ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কমলাবাগান রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:১৪, ১২ এপ্রিল ২০২১  
কমলাবাগান রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে প্রস্তাবিত সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে বসতবাড়ি ও কমলাবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানিয়ে এগুলো রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে প্রস্তাবিত সাফারি পার্কটি অন্যত্র নির্মাণের দাবি জানানো হয়। কৃষিনির্ভর ৪টি গ্রামের ৩৬৪টি পরিবার বসবাস করে এই এলাকায়।

রবিবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে স্থানীয় লালছড়া গ্রামে প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ৪টি গ্রামের শত শত মানুষ মানববন্ধন করেন।

জানা যায়, সিলেট বনবিভাগের সংরক্ষিত রিজার্ভ ফরেস্টের জুড়ী রেঞ্জের আওতাধীন লাঠিটিলা বনভিট এলাকায় ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক নামে একটি পার্ক করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

প্রস্তাবিত পার্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মোট জমির চাহিদা এক হাজার  একর বলে জানা যায়। এ সাফারি পার্ক নির্মাণের জন্য সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সাফারি পার্ক নির্মাণের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পূর্নবাসনের লক্ষ্যে সরকার একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছে বলে জানা যায়।

মানববন্ধনে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে জুবায়ের আহমেদ বলেন, উপজেলার সীমান্তবর্তী গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে সিলেট বনবিভাগের সংরক্ষিত রিজার্ভ ফরেস্টের জুড়ী রেঞ্জের আওতাধীন লাঠিটিলা বনভিট এলাকায় ভিলেজার হিসেবে জরিছড়া, লালছড়া, রুপাছড়া ও ডোমাবাড়ী এ চারটি গ্রামে শতাধিক বছর ধরে ৩৬৪টি পরিবার বসবাস করে আসছে। এর মধ্যে ৩ শতাধিক পরিবার কমলা, বাতাবি, লেবু, জাম্বুরা, আদা, হাতকড়া ও লেবু জাতীয় কৃষি ফসলি বাগানের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। প্রতিবছর এখানকার কমলাবাগান দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা ভিড় করেন। কমলাবাগানকে ঘিরে আমাদের গ্রামগুলো ইতিমধ্যে একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরোও বলেন, কিছুদিন পূর্বে আমরা জানতে পারি গ্রামবাসীকে উচ্ছেদ করে এখানে একটি সাফারি পার্ক করা হবে। প্রস্তাবিত সাফারি পার্ক নির্মাণ হলে সেটা আমাদের এলাকার বৃহত্তর উন্নয়নের স্বার্থে একটি মাইলফলক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। তবে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ পরিবারসমূহকে উচ্ছেদ  করলে আমাদের বসতভিটা, কৃষি ফসলের বাগান ধ্বংসের মুখে পড়বে। পাশাপাশি ৩৬৪টি পরিবারের লোকজনের পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। আমাদের শত বছরের বসতভিটা ও ফসলি কৃষিজমি রক্ষা করে সাফারি পার্ক নির্মাণ হলে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। এছাড়াও একই বিটের ঘরবাড়ি ছাড়া পতিত বনভূমিতে সাফারি পার্ক করা হলে আমাদের মতো অসহায় পরিবারগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।

মানববন্ধনে উপস্থিত কমলা চাষি মোরশেদ মিয়া বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৪ শতাধিক লোক উক্ত ৪টি গ্রামের মধ্যে শতবর্ষ পুরনো প্রতিষ্ঠিত কমলা, আদা, জাম্বুরা, বাতাবী লেবু, হাতকরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির কৃষি ফসলি বাগানে কর্মে নিয়োজিত। উক্ত বাগানের ওপর নির্ভর করে চলে এ গ্রামের পরিবারগুলো।

তিনি বলেন, পরিবারের অভিভাবকরা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার খরচ, চিকিৎসাসহ সার্বিক ব্যয় বহন করেন উক্ত কৃষি ফসলি বাগানের ওপর নির্ভর করে। তাই আমাদের বসতভিটা ও ফসলি কৃষিজমি রক্ষার জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

সাইফুল্লাহ/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়