ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ক্বীন ব্রিজে মুগ্ধ মার্কিন রাষ্ট্রদূত

আব্দুল্লাহ আল নোমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০২, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্বীন ব্রিজে মুগ্ধ মার্কিন রাষ্ট্রদূত

সিলেটের ঐতিহাসিক ক্বীন ব্রিজ (ছবি : রাইজিংবিডি)

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেটের ঐতিহাসিক ক্বীন ব্রিজের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেছেন, ‘এ ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে লম্বা পায়ে হাঁটার ব্রিজ।’

মঙ্গলবার দুপুরে ক্বীন ব্রিজ পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন। তিনি সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে পায়ে হেঁটে ব্রিজের উত্তর প্রান্ত থেকে দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি ব্রিজের নিচের আলী আমজদের ঘড়িও ঘুরে দেখেন। তিনি ঘড়ির ঘণ্টা ধ্বনির প্রশংসাও করেন।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘ক্বীন ব্রিজের সাথে আলী আমজদের ঘড়ি সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। এ ব্রিজের সংস্কার কাজ চলছে শুনে তা দেখতে এসেছি। ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া ও এর সৌন্দর্য বাড়ানোর পদক্ষেপে তিনি সিসিক মেয়রের প্রশংসাও করেন।’

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্রদূত। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তার দেশের অবস্থান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার দেশের সরকার সব সময় বাংলাদেশের পাশে আছে ও থাকবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকেই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে।’

এজন্য তাদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে আমেরিকা কাজও করছে বলে জানান তিনি।

ক্বীন ব্রিজ সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর ওপর স্থাপিত লৌহ নির্মিত সেতু। এটি সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় এবং ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। দেশে-বিদেশে সিলেটের পরিচিতি তুলতে ধরতে এ সেতুর ছবি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি সিলেট শহরের প্রবেশদ্বারও।

ধনুকের মতো বাঁকানো ক্বীন ব্রিজের দৈর্ঘ্য ১১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট। ১৯৩৩ সালে তৎকালীন রেলওয়ে বিভাগ এ সেতুটি নির্মাণ করে। প্রায় ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শেষে ১৯৩৬ সালে ব্রিজটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। আসাম প্রদেশের ইংরেজ গভর্নর মাইকেল ক্বীনের নামে ব্রিজের নামকরণ করা হয় ক্বীন ব্রিজ।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ব্রিজের উত্তর প্রান্তের একাংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয় পাক হানাদার বাহিনী। স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগিতায় ব্রিজের বিধ্বস্ত অংশ কংক্রিট দিয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে ব্রিজ দিয়ে যান চলাচল করছে।

প্রায় ৮৫ বছরের পুরনো এ সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার রাত থেকে যান চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে যান চলাচল বন্ধ থাকলেও পথচারীদের জন্য ব্রিজটি খোলা রয়েছে।

সিসিক মেয়র জানান, ‘ক্বীন ব্রিজ একটি ঐতিহ্যবাহী ব্রিজ। এই ব্রিজ ব্রিটিশদের তৈরি। রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার সিলেট সফরে আসলে তিনি ব্রিজটি ঘুরে দেখেন। ব্রিজের সংস্কার কাজ চলছে। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় যান চলাচল বন্ধ রেখে পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।’


রাইজিংবিডি/সিলেট/৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/আব্দুল্লাহ আল নোমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়