ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ওবামার মুখোমুখি প্রিন্স হ্যারি

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওবামার মুখোমুখি প্রিন্স হ্যারি

সেপ্টেম্বর মাসে কানাডায় মুখোমুখি হন বারাক ওবামা ও প্রিন্স হ্যারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদায় নেওয়ার পর এই প্রথম সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যের প্রিন্স হ্যারির মুখোমুখি হলেন বারাক ওবামা।

সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করলেও তিনি বলেন, বিভক্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা উচিত নয়। ওবামা বলেন, ‘আমরা যারা নেতৃত্বে থাকি, আমাদের এমন সব পথ খুঁজে বের করা উচিত, যাতে ইন্টারনেটে সবার জন্য আমরা সাধারণ জায়গা পুননির্মাণ করতে পারি।’

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে উষ্ণ আলাপচারিতার ঢঙে এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন বিবিসি রেডিও ফোর-এর ‘টুডে’ অনুষ্ঠানের অতিথি হোস্ট প্রিন্স হ্যারি। ওবামা বলেন, ইন্টারনেটের একটি ভয়ংকর দিক হলো এই মাধ্যমের লোকজনের পুরোপুরি ভিন্ন বাস্তবতা থাকতে পারে। তারা এমন সব তথ্যে বুঁদ হয়ে পড়তে পারে, যা তাদের গোঁড়ামিকে উসকে দিতে পারে। ইন্টারনেটে বেনামে লোকজন থাকতে পারে, ফলে তাদের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলার সুযোগ কম।

এরপর তিনি বলেন, প্রশ্ন হলো- এই প্রযুক্তিকে আমরা কতটা গোছাতে পারি, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কণ্ঠ স্থান পাবে, মতাদর্শের বৈচিত্র্য থাকবে কিন্তু আমাদের সমাজকে তা যেন বলকানাইজেশনের দিকে নিয়ে না যায়, বরং সবার জন্য জায়গা তৈরির পথ খুজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, বলকান রাষ্ট্রগুলোর জনগণের মধ্যে এমন এক ধরনের চিন্তাভাবনা রয়েছে যে- তারা অন্য অঞ্চলের লোকজন থেকে নিজেদের আলাদা করে রাখতে চায়। তাদের এই ভাবধারাকে ‘বলকানাইজেশন’ বলা হয়ে থাকে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কানাডার টরন্টোতে প্রিন্স হ্যারি আয়োজিত ‘ইনভিকটাস গেমস’ চলাকালীন এই সাক্ষাৎকার রেকর্ড করা হয়। বিশ্বজুড়ে আহত সেনাদের সম্মান জানানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলার সমন্বয়ে ইনভিকটাস গেমসের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

ওবামাকে শক্ত প্রশ্নের মুখে ফেলে তাকে বিব্রত করার চেষ্টা করেননি হ্যারি। সহজ-সোজা কথার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় সাক্ষাৎকার। ‘হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় আপনার অনুভূতি কেমন ছিল?’- এ ধরনের প্রশ্নও করেছিলেন হ্যারি। কৌতুক করে উত্তর দিয়ে ওবামা বলেছিলেন, ‘এক সময় আমি ট্রাফিকের কারণ হতাম, এখন আমি ট্রাফিকের অভিজ্ঞতা নিচ্ছি।’ ১৬০০ পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউ ছাড়ার পর প্রথম দিকে মনে হচ্ছিল, সব যেন ধীরে চলছে।

ওবামা বলেন, এখন তিনি সকালে নাশতায় বা তার স্ত্রী মিশেল ওবামার সঙ্গে কথা বলে একটানা ৪৫ মিনিট পার করে দেন। প্রেসিডেন্ট হওয়া থেকে মেয়াদ শেষ করা পর্যন্ত স্ত্রী তার সঙ্গী ছিলেন।

মিশেল সম্পর্কে ওবামা বলেন, তার স্ত্রী একজন দৃষ্টিগ্রাহী, দারুণ ও উষ্ণ ব্যক্তি। স্বভাবজাতভাবে রাজনীতিতে তার ঝোঁক নেই। তবে একজন ভালো ফার্স্ট লেডি হিসেবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তিনি তাকে সহযোগিতা করতেন।

এই সাক্ষাৎকারে ওবামা তার বিয়ে ও পরিবার নিয়েও কথা বলেছেন। বৈবাহিক বন্ধন খুব শক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিশেল ও তিনি এখনো সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তাদের দুই মেয়ের এগিয়ে চলা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে যে ব্যস্ততায় তার সময় কাটত, এখন তা থেকে মুক্ত তিনি। নিজের রুটিন নিজেই তৈরি করেন এবং ইচ্ছামতো কাজ করেন।

এখনো প্রেসিডেন্ট পদে থাকলে তিনি কী করতেন- জানতে চাইলে প্রিন্স হ্যারিকে ওবামা বলেন, ‘আমার কাছে যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ, তা এখনো পরিবর্তিত হয়নি। আমি যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বকে এমন একটি স্থানে পরিণতি করার কথা ভাবি, যেখানে শিশুরা শিক্ষা পাবে, যারা কঠোর পরিশ্রম করতে চায়, তারা তাদের জীবিকার জন্য কাজ খুঁজে পাবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের গ্রহের সম্পদসমূহ সংরক্ষণ করতে চাই, যেন তারা পৃথিবীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারে।’

গেস্ট হোস্ট হিসেবে বুধবারও বাগদত্তা মেগান মার্কেলকে নিয়ে বিবিসিতে হাজির হন প্রিন্স হ্যারি। সেখানে তাকে বিবিসির এক প্রতিবেদক জিজ্ঞাসা করেন, আগামী বছর মে মাসে তাদের বিয়েতে ওবামাদের দাওয়াত দেওয়া হবে কি না। তবে হ্যারি বলেন, এই বিস্ময় হিসেবেই থাক। আগেই এ নিয়ে কথা বললেন না তিনি।

তথ্যসূত্র : এনডিটিভি অনলাইন



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ ডিসেম্বর ২০১৭/রাসেল পারভেজ  

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়