ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ক্ষতির শিকার কুষ্টিয়ার গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষিরা

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ৬ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্ষতির শিকার কুষ্টিয়ার গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষিরা

করোনার কারণে এবার কুষ্টিয়ায়  গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষ করে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বাঁধাকপি বিক্রি করে শ্রমিক খরচও উঠছে না। তাই বাঁধাকপি ক্ষেত থেকে ওঠাচ্ছেন না কৃষকরা। পচে যাচ্ছে ক্ষেতেই।

কুষ্টিয়ার স্থানীয় বাজারে প্রতিটি বাঁধাকপি এখন বিক্রি হচ্ছে ২-৫ টাকার মধ্যে। মাঠ থেকে যা বাজারে আনতেই খরচ হয়ে যায় ৩-৪ টাকা।

কৃষকদের দাবি, করোনাভাইরাসের কারণে বাঁধাকপি জেলার বাইরে পাঠাতে পারছেন না। বাইরে থেকে পাইকারী ক্রেতারাও আসছে না। তাই বাঁধাকপি না কাটার কারণে ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দামও পাচ্ছেন না।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ এলাকার কৃষক সিহাব উদ্দিন। তিন বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপির চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত একটি কপিও বিক্রি করতে পারেননি। ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার বাঁধাকপি। গতবছর বেশ ভালো ফলন পেলেও বাঁধাকপিতে এবার পুরো লসের আশঙ্কা করছেন তিনি।

সিহাব উদ্দিন বলেন, ‘‘শীতকালে এই এলাকায় ব্যাপক হারে সবজির চাষ হয়। এর মধ্যে বাঁধাকপি বেশি। শীতের তুলনায় গ্রীস্মকালে বাঁধাকপির দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। বাজারে এসময় চহিদাও বেশ ভালো থাকে।

‘গত বছর প্রতি পিস বাঁধাকপি আমি পাইকারী জমি থেকেই ১৫-২০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। এবার দাম পাচ্ছি না। প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩-৪ টাকা। স্থানীয় বাজারে কপি ২-৩ টাকা করে। জমি থেকে তুলে বাজারে নিতে যা খরচ তার চেয়ে কপির দাম কম। এমন থাকলে কপি কাটা শ্রমিকের দাম উঠবে না।”

কৃষক উসমান গণি জানান, জমির বাঁধাকপি বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে ৭-৮ দিন আগেই। এই করোনার জন্য এবং দামের যে অবস্থা এজন্য বাঁধাকপি কাটিনি। এর উপরে আবার দুদিন বৃষ্টি হলো। এতে ক্ষেতের কপি এখন ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।

জেলার অন্যতম বৃহত্তর পাইকারী কাঁচা সবজির বাজার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি বাজার। করোনার কারণে সেখানেও ক্রেতার তেমন উপস্থিতি নেই। বাইরে থেকে ক্রেতারাও তেমন আসছে না।

খলিসাকুন্ডি কাঁচা বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম জানান, করোনার কারণে বাইরের ক্রেতারা ঠিকমতো আসছে না। আমরাই সবজি বাইরে পাঠাতে সমস্যায় পড়ছি। বাঁধাকপির ক্রেতা না থাকায় বাজারে দাম একদম কম। পাইকারী ৪-৬ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপি চাষটা বেশ লাভজনক হওয়ায় মিরপুরের বেশ কয়েকজন কৃষক বাঁধাকপির চাষ করে থাকেন। প্রতিবছর তারা বেশ ভালো দাম পান। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে একটু অসুবিধা হচ্ছে। দাম অনেকটাই কম। তবে কৃষকরা যাতে ন্যায্য দামে বাঁধাকপিসহ অন্যান্য সবজি বিক্রি করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঢাকার পাইকারী বাজারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্য সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারেন, সে ব্যপারে কৃষি সম্প্রসরাণ অধিদপ্তর থেকেও আমাদের নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক আমরা কাজ করছি।’


কুষ্টিয়া/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়