও খুলে, চাকরি দিয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে চম্পট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০২, ২৯ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এনজিও খুলে, চাকরি দিয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে চম্পট

যশোরের চৌগাছায় একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মালিক লাখ লাখ টাকা চাকরির জামানত ও সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠনটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এনজিওটির মাঠকর্মী ফেরদৌসি বেগম গত ২৫ নভেম্বর চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন, ‘বন্যা ইসলামি ডেভেলপমেন্ট’ নামক এক এনজিও অফিস খুলে বসেন আব্দুল বারিক। সেখানে তাদেরকে টাকা জামানত দিয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেন। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে রশিদের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন। সেই রশিদ বইতে গ্রহনকারী, ম্যানেজার এবং প্রদানকারী স্বাক্ষর আছে। গ্রামের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী ও অসহায় মানুষদেরকে ইসলামি পন্থায় অল্প সঞ্চয়ে বিভিন্নভাবে সহায়তা দেয়ার কথা বলে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। চাকরি পেয়ে তারা সকলেই বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ অসহায় মানুষদেরকে বুঝিয়ে ‘বন্যা ইসলামি ডেভেলপমেন্ট’ লেখা একটি জমা বইয়ের মাধ্যমে সঞ্চয় সংগ্রহ করেন। সেই সঞ্চয়ের টাকা তারা এনজিও’র সহকারি প্রকল্প ম্যানেজার মামুন উদ্দিন ও আবদুল বারিকের ভাই তারেকের কাছে জমা দিতেন। কখনো আবার সেই টাকা বারিক নিজেই নিয়েছেন। কিন্তু তিন থেকে চার মাস পার হলেও এই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোন বেতন পাননি। সেখানে কর্মরত প্রকল্প ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম ২ লাখ, ফিল্ড অফিসার দেলোয়ার হোসেন ৭০ হাজার, গোলাম কবির ৬৪ হাজার, জুই, ফেরদৌসি ও তৌহিদুজ্জামান ৩ লাখ, শাহানাজ খাতুন ও টিংকু ২৫ হাজার, নাসরিন খাতুন ও সুমন ৪০ হাজার, সুমন্ত ও শাহ আলম ৯৮ হাজার, মাসুদ আরাফাত ও রাকিবুল ৫০ হাজার করে সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে যশোরের মনিরামপুর, রাজগঞ্জ ও কেশবপুরেও ওই একই এনজিওর শাখা অফিস আছে। সেখান থেকেও চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আবদুল বারিক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যা ইসলামি ডেভেলাপমেন্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ‘এনজিওটির নিবন্ধন আছে কিনা আমার জানা নেই। বারিক আমাকে ২০ হাজার টাকা বেতনে এখানে চাকরি দিয়েছিল। পরবর্তীতে আমি কাগজপত্র এবং এই এনজিওর কাজ সর্ম্পকে জানতে চাইলে, সে  আমাকে শো’কজ করে। মনিরামপুর, রাজগঞ্জ ও কেশবপুরের ম্যানেজার রেজা জানান, ‘গত ২ নভেম্বর আমি চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছি। ২৬ নভেম্বর থেকে আমাদের অফিস বন্ধ। আমরা যারা টাকা জামানত দিয়ে চাকরি নিয়েছি, তাদের কেউই আর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল বারিক বা অন্য কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছিনা। ’

চৌগাছা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নির্মল কান্তি কর্মকার জানিয়েছেন, ‘বন্যা ইসলামি ডেভলোপমেন্ট নামে একটি এনজিও অনুমোদনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন করে। আমরা সেটি জেলা অফিসে পাঠিয়েছিলাম। সেখানে তাদের নামের ছাড়পত্র মিললেও এনজিওটির নিবন্ধন হয়নি।’

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি আমলে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগটি আমি চৌগাছা থানার ওসি বরাবর পাঠিয়েছি।’

চৌগাছা থানার ওসি রীফাত খান রাজিব বলেন, ‘আমি অভিযোগের কাগজপত্র পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


যশোর/সাকিরুল কবীর রিটন/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়