ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কোরিয়ায় সর্বোচ্চ শ্রমিক নিয়োগকারী পাবে পুরস্কার

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২২, ২৬ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কোরিয়ায় সর্বোচ্চ শ্রমিক নিয়োগকারী পাবে পুরস্কার

সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই বিদেশে বৈধ পথে শ্রমিক পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধ চ্যানেল ও দালালচক্রকে অনুৎসাহিত করতে বৈধ শ্রমিক নিয়োগে অবদানের জন‌্য সাধুবাদ জানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ কোরিয়ায় এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমে (ইপিএস) সর্বোচ্চ কর্মী নিয়োগকারীকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির দূতাবাস।

বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে দালালদের কারণে একদিকে যেমন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, অন্যদিকে সহায়-সম্বল বিক্রি করে পথে বসছেন হাজার হাজার ব‌্যক্তি ও তাদের পরিবার। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, বৈধ পথে শ্রমিক পাঠাতে উৎসাহিত করার পাশাপাশি দালালদের অপতৎপরতা রোধ করা গেলে দেশ ‍উপকৃত হবে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা হবে। তাই আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসকে সামনে রেখে সর্বোচ্চ বৈধ ইপিএস কর্মী নিয়োগকারীসহ বেশ কয়েকটি শাখায় পুরস্কার দেয়ার কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এ বিষয়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ক্যাটাগরিভিত্তিক আবেদন করা যাবে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে এসব আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে আগামী ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।

দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুকিমা বেগম এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রবাসী কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অভিবাসনের গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে, যেমন: রেমিট‌্যান্স প্রেরণে প্রণোদনা, রেমিট‌্যান্স পুরস্কার প্রদান প্রভৃতি। এছাড়া, ২০১৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ দায়িত্বশীল, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনের জন্য ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট’ এর ধারণা বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে উপস্থাপন করে। দুই বছর পর্যালোচনার পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর এটি জাতিসংঘে গৃহীত হয়। সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতেও বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সব মিলিয়ে বৈধ পথে শ্রমিক প্রেরণকে আমরা সব সময়ই উদ্বুদ্ধ করছি। এর অংশ হিসেবে পুরস্কার প্রচলন করা হয়।

তিনি বলেন, মূলত বাংলাদেশের উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি দেবে সিউল দূতাবাস।

জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বাধিক সংখ্যক বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগকারীদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে বিশেষ ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হবে। এই নিয়োগকর্তারা হবেন কোরিয়ান। বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী নিয়োগে উৎসাহিত করতেই মূলত তাদের এ সম্মাননা দেয় সিউল দূতাবাস।

এছাড়া, আরো পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের পুরস্কার দেয়া হবে। এগুলো হচ্ছে- সর্বোচ্চ রেমিট‌্যান্স প্রেরণকারী, একই কর্মস্থলে সর্বোচ্চ সময় অবস্থানকারী, কোরিয়ান সরকার কর্তৃক পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী, কোরিয়ান ভাষা প্রফিসিয়েন্সি কোর্সে সার্টিফিকেট পাওয়া এবং কোরিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে যেকোনো ট্রেডে কমপক্ষে ৬ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্নকারী বা সার্টিফিকেটধারী। প্রত্যেক ক্যাটাগরি থেকে পাঁচজন করে বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীকে পুরস্কৃত করা হবে।

পুরস্কার অর্জনের জন্য বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের নিজেদের আবেদন করতে হবে। একজন কর্মী একাধিক ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন। ইপিএস কর্মীদের ভিসা যে ক্যাটাগরির হোক না কেন, আবেদন করা যাবে।

দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, রেমিট‌্যান্স ক্যাটাগরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে পাঠানো রেমিট‌্যান্সের ব্যাংক সনদপত্রের মূল স্ক্যান কপি সংযুক্ত করতে হবে। একই কর্মস্থলে সর্বোচ্চ সময় অবস্থানকারী ক্যাটাগরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে কোম্পানির রেজিস্ট্রেশনের স্ক্যান কপি এবং কন্ট্রাক্ট অ‌্যাগ্রিমেন্টসহ চাকরিতে যোগদানের তরিখসহ মেয়াদকাল উল্লেখ করতে হবে। বাকি ক্যাটাগরিতেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে।

দূতাবাস সূত্র জানায়, গত বছরও বাংলাদেশের উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছিল সিউল দূতাবাস। গত বছর পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৩ বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী এবং পাঁচজন কোরিয়ান নিয়োগকর্তাকে সম্মাননা দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় শিল্পোৎপাদন ও সেবা খাতে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর সরকারি খরচে কয়েক হাজার দক্ষ কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া যায়। দেশটিতে বর্তমানে ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মীই শ্রমচুক্তির অনুকূলে ইপিএস স্কিমের আওতায় কোরিয়ায় গেছেন।

ঢাকা/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়